|
|
|
|
ব্যাঙ্ক ডাকাতির পাণ্ডা ধৃত |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নবদ্বীপ |
প্রায় তিন মাস আগে স্বরূপগঞ্জে ব্যাঙ্ক ডাকাতির মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করল পুলিশ। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে রীতিমতো নাটকীয় অভিযান চালিয়ে ফকিরতলা থেকে বাসুদেব হাওলাদার নামে ওই দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বাসুদেবের বিরুদ্ধে খুন ও ডাকাতির একাধিক অভিযোগ রয়েছে। নানা সূত্র থেকে তথ্য পেয়ে এই ক’মাসে একটু একটু করে এগিয়ে শেষ পর্যন্ত পুলিশ বাসুদেবের নাগাল পায়।
গত ৪ জানুয়ারি নবদ্বীপে গঙ্গার পূর্ব পাড়ে জনবহূল স্বরূপগঞ্জের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে হানা দেয় দুষ্কৃতীরা। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের ধারণা, ওই ডাকাত দলে ছিল ৬ দুষ্কৃতী। ব্যাঙ্ক ম্যানেজারের মাথায় আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে ব্যাঙ্কের গ্রাহক ও কর্মীদের বাথরুমে আটকে রেখে পৌনে এক ঘণ্টা ধরে অবাধে লুঠপাট চালায় তারা। যাওয়ার আগে ব্যাঙ্কের বিভিন্ন জায়গায় তিনটি শক্তিশালী বোমা রেখে গিয়েছিল তারা। সেই ভয়ে সকলে তটস্থ থাকায় সুযোগ বুঝে মোটরবাইকে করে পালিয়ে যায়। দিনেদুপুরে এত বড় ডাকাতির ঘটনায় শোরগোল পড়ে যায়। প্রশ্ন ওঠে নিরাপত্তা নিয়ে।
ঘটনার দিনেই পুরো এলাকা ঘিরে তল্লাশি চালাতে শুরু করে দেয় পুলিশ। দু’টি পরিত্যক্ত মোটরবাইকও উদ্ধার করা হয়। নদিয়ার ভালুকা ও হরিশপুর থেকে ভুয়ো নম্বরপ্লেট লাগানো বাইক দু’টি উদ্ধার হয়েছিল। সেই সূত্র ধরেই তদন্ত এগিয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাতে নবদ্বীপ থানার আইসি শঙ্করকুমার রায়চৌধূরীর নেতৃত্বে এক বিরাট পুলিশ বাহিনী বাসুদেবকে গ্রেফতার করে। রীতিমতো পরিকল্পনা করে এগিয়েছেন তাঁরা। সন্ধ্যা থেকে এক জন দু’জন করে পুলিশকর্মী জলঙ্গির পাড়ে ফকিরতলা গ্রামে জড়ো হতে থাকেন। রাত ১টার পরে আইসি’র নেতৃত্বে বাসূদেবের বাড়ি ঘিরে ফেলা হয়। পুলিশ এসেছে বুঝে বাসুদেব দোতলার ছাদ থেকে লাফ দেন। তিনি গিয়ে পড়েন একটি পরিত্যক্ত বাড়ির ছাদে। কিন্তু সেখান থেকে পালানোর চেষ্টা করলে পুলিশের হাতে ধরা পড়ে যান।
শঙ্করবাবু বলেন, “ধৃত বাসুদেব আসলে হাবড়া অশোকনগরের বাসিন্দা। জোড়া খুনের একটি মামলায় সাড়ে তিন বছর জেলও খেটেছে। তারপরে নদিয়াতে বাড়ি ভাড়া করে বাগান জমা নিয়ে ব্যবসা ফেঁদেছিল। তবে সে সবই ছিল লোক দেখানো। এখানে বসে হাওড়া, হুগলি, উত্তর ২৪ পরগনার দুষ্কৃতীদের জড়ো করেছিল। তাদের দিয়েই ব্যাঙ্ক ডাকাতির পরিকল্পনা করেছিল। এমনকী, স্বরূপগঞ্জে ব্যাঙ্ক ডাকাতির দিনেও যে মোটরবাইক দু’টি ব্যবহার করা হয়েছিল, সেগুলিও সে জোগাড় করেছিল। পুরো পরিকল্পনাটাই বাসুদেবের।” শুক্রবার নবদ্বীপের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কোর্টে হাজির করানো হয় তাকে। নবদ্বীপ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি নবেন্দু মণ্ডল বলেন, “বিচারক সাত দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৯৫ ধারা এবং অস্ত্র আইনের ২৫ ও ২৭ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।” |
|
|
|
|
|