মুখোমুখি ১...
এই তো জীবন কালীদা
পত্রিকা: বিদ্যা...সরি ভিদ্যা। আপনি তো এই সম্বোধনটাই চান?
বিদ্যা: (হাসি) আরে না না। ওটা ফিল্মে ছিল। বিদ্যা সম্বোধনটা খুব সুইট। আমি সেই ‘ভাল থেকো’র সময় থেকে কলকাতার মানুষের কাছে বিদ্যা শুনে আসছি। ভেরি হ্যাপি উইথ ইট।

পত্রিকা: বাংলা বর্ণমালায় আসলে ‘ভি’ অক্ষরটা নেই। বাঙালিরা তাই ‘ব’ উচ্চারণ করে।
বিদ্যা: আমি খুব ভাল করে জানি। z-এরও বোধহয় অবিকল উচ্চারণ নেই।

পত্রিকা: আরে এত কিছু জানেন?
বিদ্যা: জানি মানে? আমি তো বহু লোককে এসএমএস অবধি করেছি বিদ্যা বালন বলে। (হাসি)

পত্রিকা: একটা কথা বলব? এই মুহূর্তে আপনি বিদ্যা বা ভিদ্যা কোনওটাই নন।
বিদ্যা: আমি তা হলে কী?

পত্রিকা: আপনি হলেন খান। বলিউডে সাড়া ফেলে দেওয়া নতুন খান।
বিদ্যা: হা হা হা। না না আমি বালন হয়েই ভাল আছি। ‘বি’ ইজ অ্যা গ্রেট অ্যালফাবেট। ‘বি’ একটা দুর্দাম্ত অক্ষর।

পত্রিকা: আমি যদি বলি ‘বি’ নিপাত যাক। ‘কে’ আসুক।
বিদ্যা: না না। ‘কে’ বলিউডে অনেকগুলো আছে। (হাসি) ‘বি’ একটাই। আর সেই মানুষটা হিন্দি সিনেমার ইতিহাসে অমর।

পত্রিকা: একটা সময়ে আপনি বলতেন শাহরুখের সঙ্গে কাজ করার জন্য ব্যাকুল হয়ে রয়েছেন। পরপর দু’টো ছবিতে যা করলেন তাতে কি মনে হয় না এসআরকে যথেষ্ট উৎপীড়িত, আতঙ্কিত এবং ভয়ার্ত! যে দু’জনে কাজ করাটা এখন নিছকই সময়ের অপেক্ষা?
বিদ্যা: ধ্যাৎ। উৎপীড়িত? আপনি যে কী বলেন (হাসি)! আশা করব কোনও না কোনও সময় আমাদের কাজ করাটা হয়েই যাবে। যখন হওয়ার তখন হবে। এখনকার মতো আমি নিজের একটা স্পেস তৈরি করার চেষ্টা করছি। আর ছোট একটা পাদানিও পেয়েছি। শাহরুখ আর আমার কাজ করার যখন সময় আসবে কাজ ঠিকই হবে।

পত্রিকা: আপনি কি অদৃষ্টের ওপর এ ভাবে সব কিছু ছেড়ে দিয়ে বসে থাকেন?

বিদ্যা: অদৃষ্টে বিশ্বাস করি। কিন্তু অদৃষ্টের ওপর মোটেও ছেড়ে দিই না। আমার দৃঢ় বিশ্বাস আপনি ভেতর থেকে যদি কিছু চান ব্রহ্মাণ্ডে কোথাও না কোথাও সেটা আপনার জন্য ভেসে উঠবেই। কেউ বলে দেয় না সেই ভেসে ওঠা জিনিসটার কাছে আপনি কী ভাবে পৌঁছবেন। কোনও রোড ম্যাপ দিয়ে দেয় না। কিন্তু আমার অভিজ্ঞতা বলে ভেতর থেকে সত্যি চাইলে, ব্রহ্মাণ্ড ষড়যন্ত্র করেও আপনাকে সেই জিনিসটার পাশে নিয়ে যায়।

