বালুরঘাট হাসপাতাল থেকে ফের চিকিৎসাধীন এক রোগী নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা ঘটল। হাসপাতাল সূত্রের খবর, মালদহের ঝলঝলিয়া রেলওয়ে ব্যারাক কলোনির বাসিন্দা ওই রোগীর নাম সুভাষ শর্মা। ৬১ বছরের অবসরপ্রাপ্ত রেলকর্মী সুভাষবাবু গত বুধবার হাসপাতালের পুরুষ শল্য বিভাগে ভর্তি হয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে তাঁকে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না তাঁর ছেলে রাজকুমার শর্মা শুক্রবার পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছেন। পাশাপাশি, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফেও এদিন রোগী নিখোঁজ হওয়ার একটি অভিযোগ পুলিশকে জানানো হয়েছে। বালুরঘাট হাসপাতাল সুপার বুদ্ধদেব মন্ডল এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের মুখপাত্র অসিত বিশ্বাসও কোনও কথাই বলতে চাননি। জেলা পুলিশ সুপার চিরন্তন নাগ বলেন, “হাসপাতাল থেকে এক রোগী নিখোঁজ হয়েছেন বলে অভিযোগ এসেছে। ওই রোগীর পরিবার এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি জানিয়েছে। বিভিন্ন থানাকে ঘটনাটি জানানো হয়েছে।” হাসপাতাল সূত্রের খবর, দুদিন আগেই বালুরঘাট হাসপাতালের পুরুষ বিভাগ থেকে পৃত্থীশ সেন নামের হিলির বাসিন্দা এক রোগী নিখোঁজ হন। পরে তাঁকে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় হাসপাতাল থেকে ৪ কিলোমিটার দূরে রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের তৎপরতায় পৃত্থীশবাবুর বাড়ির লোকজন ফের তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করান। এদিন রোগীর নিখোঁজের ঘটনার পর রোগীদের নিরাপত্তা এবং নজরদারি নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের হেলদোল নেই বলে রোগীর আত্মীয়েরা অভিযোগ করেছেন। নিখোঁজ সুভাষবাবুর ছেলে রাজকুমারবাবুরও রেলকর্মী। তিনি জানান, গত বুধবার সকাল সাড়ে ৬টা থেকে বাবা নিখোঁজ হয়ে যান। ইংরেজবাজার থানায় নিখোঁজের অভিযোগ দায়ের করি। বাবাকে বালুরঘাট রেলস্টেশন এলাকার চকভৃগু থেকে বাসিন্দারা হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছেন। হাসপাতালে এসে বাবাকে দেখি যাই। হাসপাতাল এবং পুলিশের পরামর্শে বাড়ির এলাকার পুরসভার কাউন্সিলারের সংশাপত্র ও ইংরেজবাজার থানার নিখোঁজের ডায়েরির কপি সংগ্রহ করি। গত বৃহস্পতিবার সকালে হাসপাতালে এসে দেখি বাবা নেই। ওয়ার্ড থেকে বাবা পালিয়ে গিয়েছেন বলে জানানো হয়। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, সুভাষবাবু মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন ছিলেন। তাঁর মাথায় চোটও ছিল। ওই ওয়ার্ডের নার্সদের দাবি, ভিজিটিং আওয়ার্সে ভিড়ের সুযোগ নিয়ে সুভাষবাবু নজর এড়িয়ে পালিয়ে যান। তবে তাঁকে কেন মানসিক চিকিৎসার ওয়ার্ডের পাঠানো হল না সেই প্রশ্ন উঠেছে। তিনতলার বালুরঘাট হাসপাতাল থেকে বার হওয়ার দুটি রাস্তা। নিচ তলাতে জরুরি বিভাগ ও এক্সরে’র ঘরের কাছে দুটি বড় লোহার গেট রয়েছে। সকাল ১১টা থেকে ১টা এবং বিকেল ৪টা থেকে ৬টা পর্যন্ত ওই দুটি গেট রোগীদের সঙ্গে দেখা করার জন্য খুলে দেওয়া হয়। বাকি সময় গেটে পাহারা থাকে। |