গোয়ালপোখর থানার এক সাব ইন্সপেক্টরের বিরুদ্ধে মালকুণ্ডা গ্রামের বাসিন্দা গণেশ রায় খুনের অভিযোগ জমা দেওয়ার ২৪ ঘণ্টা কেটেছে। তার পরেও তা নিয়ে কিছু জানেন না বলে ফের দাবি করলেন সংশ্লিষ্ট এলাকার এসডিপিও নীলকান্ত সুধীর কুমার। রাজ্য পুলিশের উত্তরবঙ্গের আইজি সঞ্জয় সিংহ বলেছেন, “সব অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
ক্ষুব্ধ বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুলিশের একাংশ যে ঘটনাটিকে লঘু করে দেখতে চাইছেন তা দুই কর্তার ভিন্ন মত থেকেই স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে। গণেশবাবুর ভগ্নিপতি জয়ন্তবাবু বলেন, “কোথা থেকে কারা যে কলকাঠি নাড়ছেন তা বুঝতে পারছি না।”
তার আগে সকালে গণেশবাবু অন্তর্বর্তী জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ার আদালতে হাজির হন। উভয়পক্ষের বক্তব্য শোনার পরে বিচারক গণেশবাবুকে আগামী ৯ এপ্রিল পর্যন্ত জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। সেই সঙ্গে যাঁকে মারাত্মক জখম করার অভিযোগে গণেশবাবুকে গ্রেফতার করা হয়, সেই পরশ রায়ের মেডিক্যাল রিপোর্ট জমা দেওয়ার সময়সীমাও বিচারক সংক্ষিপ্ত করে দেন। আদালত আগে জানিয়েছিল, ৯ এপ্রিলের মধ্যে ওই রিপোর্ট জমা দিতে হবে।
কিন্তু, এদিন বিচারক জানিয়ে দেন, ২ এপ্রিলের মধ্যে পরশ রায়ের মেডিক্যাল রিপোর্ট পুলিশকে জমা দিতে হবে। ওই দিন কেস ডায়েরিও জমা দিতে হবে। আদালত চত্বরে দাঁড়িয়ে গণেশবাবু বলেন, “আমার বোনকে ধর্ষণের মামলায় যাঁরা অভিযুক্ত, তাঁদের চাপের কাছে নতি স্বীকার করে অভিযোগ তুলিনি। সে জন্য আমার দুধের বাচ্চাকে অপহরণ করে যাঁরা মেরেছেন, তাঁদের সাজা হবেই।”
বস্তুত, বাসিন্দাদের একাংশ পাশে দাঁড়ানোয় গণেশবাবুর স্ত্রী প্রমীলা দেবী গ্রাম ছেড়ে যাননি। প্রমীলা দেবী জানান, গত নভেম্বরে তাঁর ননদকে পরশ রায় সহ ৬ জন প্রতিবেসী ধর্ষণ করেছেন বলে মামলা হওয়ার পর থেকেই গণ্ডগোলের সূত্রপাত। নানাভাবে ওই মামলা তোলার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছিল। তাতে গোয়ালপোখর থানার ওই এসআই মদত দেন বলে অভিযোগ। গত ১১ মার্চ গণেশবাবুর বাড়িতে ধর্ষণে অভিযুক্তরা হামলা করেন বলে অভিযোগ। সেই সময়ে সংঘর্ষ হলে পরশবাবু জখম হন বলে পুলিশের দাবি। গোলমালের সময়ে গণেশবাবুর দেড় বছরের ছেলে বিক্রমকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। ইতিমধ্যে পরশবাবুর অভিযোগের ভিত্তিতে গণেশবাবুকে গ্রেফতার করে পুলিশ। কিন্তু, পরশবাবুকে পুলিশ ধরতে পারেনি।
প্রথমে পুলিশ পরশবাবু গুরুতর জখম হয়ে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বললেও পরে দেখা যায় তা ঠিক নয়। এমনকী, শিশু অপহরণের অভিযোগ নিতেও পুলিশ টালবাহানা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই ঘটনায় একজনকে গ্রেফতার করা হলেও পরশবাবু-সহ বাকিরা অধরা। |