উদ্বৃত্ত টাকা ফেরতের দাবিতে সোমবার ময়ূরেশ্বরে বিদ্যুৎ দফতরে অবস্থান-বিক্ষোভ করলেন স্থানীয় চাষিদের একাংশ। একই দাবিতে সাঁইথিয়ায় বিদ্যুৎ দফতরেও এ দিন বিক্ষোভ হয়েছে।
বিদ্যুৎ দফতর এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৯-১০ সালে বোরো চাষের জন্য অস্থায়ী বিদ্যুৎ সংযোগ বাবদ ওই দফতরে প্রায় ১৩০ জন চাষির কাছ থেকে ২০,৮৩২ টাকা করে জমা নেওয়া হয়। বছর খানেক আগে এই সব মিটারবিহীন সংযোগকারীরা ৯,৭০০ টাকা করে ফেরত পাবেন বলে সরকারি নির্দেশ জারি হয়। সেই মত প্রায় ১১ মাস আগে তাঁরা সংশ্লিষ্ট দফতরে টাকা ফেরতের জন্য আবেদনও করেন। কিন্তু তাঁদের অভিযোগ, বারবার দফতরে গিয়ে খোঁজখবর করলেও কোনও টাকা পাওয়া যায়নি। এই পরিস্থিতিতে গত ২৬ মার্চ স্টেশন ম্যানেজারের দফতরে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। সে সময় অবশ্য ময়ূরেশ্বর ২ নম্বর ব্লকের বিডিও বাবুলাল মাহাতো-র আশ্বাসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। |
ওই চাষিদের দাবি, শুধু ২০০৯-১০ সালেই নয়, ২০১০-১১ সালেও মিটার-সহ অস্থায়ী সংযোগের জন্য ১৭২ জন চাষির কাছ থেকেও ওই একই পরিমাণ টাকা জমা নেওয়া হয়। বিদ্যুৎ দফতর কথা দিয়েছিল, মিটার রিডিং অনুযায়ী টাকা কেটে নিয়ে বাকি টাকা চাষিদের ফেরত দিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু চাষিদের অভিযোগ, “এমনিতেই আমরা উদ্বৃত্ত টাকা ফেরত পাইনি। তার উপর আমাদের বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করার হুমকি দিয়ে মিটার রিডিংয়ের টাকাও জমা নেওয়া হয়েছে।”
২০১০-১১ সালে ২০,৮৩২ টাকা জমা দিয়েছিলেন রাতমা-র নারায়ণ মণ্ডল, নীলমণি দত্ত-রা। মিটার রিডিং অনুযায়ী নিয়মিত ভাবে টাকাও জমা দিয়ে গিয়েছেন তাঁরা। কিন্তু আজও প্রাপ্য উদ্বৃত্ত টাকা ফেরত পাননি। ভগবতীপুরের সুকান্ত দে, মাঠ বহড়ার সন্তোষকুমার দে-রও একই অভিজ্ঞতা। তাঁদের অভিযোগ, “বিল দিতে দেরি হলে বিদ্যুৎ দফতর হয় জরিমানা নেয় নয় তো সংযোগ কেটে দেয়। অথচ প্রাপ্য টাকা দেওয়ার সময় টালবাহানা করছে।” তাঁদের দাবি, “বিডিও-র সামনে এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহে টাকা ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন স্টেশন ম্যানেজার। কিন্তু আজ পর্যন্ত কোনও টাকা পাওয়া যায়নি।”
তাঁদের দাবির সমর্থন মিলেছে ময়ূরেশ্বর ২ নম্বর ব্লকের বিডিও বাবুলাল মাহাতোর কথায়। তিনি বলেন, “এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহেই উদ্বৃত্ত টাকা ফেরত দেওয়ার কথা ছিল। কেন তা দেওয়া হল না খোঁজ নিয়ে দেখছি।” যদিও স্টেশন ম্যানেজার গঙ্গাধর মালি-র দাবি, “টাকা ফেরতের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ডিভিশন্যাল ম্যানেজারের দফতরে পাঠানো হয়েছে। আগামী সপ্তাহের মধ্যেই কৃষিজীবীরা উদ্বৃত্ত টাকা ফেরত পেয়ে যাবেন বলে আশা করছি।” এ দিকে মোবাইলে সংশ্লিষ্ট ডিভিশন্যাল ম্যানেজার নারায়ণচন্দ্র রায়ের সঙ্গে বার বার যোগাযোগ করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। |