কলকাতা-সহ পশ্চিমবঙ্গের সব থানাতেই অভিযুক্তদের জবানবন্দির ভিডিও রেকর্ডিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে কলকাতা হাইকোর্টে রিপোর্ট দিয়ে জানালেন রাজ্য পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেল এবং কলকাতার পুলিশ কমিশনার। প্রতিটি থানায় ওই রেকর্ডিংয়ের বন্দোবস্ত করার জন্য বারবার নির্দেশ দেওয়া সত্ত্বেও রাজ্য ও কলকাতা পুলিশ তা পালন করার ক্ষেত্রে ছ’মাস ধরে টালবাহানা করায় হাইকোর্ট ক্ষোভ প্রকাশ করেছিল। চলতি মাসেই কলকাতার পুলিশ কমিশনারকে এজলাসে দাঁড় করিয়ে বিচারপতি কল্যাণজ্যোতি সেনগুপ্ত ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির ডিভিশন বেঞ্চ বলেছিল, আদালত এই গাফিলতি বরদাস্ত করবে না।
হাইকোর্ট মন্তব্য করেছিল, পুলিশ অকর্মণ্য। খোদ পুলিশ কমিশনার যে আদালতের নির্দেশ অমান্য করায় তাঁকে দাঁড় করিয়ে তিরস্কার করে ডিভিশন বেঞ্চ। বিচারপতিরা সে-দিন পুলিশের গাফিলতির যে সবিস্তার দৃষ্টান্ত দেন, সেই তালিকায় থানায় জবানবন্দি ভিডিও-য় তুলে রাখার ব্যবস্থা না-করার বিষয়টিও ছিল।
তার পরেই রাজ্য ও কলকাতা পুলিশে বিশেষ তৎপরতা শুরু হয়ে যায়। বিশেষ ভাবে জোর দেওয়া হয় থানায় জবানবন্দির ভিডিও রেকর্ডিং করে রাখার ব্যবস্থার উপরে। রাজ্যের পিপি দেবাশিস রায় মঙ্গলবার হাইকোর্টে দু’টি রিপোর্ট পেশ করেন। তিনি জানান, কলকাতা তো বটেই, রাজ্যের সব থানাকেই অভিযুক্তদের জবানবন্দির ভিডিও রেকর্ডিং করার ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে। আশা করা যায়, তারা সেই ব্যবস্থা করেছে।
ডিভিশন বেঞ্চ অবশ্য ওই দু’টি রিপোর্টের উপরে সম্পূর্ণ নির্ভর করতে রাজি নয়। জেলার অন্তত একটি এবং কলকাতা পুলিশের এলাকাভুক্ত একটি থানা থেকে ভিডিও রেকর্ডিংয়ের নমুনা সিডি হাইকোর্টে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে তারা। এখন থেকে আদালত যে কেস ডায়েরির সঙ্গে সঙ্গে ওই সব সিডি-ও দেখতে চাইতে পারে, তারও ইঙ্গিত দিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ। এমনকী বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি এ কথাও বলেন যে, উন্নত প্রযুক্তির দৌলতে এখন তো মোবাইলেও ভিডিও রেকর্ডিং করে রাখা যায়। অর্থাৎ যে-কোনও ভাবেই হোক, থানায় অভিযুক্তের জবানবন্দির ভিডিও-প্রমাণ দেখতে চায় আদালত। |