|
|
|
|
শিলাবৃষ্টিতে বোরো ধান নষ্ট, চাষি ‘আত্মঘাতী’ খণ্ডঘোষে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • বর্ধমান |
ন্যায্য দামে ধান বিক্রি না হওয়ায় এর আগে একের পর এক চাষির আত্মহত্যার অভিযোগ উঠেছে। কালবৈশাখীতে বোরো ধান নষ্ট হওয়ায় ফের পরপর আত্মহত্যার অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে ‘শস্যগোলা’ বর্ধমানে।
গত রবিবার বর্ধমানের কাটোয়ায় এক ভাগচাষির অপমৃত্যুর পরেই তাঁর পরিবার ঝড়বৃষ্টিতে ধানের ক্ষতি ও ঋণশোধ করতে না পারাকে দায়ী করেছিলেন। এ বার খণ্ডঘোষের ওঁয়ারি গ্রামে নিখিল জমাদার (২৭) নামে এক ভাগচাষির অপমৃত্যুর পরে কার্যত একই অভিযোগ উঠেছে।
এর আগে প্রায় কোনও ক্ষেত্রেই বিপর্যয়ের জেরে চাষির আত্মহত্যার কথা মানেনি রাজ্য প্রশাসন। এ বারও পুলিশ দাবি করেছে, স্ত্রীর সঙ্গে বচসার জেরে নিখিলবাবু আত্মঘাতী হয়েছেন। শুক্রবার রাত পর্যন্ত জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে কেউ তাঁদের বাড়িতে যায়ওনি।
নিখিলবাবুর ভাই উকিল জমাদার জানান, তাঁর দাদা চার বিঘে জমিতে ভাগচাষ করতেন। কয়েক দিন আগে শিলাবৃষ্টিতে তাঁর বোরো ধানের চাষ নষ্ট হয়ে যায়। মহাজনদের কাছ থেকে নেওয়া প্রায় ২২ হাজার টাকা ঋণ কী ভাবে শোধ করবেন, তা ভেবে তিনি মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। শেষে বৃহস্পতিবার বিকেলে জমিতে গিয়ে তিনি কীটনাশক খান। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হলেও রাত ৯টা নাগাদ তাঁর মৃত্যু হয়।
এ দিন বর্ধমান মেডিক্যালে এসে নিখিলবাবুর প্রতিবেশী চন্ডীচরণ রায় ও রাখহরি মণ্ডল অনুযোগ করেন, ওই এলাকায় অনেকটা জমির ধান শিলাবৃষ্টিতে নষ্ট হয়েছে। বেশ কিছু চাষি ফসল খুইয়ে বিপাকে পড়েছেন। তৃণমূলের খণ্ডঘোষ ব্লক কোর কমিটির সদস্য অপার্থিব ইসলাম অবশ্য দাবি করেন, “ওই পরিবারটির কোনও জমি নেই। নিখিলবাবু এক জনের বাড়িতে কাজ করতেন। স্ত্রীর সঙ্গে বচসার জেরেই উনি আত্মঘাতী হয়েছেন।”
সিপিএমের খণ্ডঘোষ জোনাল কমিটির সম্পাদক দেশবন্ধু হাজরার পাল্টা বক্তব্য, “নিখিলবাবু গত বারের ধান বিক্রি করতে পারেননি। এ বার মাত্র চার বিঘে জমিতে চাষ করতে গিয়ে তাঁকে স্ত্রীর গয়না বিক্রি করতে হয়েছে। তার পরেও বেশ কয়েক হাজার টাকা দেনা হয়ে যায়। দিন কুড়ি আগে ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে তাঁর জমির সমস্ত ধানই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। সেই ধাক্কাতেই তিনি আত্মঘাতী হয়েছেন। আমরা ওঁর পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানাব।”
কিছু এলাকায় শিলাবৃষ্টির কথা বললেও ঠিক কতটা ক্ষতি হয়েছে তা জেলা কৃষি দফতর জানাতে পারেনি। জেলাশাসক ওঙ্কার সিংহ মিনার দাবি, “খণ্ডঘোষে কোনও চাষির আত্মহত্যার খবর পাইনি।” খণ্ডঘোষের বিডিও রবীন্দ্রনাথ বিশ্বাস বলেন, “বিষয়টি শুনেছি। পুলিশকে খবর নিতে বলেছি।” |
|
|
|
|
|