বীরভূমের মুরারইয়ের কাছে শুক্রবার রাতে মালগাড়ি লাইনচ্যুত হওয়ায় দুর্ভোগ কাটল না শনিবার সকালেও।
লাইন মেরামতির জন্য উত্তরবঙ্গগামী অধিকাংশ ট্রেন শুক্রবার রাতেই ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছিল নলহাটি-আজিমগঞ্জ শাখায়। গভীর রাতে মুরারইয়ের রাজগ্রাম স্টেশনের কাছে দুর্ঘটনাস্থল থেকে লাইনচ্যুত মালগাড়িটি সরিয়েও ফেলা হয়েছিল। ভোরের দিকে ডাউন লাইন দিয়ে ট্রেন চালানোও শুরু হয়। কিন্তু ততক্ষণে দূরপাল্লার ট্রেনগুলি একের পরে এক দাঁড়িয়ে পড়েছে। দুই থেকে পাঁচ ঘণ্টা দেরিতে চলা ট্রেনগুলি মুরারইয়ের আশপাশের স্টেশনে থমকে থাকে দীর্ঘক্ষণ।
অন্যান্য ট্রেনের সঙ্গে দার্জিলিং মেলও নির্ধারিত সময়ের চেয়ে ৬ ঘণ্টা দেরিতে এ দিন নিউ জলপাইগুড়ি পৌঁছয়। ওই ট্রেনে ছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি জে এন পটেল। শিলিগুড়িতে সরকারি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন তিনি। প্রধান বিচারপতি সময়ে পৌঁছতে পারছেন না দেখে উদ্যোক্তারা নির্ধারিত সরকারি অনুষ্ঠানের সময়সূচি বদলে দিতে বাধ্য হন। |
উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের জনসংযোগ বিভাগের এক আধিকারিক অবশ্য দাবি করেছেন, লাইন সারানোর কাজ জোরকদমে চলছিল। দূরপাল্লার ট্রেনগুলি চলাচলের ক্ষেত্রে খুব দেরি হবে না ভেবেই আগাম কোনও ঘোষণা করেনি রেল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু রেলের অনুমান মেলেনি। অধিকাংশ দূরপাল্লার ট্রেনই বিভিন্ন স্টেশনে থমকে থাকে দীর্ঘক্ষণ। ভুগতে হয় যাত্রীদের। স্টেশনে স্টেশনে নেমে পানীয় জলের সন্ধানে অনেককেই হন্যে হয়ে ঘুরতে হয়েছে। আবার কোথাও ট্রেনের শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র সাময়িক কাজ না করায় গরমে হাঁসফাঁস করতে হয় যাত্রীদের। তবে রেলের দাবি, যাত্রীদের যাতে সমস্যা না হয়, সে জন্য বিভিন্ন স্টেশনে থমকে থাকা ট্রেনে অত্যাবশ্যক পরিষেবা দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার নিউ জলপাইগুড়ি থেকে যথাসময়ে ছেড়েছিল কলকাতামুখী পদাতিক এক্সপ্রেস। ওই ট্রেনে ছিলেন শিলিগুড়ির ‘ইস্টার্ন হিমালয়ান ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুর অপারেটরর্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর সভাপতি সম্রাট সান্যাল। তাঁর অভিজ্ঞতা, “ট্রেনে ওঠার পরে নানা জায়গায় থামতে থামতে রাত কাবার হল। সকালে থেকে তীব্র জলাভাব। এসি-ও ঠিকঠাক কাজ করছিল না। প্যান্ট্রি-কার না থাকায় মেলেনি খাবার। বিকেলে ব্যান্ডেলে পৌঁছে প্ল্যাটফর্মে কিছু খাবার পেয়েছেন যাত্রীরা।” সম্রাটবাবুর ‘উষ্মা’, “দুর্ঘটনার জেরে ট্রেন চলাচলে যে বিঘ্ন ঘটতে পারে, সে কথা আগাম জানানো উচিত ছিল রেল কর্তৃপক্ষের।”
এ দিন দুপুর ২টো নাগাদ দার্জিলিং মেল নিউ জলপাইগুড়ি পৌঁছনোর পরে দেখা যায়, অনেক পর্যটক বিপাকে পড়েছেন। চন্দননগর থেকে আসা ১৫ জনের দলের যাওয়ার কথা ছিল পূর্ব সিকিমে। সে জন্য গাড়িও বলা ছিল তাঁদের। এনজেপি পৌঁছে দলের সদস্যেরা দেখেন, সে গাড়ি ফিরে গিয়েছে। |