মদ্যপান নিয়ে বচসা, পুলিশকে নিগ্রহে অভিযুক্ত বেসু-র ছাত্রেরা
বিশ্ববিদ্যালয়ে শৃঙ্খলা ফেরাতে কয়েক বছর আগে ছাত্রছাত্রীদের রাতে ক্যাম্পাসের বাইরে বেরোনোর উপরে কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিলেন ‘বেঙ্গল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড সায়েন্স ইউনিভার্সিটি’ (বেসু) কর্তৃপক্ষ। সেই নিষেধাজ্ঞা আজও বহাল রয়েছে। কিন্তু সেখানকার ছাত্রছাত্রীরা যে নিষেধাজ্ঞা আর মানতে চান না, তা বৃহস্পতিবার রাতে ফের প্রমাণ হয়ে গেল।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রাত ১১টা নাগাদ বটানিক্যাল গার্ডেনের লঞ্চঘাটে ‘বেড়াতে’ গিয়েছিলেন বেসু-র কয়েক জন ছাত্র। অভিযোগ, প্রতিদিনের মতো সেখানে মদ্যপানও করছিলেন তাঁরা। পুলিশ জানায়, জল শেষ হয়ে যাওয়ায় গঙ্গার ধারে একটি ঝুপড়িতে গিয়ে জল চান ওই ছাত্রেরা। জল না-পাওয়ায় তাঁরা ঝুপড়ির বাসিন্দাদের অশ্লীল গালিগালাজ করেন বলে অভিযোগ। এই নিয়ে ছাত্রদের সঙ্গে ঝুপড়ির বাসিন্দাদের হাতাহাতি বেধে যায়।
এরই মধ্যে এক ছাত্র হস্টেলে তাঁর সতীর্থদের ফোন করে ঘটনাটি জানিয়ে দেন। খবর পেয়েই ক্যাম্পাস ছেড়ে কয়েকশো ছাত্র ছুটে আসেন লঞ্চঘাটে। এলাকাবাসীদের অভিযোগ, সেখানে পৌঁছে আশপাশের কয়েকটি ঝুপড়ি ভাঙচুর শুরু করে ওই ছাত্রেরা। মারধর করা হয় এলাকার বাসিন্দাদের। রেহাই পাননি মহিলারাও।
প্রহৃত এক পুলিশকর্মী। নিজস্ব চিত্র
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় শিবপুর থানার পুলিশ। উত্তেজিত ছাত্রেরা পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকলে ঘটনাস্থল থেকে চার জনকে আটক করা হয়। ছাত্রেরা তখনকার মতো লঞ্চঘাট চত্বর ছেড়ে বেসু-র দ্বিতীয় প্রবেশপথের সামনে জড়ো হন। পুলিশ তাঁদের ক্যাম্পাসে ঢুকতে বললে আলোচনায় বসতে চান ছাত্রেরা। পুলিশের পক্ষ থেকেও সম্মতি দেওয়া হয়। এর পরে শিবপুর থানার অফিসার সমীরণ চক্রবর্তী-সহ আরও দুই পুলিশকর্মী, সুলতান মহম্মদ মল্লিক ও মৌমন চক্রবর্তী যখন ক্যাম্পাসের ভিতরে ছাত্রদের সঙ্গে আলোচনা করতে যান, তখন কয়েকশো ছাত্র ফের তাঁদের ঘিরে ফেলেন। তাঁদের হাত থেকে লাঠি কেড়ে নিয়ে তা দিয়েই পুলিশকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। আরও অভিযোগ, ওই পুলিশ অফিসারদের রাস্তায় ফেলে বুকে-পেটে লাথি মারা হয়। গুরুতর আহত হন ওই তিন পুলিশকর্মী। তাঁদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ছ’জন ছাত্রকে আটক করে।
এই খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে আসেন বেসু-র উপাচার্য অজয়কুমার রায়। তিনি আহত পুলিশকর্মীদের দেখতে যান হাসপাতালে। তখনই তিনি ঘোষণা করেন, ঘটনার তদন্ত করে দোষী ছাত্রদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শুক্রবার সকালে আটক ছাত্রদের থানা থেকে জামিনে মুক্তি দেয় পুলিশ।
হাওড়া সিটি পুলিশের ডিসি (সদর) নিশাদ পারভেজ বলেন, “ওই ছাত্রদের বিরুদ্ধে দু’টি মামলা হয়েছে। পুলিশকর্মীদের মারধর করার জন্য ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৮৬ ধারায় মামলা করা হয়েছে। আর একটি মামলা দায়ের করেছেন এলাকার লোকেরা। এই দু’টি ঘটনাতেই তদন্ত চলবে।”
এ দিকে, এই ঘটনা নিয়ে বেসুর রেজিস্ট্রার বিমান মুখোপাধ্যায় বলেন, “ওই ঘটনার তদন্তের জন্য পাঁচ সদস্যের কমিটি গড়া হয়েছে। তাদের আগামী রবিবারের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে। রিপোর্ট পাওয়ার পরেই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি, রাত দশটার পরে কোনও ছাত্রছাত্রী যাতে ক্যাম্পাসের বাইরে না থাকেন, সে দিকেও নজরদারি বাড়ানো হবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.