পত্রিকা: তার জন্য কী চাই?
বিদ্যা: চাই ইচ্ছে। আর সেই ইচ্ছের পেছনে নিরন্তর ঘোড়া ছোটানো। যেমন আমার জীবনের লক্ষ্য হল ভাল ফিল্ম করা। আর তার জন্য এমন সব মানুষ খুঁজে বার করা যাঁরা সেই ইচ্ছের গোড়ায় ধুনো দিতে পারবেন।

পত্রিকা: একটা ট্যুইট দেখছিলাম সে দিন। ‘দ্য ডার্টি পিকচার’-এর জন্য জাতীয় পুরস্কার নিতে আপনি যখন দিল্লি যাবেন তখনই যেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক ‘কহানি’র জন্য পরের বছরের সেরা নায়িকার পুরস্কারটাও আপনাকে দিয়ে দেয়। তা হলে দিল্লি-মুম্বই পরের বারের প্লেন ফেয়ারটাও বাঁচানো যায়।
বিদ্যা: তাই বুঝি। বাহ্। দারুণ প্রশংসা। এটা কোথায়? ট্যুইটারে?

পত্রিকা: ট্যুইটার খুলে দেখে নিন না।
বিদ্যা: কী করে খুলব? আমি ট্যুইটার, কিন্ডল, ফেসবুক -এ সব থেকে শত হস্ত দূরে।

পত্রিকা: আক্ষেপ হয় না যে আপনি ১৯৪৭ সালে আজও বাস করছেন?
বিদ্যা: একটুও না। আমি খবরের কাগজ মন দিয়ে পড়ি। নিউজ টেলিভিশন দেখি। আমার মনে হয় এমনিতেই আমাদের চার পাশে অপর্যাপ্ত ইনফরমেশন ঘুরে বেড়াচ্ছে। এর পর আবার ট্যুইটার খুলে যদি রোজ সবার মতামত পড়তে শুরু করি তা হলে দিনের শেষে আমার নিজের ব্যক্তিগত মতামত বলে কিছু বেঁচে থাকবে না। ট্যুইটার বা ফেসবুক নিয়ে অবশেসন আমার পছন্দ নয়। হ্যাঁ পুরনো স্কুলের বন্ধু, কলেজের বন্ধু এদের খুঁজে বার করার জন্য ফেসবুক আদর্শ হতে পারে। কিন্তু তার বেশি নয়।

পত্রিকা: অথচ বাড়িতে আপনার বোনই ফেসবুক ভাইরাসে আক্রান্ত।
বিদ্যা: ছিল। এখন ছেড়ে দিয়েছে।

পত্রিকা: ‘কহানি’ আর কলকাতা এই দু’টো ‘কে’ কিন্তু এখন আলোচনার মধ্যগগনে।
বিদ্যা: হ্যাঁ, আমি দারুণ খুশি যে আমার প্রিয় শহর নিয়ে তৈরি একটা কাজ এত মানুষের ভাল লাগছে। কলকাতার আকর্ষণ আমার কাছে অপ্রতিরোধ্য। শহরটার নাড়িনক্ষত্র আমার প্রিয়।

পত্রিকা: মনে করা যাক হবু বরকে আপনি কলকাতা দেখাতে নিয়ে আসছেন। গাইড হিসেবে কোন পাঁচটা জায়গা দেখাবেন?
বিদ্যা: খুব ইজি।
১) কালীঘাটে মায়ের মন্দির। আমি এই মন্দিরে অসম্ভব আকর্ষিত। যখনই আসি একবার ঘুরে যাই। ‘ডার্টি পিকচার’এর পরেও এসেছিলাম।
২) গড়িয়াহাট। এখানকার শাড়ির দোকানগুলোয় সবচেয়ে ভাল সুতির শাড়ি পাওয়া যায়। কম টাকায়।
৩) শ্রীহরি মিষ্টান্ন ভাণ্ডার। দোকানটা বেলতলার কাছে। ওখানে গিয়ে শুধু লুচি আর ঘুগনিটা খেতে হবে অসামান্য।
৪) ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল। কারণ নিশ্চয়ই ব্যাখ্যা করার প্রয়োজন নেই।
৫) চৌধুরী গেস্ট হাউস। জীবনে প্রথম শুটিং করতে এসে ওখানেই উঠেছিলাম।


