|
|
|
|
হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ড |
বেসমেন্ট ঘুরে নমুনা নিল ফরেন্সিক দল |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
মেদিনীপুর শহরের বেসরকারি হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার তদন্তে এল ফরেন্সিক দল। মঙ্গলবার দুপুরে কলকাতা থেকে ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরির ৩ সদস্যের দলটি মেদিনীপুরে এসে পৌঁছয়। তদন্তকারী অফিসারেরা প্রায় এক ঘণ্টা ধরে হাসপাতালের বেসমেন্ট ঘুরে দেখেন। প্রয়োজনীয় নমুনা সংগ্রহ করেন। ঠিক কী কারণে এখানে অগ্নিকাণ্ড হয়েছিল, ফরেন্সিক রিপোর্টেই তা স্পষ্ট হবে বলে সংশ্লিষ্ট সকলের ধারণা। এ দিন ফরেন্সিক দলের সঙ্গে কোতোয়ালি থানার পুলিশও ছিল। আগুন লাগার পরেই রবীন্দ্রনগরের হাসপাতালটি ‘সিল’ করে দেওয়া হয়। এ দিন দুপুরে ‘সিল’ খুলে হাসপাতালে ঢোকেন তদন্তকারী অফিসাররা। তাঁরা নমুনা সংগ্রহ করে বেরিয়ে আসার পর ফের হাসপাতালটি ‘সিল’ করে দেওয়া হয়। |
|
বেসমেন্টে জল। চেয়ার পেতেই কাজ সারলেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা।
মঙ্গলবার ছবি তুলেছেন সৌমেশ্বর মণ্ডল। |
গত বুধবার ভোরে আগুন লাগে ওই বেসরকারি হাসপাতালে। সেই রাতেই হাসপাতালের ৪ কর্তা পীষূষ পাল, অলোক ঘোষ, পার্থসারথি মণ্ডল ও মনোজ পতিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। জেল হেফাজতের মেয়াদ শেষে সোমবার ফের তাঁদের আদালতে হাজির করানো হয়। দু’পক্ষের বক্তব্য শুনে আদালত জামিনের আবেদন মঞ্জুর করে। তবে, সপ্তাহে এক দিন ওই ৪ জনকে কোতোয়ালি থানায় হাজিরা দিতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। বেসরকারি হাসপাতালটির বেসমেন্টে দাহ্যবস্তু মজুত করা ছিল বলে অভিযোগ। তার ফলেই দ্রুত আগুন ছড়ায়। কালো ধোঁয়ায় ছেয়ে যায় চারদিক। সমস্যায় পড়েন রোগী ও তাঁদের পরিবারের লোকজন। ঠিক কী কারণে আগুন লাগল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। অগ্নিকাণ্ডের পরেই হাসপাতালের এক কর্তা বলেন, “ঘটনার পিছনে অন্তর্ঘাত থাকতে পারে।” প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশও আদালতে জানিয়েছে, এটি দুর্ঘটনা কি না, এখনই বলা সম্ভব নয়। ফরেন্সিক তদন্তের পর বিষয়টি স্পষ্ট হবে। তবে জেলা স্বাস্থ্য দফতর বেসরকারি হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি ‘লঘু’ করে দেখাতে চেয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ, ঘটনার পর জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জেলাশাসকের কাছে যে রিপোর্ট পাঠিয়েছেন, তাতে বেসমেন্টে স্টোররুম থাকার কথা বলা নেই। শুধু একটি ওষুধের দোকান রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে, পুলিশ আদালতে যে রিপোর্ট জমা দিয়েছে, সেখানে স্পষ্ট বলা হয়েছে, বেসমেন্টে দু’টি স্টোররুমও রয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে হাসপাতালে ঢুকেই বেসমেন্টে পৌঁছয় ফরেন্সিক দল। সেখান থেকে প্রয়োজনীয় নমুনা সংগ্রহ করেন তদন্তকারী অফিসারেরা। বেসমেন্টে এখনও জল রয়েছে। সে জন্য চেয়ার পেতে, তার উপর উঠে নানা প্রান্তে পৌঁছন তাঁরা। পুলিশ জানিয়েছে, হাসপাতাল থেকে ১৭টি ফায়ার এক্সটিংগুইশার সিলিন্ডার পাওয়া গিয়েছে। সবগুলিই অব্যবহৃত। অগ্নিকাণ্ডের পর এর মধ্যে একটি সিলিন্ডারও কেন ব্যবহার করা হল না, সেই প্রশ্নের উত্তর নেই কর্তৃপক্ষের কাছে। অথচ অগ্নিকাণ্ডের পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিলেন, ঘটনার পর কর্মীরা ঘটনাস্থলেই ছিলেন। কেউ পালিয়ে যাননি। তা হলে, একটি সিলিন্ডারও কেন ব্যবহার করা হল না? তবে কি দমকলের বিধি মেনে হাসপাতালে শুধু ফায়ার এক্সটিংগুইশার সিলিন্ডার রেখেই দায় সারা হয়েছিল? পুলিশ জানিয়েছে, প্রয়োজনে ফের তদন্তে আসতে পারে ফরেন্সিক দল। |
|
|
|
|
|