জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির অন্দরমহল সংস্কারে আজ প্রায় এক কোটি ১১ লক্ষ টাকা মঞ্জুর করল কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রক। রাজ্য সরকারের সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনা হয়ে গেলেই ওই সংস্কারের কাজে হাত দেবে পুরাতত্ত্ব দফতর। আজ কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সার্ধশতবর্ষ উদ্যাপন কমিটি একটি বৈঠকে ওই সিদ্ধান্ত নেয়। স্বামী বিবেকানন্দের সার্ধশতবর্ষ উদ্যাপনে রামকৃষ্ণ মিশনকেও ১০০ কোটি টাকা মঞ্জুরের সিদ্ধান্তও নিয়েছে
এই কমিটি।
কলকাতায় রবীন্দ্র সদন নতুন ভাবে গড়ে তোলার জন্য বিস্তারিত পরিকল্পনা তৈরি করতে রাজ্যের যে এক কোটি টাকার প্রয়োজন, তা-ও দিতে রাজি হয়েছে কেন্দ্র। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় উদ্যাপন কমিটির ধাঁচে পশ্চিমবঙ্গেও একটি উদ্যাপন কমিটি গঠন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই কমিটির দায়িত্বে থাকবেন রাজ্যের মুখ্যসচিব। এই কমিটির হাতে ১০ কোটি টাকা তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আর্থিক দিক থেকে ছোট মাপের আবেদনগুলির রূপায়ণ ও অর্থ মঞ্জুর করার ক্ষমতা থাকবে ওই কমিটির হাতে। রাজ্যের রবীন্দ্র ভবনগুলির পরিকাঠামো উন্নয়নেও ওই অর্থ ব্যবহার করা যাবে। প্রাক্তন কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি সচিব তথা বর্তমানে কেন্দ্রীয় উদ্যাপন কমিটির বিশেষ সদস্য জহর সরকার জানান, “রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনা হলেই ঠাকুরবাড়ির অন্দরমহলের সংস্কারের কাজ শুরু হবে। প্রণববাবু বৈঠকে আশ্বাস দিয়েছেন ওই কাজেও অর্থের অভাব হবে না।” |
নয়াদিল্লিতে রবীন্দ্র চিত্রাবলীর উদ্বোধনে প্রণব মুখোপাধ্যায়,
কপিল সিব্বল এবং জহর সরকার। ছবি: রমাকান্ত কুশাওয়াহা |
বিবেকানন্দের সার্ধশতবর্ষ উদ্যাপনে রামকৃষ্ণ মিশনকেও ১০০ কোটি টাকা মঞ্জুরের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে ওই কমিটি। এ ছাড়া দিল্লি রামকৃষ্ণ মিশনের প্রেক্ষাগৃহ সংস্কারে দেড় কোটি টাকা, রামকৃষ্ণ মিশন গোলপার্কের জন্য ৬.৭ কোটি টাকা দেওয়ারও সিদ্ধান্ত হয়েছে। রামকৃষ্ণ মিশন সেবা প্রতিষ্ঠান বিবেকানন্দের নামে ১৮.৫ কোটি টাকায় একটি নতুন ব্লক নির্মাণের যে প্রস্তাব দিয়েছিল, তাতেও নীতিগত সম্মতি জানিয়েছে কমিটি। তবে সেবা প্রতিষ্ঠান ওই বিষয়ে বিস্তারিত পরিকল্পনা পাঠালে তবেই চূড়ান্ত সম্মতি দেওয়া হবে।
আজকের বৈঠকে নদীয়া ও মুর্শিদাবাদ জেলায় দু’টি রবীন্দ্রভবন নির্মাণে প্রায় ৩ কোটি টাকা মঞ্জুর করা হয়েছে। মারগাঁও, তিরুঅনন্তপুরম ও ভোপালেও রবীন্দ্রভবন নির্মাণে টাকা দিতে রাজি হয়েছে কমিটি। জহরবাবু বলেন, “উর্দুতে রবীন্দ্র সাহিত্য অনুবাদ করার জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তাবেও সম্মতি দিয়েছে কমিটি। দেওয়া হবে ৯৬ লক্ষ টাকা।” আজ কমিটির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে রবীন্দ্র চিত্রাবলী, ইংরেজিতে গাওয়া রবীন্দ্রসঙ্গীতের ৫টি সিডির প্রকাশ করা হয়। সুগত বসু গানগুলি অনুবাদ করেছেন, গেয়েছেন প্রমিতা মল্লিক। বৈঠকে ঠিক হয়েছে, এ বছরের মে মাসে রবীন্দ্র সার্ধশতবর্ষের সমাপ্তি অনুষ্ঠান শুরু হবে বাংলাদেশে। শেষ হবে ভারতে। |