পত্রিকা: গাইড হয়ে এগুলো ঘোরাবেন?
বিদ্যা: আমায় শেষ করতে দিন।
৬) মোনালিসা গেস্ট হাউস। ‘কহানি’ যেখানে শু্যটিং করেছি।
৭) বিবেকানন্দ পার্ক। ওই পার্কের কোনায় বিজলি গ্রিলের সোডা।
৮) কুমোরটুলি। ঠাকুর তৈরি হচ্ছে এমন সময়ে।
৯) দেশপ্রিয় পার্কের কাছে ‘মহারানি’। ওখানকার চা।
১০) গোলপার্ক রামকৃষ্ণ মিশন। অদ্ভুত শান্তির জায়গা।


পত্রিকা: অবাক লাগছে আপনি যে ভাবে কলকাতার গলিঘুঁজি নিয়ে বলছেন।
বিদ্যা: আরে গলিঘুঁজি কী! আমি তো বাংলা গান আর ছড়াও বলতে পারি।

পত্রিকা: তাহলে তো বাংলায় পুরোটা ইন্টারভিউ করলেই হত।
বিদ্যা: কোনও সমস্যা ছিল না। আমার শুধু সামান্য প্রবলেম হয় টিভিতে অনর্গল বাংলা বলতে গেলে। তখন আমি কনশাস হয়ে পড়ি।

পত্রিকা: এমন বাঙালি হয়ে কী লাভ যদি একটা বাংলা ছবিই না করেন!
বিদ্যা: বাংলা ছবি করতে পারলে আমার মতো খুশি কেউ হবে না। আপনি ফোন করার দু’ মিনিট আগে বুম্বাদা বেরিয়ে গেলেন। উনি খুব উৎসাহী এক সঙ্গে বাংলা ছবি করতে। আমিও উৎসাহী। শুধু জুতসই একটা স্ক্রিপ্ট দরকার। আর একটা কথা বুম্বাদাকে আমি বলে দিয়েছি আমাকে ছবিতে বাংলা বলতে দিতে হবে। অন্য কেউ ডাবিং করলে আমি সিনেমাটা করব না।

পত্রিকা: ‘কহানি’র পরে তো আপনাকে নিয়ে জয়জয়কার। এক এক সময় মনে হচ্ছে নিজের শর্ত আর নিজের ভ্যালুতে অবিচল থেকে আপনার সাফল্যটা নারী-পুরুষ নির্বিশেষে অনুপ্রেরণা জোগাবে।
বিদ্যা: আমি নিজেকে খুব ভাগ্যবান বলব এমন একটা পরিবারে জন্মেছি যেখানে আমাকে নিঃশর্ত ভালবাসা দেওয়া হয়েছিল আর বলা হয়েছিল নিজের স্বপ্নকে তাড়া করার জন্য সাহস দেখাও। নিজের বিশ্বাসের ওপর দাঁড়াও। আমি তখন থেকেই শিখেছি জীবনের নিয়ম বলে নির্দিষ্ট কিছু হয় না। তুমি নিজের জন্য যে নিয়ম বাছবে সেটাই নিয়ম। জীবনের আদর্শ রাস্তা বলে কিছু হয় না। তুমি নিজের জন্য যা বাছবে সেটাই আদর্শ রাস্তা। আমরা আসলে জীবনে সামাজিক অনুষঙ্গ আর বিধিনিষেধ মেনে চলতে এত অভ্যস্ত হয়ে যাই যে নিজে কী চাইছি সেটা বুক ফুলিয়ে বলার সাহসটাই চলে যায়। আমাদের আওয়াজ সব সময়ই মাথা নত করে ফেলে সামাজিক বিধির কাছে। আমি এখন খুব খুশি। ভীষণ তৃপ্ত। যে আমার সাফল্য এসেছে নিজের টার্মসে চলে। আমার চরিত্রগুলো যদি পরপর দেখেন ‘ইশকিয়া’, ‘পা’, ‘...জেসিকা’ প্রত্যেকটাই খুব শক্তিশালী নারী চরিত্র। কোথাও আমি নিজের দর্শনের সঙ্গে আপস করিনি।

