বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের নবগঠিত এগ্জিকিউটিভ কাউন্সিল বা ইসি আগামী ১০ এপ্রিল পর্যন্ত কোনও বৈঠক ডাকতে পারবে না বলে নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। এই নির্দেশের আগে কাউন্সিলের কোনও বৈঠক হয়ে থাকলে সেখানে গৃহীত কোনও সিদ্ধান্ত আপাতত রূপায়ণ করা যাবে না বলেও মঙ্গলবার জানিয়ে দিয়েছেন হাইকোর্টের বিচারপতি তপেন সেন। ওই এগ্জিকিউটিভ কাউন্সিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও ডিনকেই রাখা হয়নি। এই অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা বিভাগের ডিন অরূপ চট্টোপাধ্যায় হাইকোর্টে মামলা ঠুকে দিয়ে অভিযোগ করেন, বেআইনি ভাবে ওই কাউন্সিল গঠন করা হয়েছে।
এ দিন সেই মামলার শুনানির সময় আবেদনকারীর আইনজীবী সুব্রত মুখোপাধ্যায় রাজ্যের উচ্চশিক্ষা সংসদের সদস্য-সচিবের লেখা একটি চিঠি আদালতে জমা দেন। ওই আইনজীবী বলেন, উচ্চশিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান সুগত মারজিতের ইচ্ছা অনুযায়ী ওই চিঠিতে জানানো হয়েছে, এগ্জিকিউটিভ কাউন্সিলে কোনও ডিনকে রাখা যাবে না।
ওই কাউন্সিলে কলেজের অধ্যক্ষদের মধ্যে কাদের মনোনয়ন দেওয়া যেতে পারে, সংসদের চেয়ারম্যানের ইচ্ছা অনুযায়ী সদস্য-সচিব তা-ও জানিয়ে দিয়েছেন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে। আবেদনকারীর আইনজীবীর বক্তব্য, অধ্যক্ষদের মধ্য থেকে এগ্জিকিউটিভ কাউন্সিলের সদস্য মনোনয়নের দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের। উচ্চশিক্ষা সংসদের এ-সব করার কোনও এক্তিয়ারই নেই। কিন্তু উচ্চশিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যানের ‘ইচ্ছা’র কথা জানিয়ে দেওয়া হয় উপাচার্যকে। উপাচার্যও সংসদের চেয়ারম্যানের পছন্দের তালিকা হুবহু মেনে অধ্যক্ষদের মনোনয়ন দেন। ১৬ মার্চ এগ্জিকিউটিভ কাউন্সিল গঠন করা হয়। যাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের ডিন, তাঁদের কারও ঠাঁই হয়নি সেই কাউন্সিলে। সুব্রতবাবুর প্রশ্ন, ডিনেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পঠনপাঠন প্রক্রিয়ার সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে যুক্ত। তাঁদের বাদ দিয়ে কী ভাবে শিক্ষার উন্নয়ন সম্ভব?
বিচারপতি কলা বিভাগের ডিনের আবেদনের আপাতগ্রাহ্যতা স্বীকার করে নেন। তিনি জানিয়ে দেন, এগ্জিকিউটিভ কাউন্সিল এখন কোনও বৈঠক করতে পারবে না। যদি হাইকোর্টের এই নির্দেশের আগে ইসি-র কোনও বৈঠক হয়ে থাকে, তা হলে সেই বৈঠকের কোনও সিদ্ধান্ত এখন বাস্তবায়িত করা যাবে না।
পরে যোগাযোগ করা হলে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ষোড়শীমোহন দাঁ বলেন, “উচ্চশিক্ষা সংসদের তরফে একটি চিঠি পাঠিয়ে আমাদের জানানো হয়েছিল, বিশ্ববিদ্যালয়ের এগজিকিউটিভ কাউন্সিলে ডিনদের রাখা যাবে না। কারণ শিক্ষক সংসদ (ফ্যাকাল্টি কাউন্সিল)-এর নির্বাচন এখনও হয়নি। এ ব্যাপারে উচ্চশিক্ষা দফতরের কাছ থেকে ব্যাখ্যা চাইতে বলা হয়েছিল। আমরা সেই অনুসারে উচ্চশিক্ষা দফতরের কাছে চিঠি পাঠিয়ে বিস্তারিত ভাবে বিষয়টি জানতে চেয়েছি।” প্রায় তিন সপ্তাহ আগে উচ্চশিক্ষা দফতরে চিঠি পাঠানো হলেও এখনও উত্তর মেলেনি বলে জানান ষোড়শীমোহনবাবু। |