বঙ্গরত্ন, কৃষকরত্নের পরে এ বার বিডিওরত্ন।
ব্লক পর্যায়ে ভাল কাজের জন্য সেরা বিডিও-কে ‘পুরস্কার’ দেবে রাজ্য সরকার। চলতি বছর থেকেই ওই পুরস্কার চালু হবে। শনিবার ডব্লিউবিসিএস (এগজিকিউটিভ) অফিসারদের এক কনভেনশনে এ কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বিডিও-র দায়িত্ব নিয়েই চাকরি-জীবন শুরু হয় ডব্লিউবিসিএস (এগজিকিউটিভ)-দের। সেখানে বেশ ক’বছর কাটানোর পরে জেলা সদরে বদলি হন তাঁরা। সরকারি সূত্রের খবর, প্রতি জেলার দু’জন বিডিও এই পুরস্কারের জন্য মনোনীত হবেন। তার জন্য একটি প্রশ্নাবলি তৈরি হবে। তার ভিত্তিতেই ‘সেরা’ বিডিওদের বাছবে সরকার। ভাল কাজের স্বীকৃতি হিসেবে দেওয়া হবে মানপত্র। রাজ্য প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, “বিডিও-দের মানপত্র দেওয়ার পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট ব্লকগুলিতে আরও বেশি করে এককালীন অর্থ মঞ্জুর করা হবে, যাতে উন্নয়নে গতি আসে। তার ফল পাবেন সাধারণ মানুষ।”
এ দিনের কনভেনশনের আগে বিসিএস অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন যে দাবিসনদ পেশ করেছিল মুখ্যমন্ত্রীর অফিসে, তার প্রথম বিষয়টি ছিল বিডিও-কে সংশ্লিষ্ট ব্লকের ‘প্রিন্সিপাল কো-অর্ডিনেটিং অফিসার’ হিসেবে ঘোষণা করুক সরকার। সেই সঙ্গে কাজের সুবিধার্থে বিডিও-দের ‘রিপোর্টিং অফিসার’ হিসেবে মর্যাদা দেওয়ার দাবি জানিয়েছিল অ্যাসোসিয়েশন। মুখ্যমন্ত্রীর এ দিনের বক্তব্যে অবশ্য তেমন কোনও আশ্বাস পাননি বিসিএস অফিসারেরা। মমতাও বলেছেন, “আপনাদের দাবিপত্র দেখেছি। সবই হয়তো এখনই পূরণ করা যাবে না।”
মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অ্যাসোসিয়েশনের দাবি ছিল, অন্তত পাঁচটি জেলায় বিসিএসদের জেলাশাসক হিসেবে নিয়োগ করা হোক। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, “দু’টি জেলায় বিসিএস অফিসারেরা জেলাশাসক আছেন। এ বার চারটি জেলার দায়িত্ব পাবেন।” তবে কোনও দফতরের স্বাধীন দায়িত্ব দিয়ে বিশেষ সচিব নিয়োগের দাবিটি মেনে নিয়েছে রাজ্য সরকার। টাউন হলে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমি ক’জন ভাল বিশেষ সচিব পেয়েছি। তাঁদের স্বাধীন দায়িত্ব দেওয়া হবে।” অফিসারেরা যাতে ১০ বছরে সহ-সচিব ও ১৬ বছরে ওসিডি-র পদ পান, তার ব্যবস্থা তিনি করবেন বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
মুখ্যমন্ত্রীর এ সব প্রতিশ্রুতির পরিপ্রেক্ষিতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে কনভেনশন অফ স্টেট সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন। ওই সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক গৌতম চট্টোপাধ্যায় এ দিন এক প্রেস বিবৃতিতে অভিযোগ করেছেন, “আমাদের নানা দাবিদাওয়া নিয়ে কথা বলার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর সময় চেয়ে অনেক দিন ধরে আমরা তাঁর অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। কিন্তু তা এখনও পাইনি।” গৌতমবাবুর বক্তব্য, “১০টি স্টেট সিভিল সার্ভিস-এর প্রায় চার হাজার অফিসার এই সংগঠনের সদস্য। কিন্তু একটি মাত্র সার্ভিসের অফিসারদের সঙ্গেই মত বিনিময় করলেন মুখ্যমন্ত্রী। নতুন সরকারের এই ধরনের ‘পক্ষপাতমূলক আচরণে’ আমরা ব্যথিত ও হতাশ।”
এ দিনই রাজ্যের ৩৪১টি ব্লকের মধ্যে ১২৯টিতে, অর্থাৎ এক তৃতীয়াংশের বেশি ব্লকে নতুন বিডিও নিয়োগের নির্দেশ জারি করেছে রাজ্য সরকার। ৯৪ জন বিডিওকে ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট পদে উন্নীত করা হয়েছে। বিসিএস হিসেবে পদোন্নতির পর নতুন বিডিও হলেন ১০৫ জন জয়েন্ট বিডিও ও ল্যান্ড সার্ভিসের অফিসার। এবং এক ব্লক থেকে অন্য ব্লকে বদলি করা হয়েছে ২৪ জন বিডিওকে। |