চায়ের দোকানে বিদ্যা বাগচি
পত্রিকা: এই যে স্রোতের কাছে মাথা না ঝুঁকিয়ে নিজের মতো থেকেও সাফল্য কুড়নো এটাই কি বিদ্যা কি কহানি?
বিদ্যা: আমার বরাবরই মনে হয় আমরা নিজেরা নিজেদের পাশে দাঁড়াই না। সব সময় ভাবি পাশের লোকটা আমাদের সম্পর্কে কী ভাবছে। আমি যেটা করছি সেটা সামাজিক অনুমোদন পাচ্ছে কি না? আমি এই দর্শনে বিশ্বাস করি না। আমি খুঁড়ে বার করি আমি কী চাইছি? সেই চাহিদার পেছনে নিজেকে সমর্পণ করি মনপ্রাণ দিয়ে। নিজেকে আমি গ্রহণ করতে শিখেছি নিজের মতো করে। আর সব কিছুসহ নিজেকে গ্রহণ করে নেওয়ার মতো স্যাটিসফাইয়িং অভিজ্ঞতা আর নেই।

পত্রিকা: অর্থাৎ একটা ট্রেন্ড বলিউডে তৈরি হয়ে গেল যে আমার করিনা কপূর হওয়ার দরকার নেই। ঐশ্বর্যা রাই হওয়ার পেছনে দৌড়নোর দরকার নেই। আমি নিজের মতো থেকে, নিজের লেনে দৌড়েও বাজি জিততে পারি।
বিদ্যা: আমি অন্য কোনও নাম করে তুলনা টানতে চাই না। আমি জাস্ট নিজের মতো।

পত্রিকা: বলতে চাইছি আপনি তো দেখিয়ে দিলেন যে ওঁদের মতো ‘ডিভা’ না হলেও চলবে। তা হলেও যুদ্ধে জেতা যাবে।
বিদ্যা: আমি তো বলছি আর কাউকে ভাবার দরকার নেই। শুধু নিজেকে ভেবে সৎভাবে দৌড়ে চলাই ভাল।

পত্রিকা: ‘কহানি’ দেখে আমাদের হ্যাংওভার আর কাটছে না। যে মানুষটা সকলকে হ্যাংওভার দিল তার কাটতে কত দিন লেগেছে?
বিদ্যা: আরে বাবা আমি তো যেন গত ৯ মার্চ বাচ্চার ডেলিভারি করলাম। আমার শিশুকে পৃথিবী যে এমন দারুণভাবে স্বাগত জানিয়েছে তাতে দারুণ খুশি। ছবিটা ভীষণ ডিফিকাল্ট ছিল। সুজয় একটা লাইন নিয়ে আমার কাছে এসেছিল। এক অন্তঃসত্ত্বা মহিলা তার নিরুদ্দেশ স্বামীর খোঁজে ব্যাকুল হয়ে কলকাতা এসেছে। এর আগে সুজয় অনেক স্ক্রিপ্ট শুনিয়েছে। আমার মনে ধরেনি। কিন্তু একটা লাইন শুনেই আমি হ্যাঁ করে দিই। সমস্যা হল ছবির কোনও প্রোডিউসার পাওয়া যাচ্ছিল না। বড় বড় প্রোডাকশন হাউস না বলে দেয়। যারা কথা বলতে রাজি হচ্ছিল তারাও শর্ত দিচ্ছিল যেহেতু ছবিতে তেমন বড় নাম নেই কোনও পুরুষ সুপারস্টারকে ক্যামিও রোলে আনতে হবে। সুজয় রাজি হয়নি। প্রোডিউসাররাও না বলে দেয়। তখন একদিন এসে ও আমায় বলে, ভাবছি বাড়িটা বন্ধক দিয়ে দেব। কিন্তু ছবিটা করব। আমি তখন ওকে বলি, ‘বাড়ি বন্ধক দিও না। অপেক্ষা করো। কিছু না কিছু নিশ্চয়ই হবে। কাউকে না কাউকে নিশ্চয়ই পাওয়া যাবে।’ শেষ পর্যন্ত জয়ন্তিলাল গাড়া নামক প্রোডিউসার টাকা ঢালতে রাজি হন।

