ছেলেমেয়ে খুন, উধাও বাবা
মানসিক হাসপাতালে তাঁকে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করার কথা ছিল শনিবার। শুক্রবার রাতে মানসিক অবসাদগ্রস্ত সেই ব্যক্তিই নিজের দুই ছেলেমেয়েকে খুন করে পালিয়েছেন বলে অভিযোগ করলেন স্ত্রী।
বীরভূমের মুরারই থানার বিশোড় গ্রামের ঘটনা। শনিবার সকালে বাড়ির কাছেই দু’টি আলাদা পুকুরে মুকারিম শেখ (১২) ও তার বোন লায়লাতুন খাতুনের (৭) দেহ ভাসতে দেখা যায়। তাদের বাবা বছর চল্লিশের আহেসান মণ্ডল এলাকাছাড়া। দুপুরে মুরারই থানায় গিয়ে স্ত্রী ওয়াসেদা বিবি স্বামী আহেসানের বিরুদ্ধে দুই ছেলেমেয়েকে খুন করার অভিযোগ দায়ের করেন। জেলা পুলিশ সুপার হৃষীকেশ মিনা বলেন, “মানসিক ভারসাম্যহীন আহেসান তাঁর দুই ছেলেমেয়েকে খুন করেছেন বলে স্ত্রী ওয়াসেদা অভিযোগ জানিয়েছেন। শুক্রবার রাতে আহেসানের পরনে থাকা ভিজে পোশাক ঘরের ভিতর থেকে পুলিশ উদ্ধার করেছে।” তিনি জানান, জলে ডুবিয়ে, নাকি আগে খুন করে জলে দেহগুলি ফেলা হয়েছে, ময়না-তদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পরে জানা যাবে। অভিযুক্তের সন্ধানে পুলিশ তল্লাশি চালাচ্ছে।
এ দিন সকালে গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, দেহ দু’টি মাটির ঘরের দাওয়ায় রাখা। পড়শিরা পুকুর থেকে উদ্ধার করে এনেছিলেন। ওয়াসেদা বিবিকে সান্ত্বনা দিচ্ছিলেন পড়শি মহিলারা। ওয়াসেদা বিবি জানান, গত সাত দিন ধরে তাঁর স্বামীর আচরণে অস্বাভাবিকতা দেখা যায়। সবেতেই বিরক্তি প্রকাশ করছিল। মাঝে মধ্যেই বলতেন, ছেলে-মেয়েদের মেরে বাড়ি ছেড়ে পালাবেন। তিনি স্বামীকে বোঝানোর চেষ্টাও করেছিলেন। তিনি বলেন, “শুক্রবার রাতে স্বামী-সহ তিন ছেলেমেয়েকে নিয়ে ঘরের দাওয়ায় ঘুমোচ্ছিলাম। ভোরের আজানে ঘুম ভাঙতে দেখি, দুই ছেলেমেয়ে ও স্বামী নেই। চিৎকার করে পড়শিদের ডাকি। ওরাই খবর দেয়, পুকুরের জলে ছেলেমেয়ের দেহ ভাসছে। ঘরের ভিতরে স্বামীর ছেড়ে যাওয়া রাতের লুঙ্গি ও জামা ভিজে অবস্থায় পড়েছিল।” তাঁর আক্ষেপ, “ও যে সত্যিই ছেলেমেয়েকে খুন করবে ভাবতে পারিনি। শনিবারই বহরমপুর মানসিক হাসপাতালে ওকে চিকিৎসা করাতে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। তার আগে সব শেষ হয়ে গেল!” তাঁর মেজ ছেলে সুকারিম বলে, “বাবা আমাদের মেরে ফেলার ভয় দেখাত। কিন্তু রাতে কখন যে বাবা দাদা ও বোনকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল বুঝতে পারিনি।”
পড়শিরা জানান, মুকারিম স্থানীয় সদাশিবপুর কিশোর হাইস্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ও তার বোন লায়লাতুন গ্রামের প্রাইমারি স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ত। সামান্য জমিতে চাষাবাদ করে ওদের সংসার চলে। ওয়াসেদা জানান, বছর কয়েক আগে থেকে স্বামীর মানসিক গোলমাল ধরা পড়ে। একবার গামছা দিয়ে তাঁর গলা পেঁচিয়ে ধরেছিলেন আহেসান। ফের তাঁর মধ্যে গোলমাল দেখা দেওয়ায় চিকিৎসা করার কথা ভাবা হচ্ছিল।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.