দক্ষিণ কলকাতা: গড়িয়া, সোনারপুর
জুলপিয়া
ধুঁকছে চিকিৎসা
য়েক লক্ষ টাকা ব্যয়ে তৈরি হয়েছিল নতুন ভবন। এখানেই চালু হওয়ার কথা ছিল জুলপিয়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের অন্তর্বিভাগ। কিন্তু ভবন তৈরি হলেও এখনও চালু হয়নি ওই বিভাগ। স্থানীয় বাসিন্দা ও স্বাস্থ্যকর্মীদের একাংশের অভিযোগ, স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি পাঁচিল দিয়ে ঘেরা না থাকায় বহিরাগতদের হাত থেকে তা রক্ষা করা রীতিমতো দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
জুলপিয়া-সহ আঁধারমাণিক, বলাখালি, পানারালা, পানাকুয়া, দমদমা, রসখালি, চকনিতাই, নেপালগঞ্জ হাট সংলগ্ন এলাকার কয়েক লক্ষ বাসিন্দা এই জুলপিয়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উপর নির্ভরশীল। ফলে এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে দশ শয্যার একটি অন্তর্বিভাগ তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছিল স্বাস্থ্য দফতর। পরিকল্পনা অনুসারে শুরু হয় নতুন ভবন এবং চিকিৎসকদের জন্য নতুন কোয়ার্টার্স তৈরির কাজ।
পুরনো বাড়িতেই চিকিৎসা
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, অন্তর্বিভাগ ও চিকিৎসকদের জন্য কোয়ার্টার্স বানানোর কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। স্থানীয়দের কথায়: হাসপাতাল চত্বরে অনেক দিন ধরেই ভবনগুলি তৈরি হয়ে পড়ে আছে। এখানে কোনও কাজ হয় না। স্থানীয় বাসিন্দা রাজু সর্দারের কথায়: “শুনেছি এই নতুন ভবনে নাকি হাসপাতাল হবে। রোগীদের ভর্তি করা হবে এখানে। কিন্তু ভবন তৈরি হয়ে পড়ে থাকলেও সেখানে কাজ কিছু হয় না।”
জুলপিয়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র চত্বরে পা দিতেই দেখা গেল, একটি নতুন ভবন এবং দু’টি কোয়ার্টার তৈরি হয়ে পড়ে রয়েছে। ভবনগুলি নতুন তৈরি হলেও সেগুলির জানলার কাচ ভেঙে গিয়েছে। বন্ধ হওয়া বাড়িগুলির মেঝে, দেওয়াল ধুলোয় ভরা। বারন্দায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে ইটের টুকরো। দরজায় মাকড়সার জাল। নতুন এই ভবনের পাশেই পুরনো একটি ভবনে চলছে বহির্বিভাগের চিকিৎসা। এই ভবনটি পুরনো হওয়ায় এর অনেক জায়গায় প্লাস্টার খসে পড়েছে। চিকিৎসক এবং সাফাইকর্মীদের পুরনো বাড়িগুলি পরিণত হয়েছে পরিত্যক্ত বাড়িতে। আর এর পাশেই অবহেলায় পড়ে রয়েছে নতুন তৈরি ভবনগুলি।
পড়ে আছে নতুন ভবন
নতুন তৈরি ওই ভবনে কবে থেকে শুরু হবে চিকিৎসা সংক্রান্ত কাজ? কর্তব্যরত স্বাস্থ্যকর্মীরা বিষয়টি এড়িয়ে যান। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্বাস্থ্যকর্মী বলেন, “সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বহির্বিভাগে রোগী দেখা হয়। এখানে এখন কুষ্ঠ, যক্ষ্মা এবং সাধারণ রোগের চিকিৎসা হয়। শিশুদের টিকাও দেওয়া হয়। রোগ নির্ণয়ের জন্য কিছু পরীক্ষাও করা হয়। তবে জটিল কোনও রোগ হলে রোগীদের পাঠিয়ে দেওয়া হয় অন্য হাসপাতালে।”
তবে এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্মীদের একাংশের অভিযোগ, স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চারপাশে কোনও পাঁচিল না থাকায় কে কখন ঢুকছেন বা বেরোচ্ছেন তা খেয়াল রাখা সম্ভব হয় না। অনেক সময়েই বহিরাগতরা স্বাস্থ্যকেন্দ্র চত্বরের মাঠে বসে আড্ডা দেন। ফলে নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে কাজ করতে হয়।
চিকিৎসকদের পুরনো কোয়ার্টার পড়ে আছে চিকিৎসকদের নতুন কোয়ার্টার
নতুন ভবন তৈরি হলেও এত দিনেও সেখানে কাজ শুরু হল না কেন? এই প্রশ্নের কোনও সদুত্তর জেলা স্বাস্থ্য দফতর থেকে পাওয়া যায়নি। দক্ষিণ ২৪ পরগনার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শিখা অধিকারী শুধু বলেন, “জুলপিয়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নতুন ভবনে খুব শীঘ্রই দশ শয্যার বহির্বিভাগ চালু হবে। এর মধ্যে ওখানে চিকিৎসক পাঠানো হয়েছে।”

ছবি: পিন্টু মণ্ডল




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.