পত্রিকা: বাকিটা ইতিহাস!
বিদ্যা: বাকিটা এই, যে দৃঢ় বিশ্বাস আর সততা প্রচুর পরিমাণে জড়ো হলে সামনের পাথরগুলো সরিয়ে দেওয়া যায়। এই ছবির সময় বিশ্বাস ছাড়া আর তো কিছুই ছিল না আমাদের।

পত্রিকা: এটাই তো বিদ্যা মডেল।
বিদ্যা: বললাম তো দৃঢ় বিশ্বাস আর সংকল্পের জয় কোনও না কোনও দিন হবেই। আপনাকে হয়তো অপেক্ষা করতে হবে অনেক। কিন্তু ফল আসবেই।

পত্রিকা: ফল এমন এসেছে যে লোকে বলতে শুরু করেছে এক যে ছিল রানি মুখোপাধ্যায়। এখন এক যে আছে বিদ্যা বালন।
বিদ্যা: এই আবার নাম চলে এল। আমি কোনও নামটাম নিয়ে আলোচনা করতে চাই না। ব্রহ্মাণ্ডে প্রত্যেকের জন্য নিজস্ব জায়গা আছে। আমি আছে আমার স্পেসে। অন্য কেউ আছে অন্যের স্পেসে। কেউ কারওর সঙ্গে লড়ছে না।

পত্রিকা: প্রচণ্ড পলিটিক্যালি কারেক্ট উত্তর।
বিদ্যা: একেবারেই না। আমি সত্যি ভেতর থেকে বিশ্বাস করি।

পত্রিকা: কিন্তু পরপর দু’টো হিট ছবিতে আপনার জীবনটাই নিশ্চয়ই বদলে গেছে?
বিদ্যা: অনেক হেকটিক হয়ে গেছে। বলতে পারেন চারদিক থেকে ভেসে আসা প্রশংসায় আমি এখন ভাসছি। বেশ নিরাপদও মনে হচ্ছে যে ছোট একটা পাদানি অন্তত হয়েছে। কিন্তু আপাতত আমার তিন মাসের ব্রেক চাই। শারীরিক মানসিক দিক থেকে একদম নিঃশেষিত অবস্থায় রয়েছি।

পত্রিকা: বলিউডের বর্ণমালার দু’টো গুরুত্বপূর্ণ অক্ষর আপনাকে কী বললেন টললেন? ‘বি’ আর ‘কে’।
বিদ্যা: (হাসি) ‘বি’র সঙ্গে যোগাযোগ হয়নি। তবে ‘কে’ ডার্টি পিকচার’এর পরেই আমাকে দারুণ অভিনন্দন জানিয়েছেন। তখনও উনি নিজে দেখেননি। কিন্তু এর ওর মুখে শুনে বলেছিলেন দারুণ কাজ করেছ।

