পুলিশের পাশে ঘুমিয়ে মাঝরাতে উধাও চোর
রে লোডশেডিং। তাই চোরকে পাশে নিয়ে বারান্দায় ঘুমিয়ে পড়ল পুলিশ। ফুরফুরে দখিনা হাওয়া। পুলিশের ঘুম ক্রমে গাঢ় হল। কিন্তু চোর রইল জেগে। তার হাতে হাতকড়া। কোমরে দড়ি বা পায়ে বেড়ি ছিল না। মশা মারছিল পা দিয়ে। যতদূর পা যায় বা ওঠে।
চোরের পাশে ছিল তিন পুলিশ। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ এক জন হাঁই তুলে জেগে উঠলেন। চোখ কচলে পাশে তাকালেন। দুই সহকর্মী তখনও ঘুমে। কিন্তু চোর কই? চোর? এখানেই তো ছিল। টর্চ জ্বলল। কিন্তু চোর নেই। হাতকড়া পরেই সে উধাও। পুলিশের ধারণা, ছাদের আলসে ধরে পালিয়েছে সে। পুরোটাই ধারণা। অবশ্য চোর পালালে ধারণা ছাড়া আর কী-ই বা হতে পারে।
চোর আসলে কে? কাটোয়ার সরিফুল শেখ। নিবাস শ্রীবাটী গ্রাম পঞ্চায়েতের নতুনগ্রামের দক্ষিণপাড়ায়। ওই নিদ্রাবিলাসী পুলিশকর্মীরা কিন্তু কাটোয়া থানার নন। তাঁরা এসেছেন কেরলের পালারিভট্টম থানা থেকে। এতটা পথ উজিয়ে চোর ধরলেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। বর্ধমান থানায় তাঁরা ফের এফআইআর করেছেন। চোর পালিয়েছে বলে।
নিজস্ব চিত্র।
বছর কয়েক আগে সরিফুল কেরলে যায় কাজের খোঁজে। একটি মোবাইল সারাইয়ের দোকানে কাজ পায় সে। মাঝামাঝেই বাড়িতে আসত। আর নতুন নতুন মোবাইল ফোন বিক্রি করত। গাঁয়ের লোকেরা জিজ্ঞেস করলে বলত, “আর বোলো না, কেরলের লোকেরা মাস ছয়েকের বেশি একটা মোবাইল ব্যবহার করে না। খুব বড়লোক তো।” গাঁয়ের লোক হাঁ মুখে কম পয়সায় সেই সব মোবাইল কিনেছেন। ঘুণাক্ষরে টের পাননি, সবই চোরাই মাল। স্থানীয় সূত্রের খবর, গত ৬ মাসে আড়াইশোটি মোবাইল, ৬টি ল্যাপটপ ও ২৫-৩০টি আংটি সোনামুখ করে বিক্রি করেছে সরিফুল। দিন কয়েক আগে নতুনগ্রামের এক যুবক তার কাছ থেকে মোবাইল কেনে এবং কেরল পুলিশের হাতে ধরা পড়ে। তাকে জেরা করেই সরিফুলের খোঁজ পায় পুলিশ। ২৯ তারিখে কেরল পুলিশের দলটি বর্ধমানে আসে। ৩০ তারিখে আসে কাটোয়ায়। শ্রীবাটী বাসস্ট্যান্ডের কাছে পুলিশ সরিফুলকে পাকড়াও করে। সে তখন নেমতন্ন খেয়ে ফিরছিল। পেট ছিল ভরা। দৌড়তে পারেনি। তার গ্রামের বাড়ি থেকে ২২টি মোবাইল সেট মিলেছে। পুলিশ সরিফুলের হাতে হাতকড়া পরিয়ে নিয়ে আসে বর্ধমানের একটি লজে। পরের দিন বর্ধমান আদালতে ট্রানজিট রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে সরিফুলকে কেরলে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা আর হল কই! চোর পালাল ভোরের আলো ফোটার আগেই।
লজের একটি ঘরে ছিলেন চার পুলিশকর্মী, অন্য ঘরে তিন জন ও সরিফুল। লোডশেডিংয়ে গরম লাগছিল সরিফুলের সঙ্গে থাকা তিন পুলিশের। পালারিভট্টম থানার এসআই বিজয় শঙ্কর জানান, সরিফুলের নামে এর্নাকুলাম আদালতের গ্রেফতারি পরোয়ানা ছিল। কিছু বিশিষ্ট লোকের মোবাইলও চুরি করেছিল সে। কিন্তু ওকে ধরেও লাভ হল না। এত ঘুম পেল!
বর্ধমান থানার পুলিশ এ-সব দেখে হাসছে। কেউ বলছেন, “কেরলের পুলিশ খুব সরল। এ-সব ওঁরা বোঝেন না। হেঁ হে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.