বিমানবন্দরে দু’টি বিভাগ মিশিয়ে দেওয়ার পরে সব অফিসারকে একই রকম সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার কথা। অথচ একটি বিভাগের অফিসারেরা কম সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন বলে অভিযোগ। সমান সুবিধার দাবিতে আগামী শুক্রবার গণছুটি নেওয়ার হুমকি দিয়েছে বিমানবন্দর-কর্তৃপক্ষের অফিসারদের সংগঠন। ফলে ওই দিন আবার অচল হয়ে যেতে পারে কলকাতা বিমানবন্দর। তার প্রভাব বিমান চলাচলেও পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এখানেই শেষ নয়। আজ, মঙ্গলবার থেকে অফিসারেরা অতিরিক্ত কাজ না-করার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় ব্যাহত হতে পারে আধুনিকীকরণের কাজও। কারণ, অফিসারদের মধ্যে ইঞ্জিনিয়ারেরাও রয়েছেন। আধুনিকীকরণের কাজ প্রধানত তাঁরাই দেখভাল করছেন। সোমবার কলকাতা বিমানবন্দরে কর্তৃপক্ষের নতুন ভবনে ধর্নায় বসেন অফিসারেরা। ১৫০ জন অফিসারের মধ্যে অন্তত ৮০ জন কাজে যোগ দেননি বলে সংগঠন সূত্রের খবর। তবে বিমান চলাচল ব্যাহত হয়নি।
ন্যাশনাল এয়ারপোর্ট ডিভিশন (এনএডি) এবং ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট ডিভিশন (আইএডি) বিমানবন্দর-কর্তৃপক্ষের এই দু’টি বিভাগকে মিশিয়ে দেওয়া হয় ১৯৯৪ সালে। আইএডি অফিসারদের অভিযোগ, মিশিয়ে দেওয়ার পরেও বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার ক্ষেত্রে বৈষম্য থেকেই গিয়েছে। এমন ভাবে একত্রীকরণ হয়েছে যে, এনএডি-র অফিসারেরা অনেক বেশি সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন। বঞ্চিত হচ্ছেন আইএডি-র অফিসারেরা। আন্দোলনকারী এয়ারপোর্ট অথরিটি অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন (এএওএ)-এর কলকাতা শাখার সম্পাদক পার্থসারথি বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, একত্রীকরণের জন্য সংসদে যে-আইন পাশ হয়েছিল, অবিলম্বে তা চালু করতে হবে। ওই আইনে মিশে যাওয়া দু’টি বিভাগের অফিসারদের একই সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার কথা আছে।
কলকাতায় ৫ ডিসেম্বর থেকে এই নিয়ে আন্দোলন শুরু করেন পার্থবাবুরা। দিল্লি-মুম্বই-বেঙ্গালুরু-হায়দরাবাদ বিমানবন্দর এখন বেসরকারি হাতে। ফলে অফিসারদের আন্দোলনের প্রভাব পড়ে প্রধানত কলকাতা ও চেন্নাইয়ে। বিমানবন্দর সূত্রের খবর, সোমবার ধর্নার পরে, রাতেই দিল্লিতে বিমানমন্ত্রী অজিত সিংহের সঙ্গে দেখা করেন বিমানবন্দর-কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান বেদপ্রকাশ অগ্রবাল। সেই বৈঠকের পরে অগ্রবাল জানান, দু’তিন দিনের মধ্যে সমস্যার সমাধান করে ফেলা হবে বলে মন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন।
তা সত্ত্বেও আজ, মঙ্গলবার থেকে অতিরিক্ত কাজ বন্ধ করা হবে বলে পার্থবাবু জানান। অফিসারের সংখ্যা কম থাকায় প্রায় প্রতিনিয়তই অফিসারদের অতিরিক্ত কাজ করতে হয়। সেই কাজ বন্ধ হলে প্রভাব পড়বে সব ক্ষেত্রেই। অগ্রবাল বলেন, “এ-রকম চললে আধুনিকীকরণের কাজ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।”
অতিরিক্ত কাজ বন্ধের সঙ্গে সঙ্গে আজ থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত রিলে অনশনের হুমকিও দেওয়া হয়েছে। আর শুক্রবার সবাই ছুটি নেবেন। পার্থবাবুর কথায়, “আমাদের আন্দোলনের জন্য এত দিন সরাসরি আধুনিকীকরণের কাজ সে-ভাবে ব্যাহত হয়নি। কিন্তু এ বার থেকে তা-ও ব্যাহত হবে।” |