পত্রিকা: ‘বি’র হোম প্রোডাকাশন ‘পা’তে কাজ করে জাতীয় পুরস্কার না পাওয়ায় আপনি প্রচণ্ড আঘাত পেয়েছিলেন। সেই আঘাতটা তো মুছে গেল।
বিদ্যা: চোটটা বেশি দিন ছিলও না। লাইফ গোজ অন। প্রত্যেকটা দিন নতুন দিন। আমি নিজেকে বলেছিলাম রোজ তো সূর্য ওঠে। হয়তো আমারও সূর্য উঠবে।

পত্রিকা: সবই তো এসে গেল। এ বার প্রিন্স চার্মিং কবে আসবে?
বিদ্যা: তার জন্য সময় আছে। আমি এখনই বিয়ের জন্য প্রস্তুত নই।

পত্রিকা: বিয়ের আবেদনে প্রার্থীর নামের সঙ্গে কলকাতা যুক্ত থাকলে সে কি বাড়তি সুবিধে পাবে?
বিদ্যা: পাবে। আমি যাকেই বিয়ে করি না কেন তার কলকাতার সঙ্গে কোথাও একটা কানেক্ট থাকাটা জরুরি। কলকাতা আমায় প্রথম ফিল্ম দিয়েছে, প্রথম হিন্দি ফিল্ম দিয়েছে। ‘ভুলভুলাইয়া’র শু্যটিংও অনেকটা এখানে। এই শহরটার সঙ্গে আমার ভীষণ একটা কানেক্ট আছে। আমি মৃণাল সেনের ছবি ভালবাসি। উত্তমকুমারের ফিল্ম ভালবাসি। ‘সন্ন্যাসী রাজা’ দেখে আমি পাগল হয়ে গেছি। ওই যে মান্না দে’র গানটা ‘কাহারবা নয় দাদরা বাজাও’ কী অসাধারণ!

পত্রিকা: উত্তমকুমারকে ভাল লেগেছে?
বিদ্যা: ভাল মানে? কী অসম্ভব ন্যাচেরাল অভিনয়। শুধু একটা দৃশ্য বলি, সন্ন্যাসী হয়ে যাওয়ার পর প্রথম ওই লুকটা। কোনও ডায়লগ নেই। জাস্ট তাকানোটা। উফ্। লোম খাড়া হয়ে যাবে।

পত্রিকা: এত কলকাতা কলকাতা করছেন। শুদ্ধভাবে একটা বাংলা সেনটেন্স বলুন তো।
বিদ্যা: দু’টো বলছি। ‘কী হচ্ছে দাদা এ সব?’ ‘এই তো জীবন কালীদা’।

পত্রিকা: অ্যা।
বিদ্যা: হা হা হা।

বিদ্যার কলকাতা গাইড
কালীঘাট মন্দির। আমি এই মন্দিরে অসম্ভব আকর্ষিত। যখনই আসি একবার ঘুরে যাই। ‘ডার্টি পিকচার’এর পরেও এসেছিলাম।
গড়িয়াহাট। এখানকার শাড়ির দোকানগুলোয় সবচেয়ে ভাল সুতির শাড়ি পাওয়া যায়। কম টাকায়।
শ্রীহরি মিষ্টান্ন ভাণ্ডার। দোকানটা বেলতলার কাছে। ওখানে গিয়ে শুধু লুচি আর ঘুগনিটা খেতে হয়— অসামান্য।
ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল। কারণ নিশ্চয়ই ব্যাখ্যা করার প্রয়োজন নেই।
চৌধুরী গেস্ট হাউস। জীবনে প্রথম শু্যটিং করতে এসে ওখানেই উঠেছিলাম।
মোনালিসা গেস্ট হাউস। ‘কহানি’ যেখানে শুটিং করেছি।
বিবেকানন্দ পার্ক।র্ওই পার্কের কোনায় বিজলি গ্রিলের সোডা— অসাধারণ।
কুমোরটুলি। ঠাকুর তৈরি হচ্ছে এমন সময়ে।
দেশপ্রিয় পার্কের কাছে ‘মহারানি’। ওখানকার চা।
রামকৃষ্ণ মিশন। অদ্ভুত শান্তির জায়গা।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.