|
|
|
|
|
|
পূর্ব কলকাতা: লেকটাউন, বারাসাত |
গাড়ির মেলা |
শুধুই আটক |
অরুণাক্ষ ভট্টাচার্য |
এক ঝলকে দেখে মনে হবে, যেন গাড়ির মেলা বসেছে। কী গাড়ি নেই সেখানে? কিন্তু, ভিতরে ঢুকলেই ব্যস্ততাটা আলাদা। সশস্ত্র ঊর্দির ভিড় আর গোটা গোটা অক্ষরের লেখা পড়ে জানা যাবে, আসলে এটাই বারাসত থানা। উত্তর ২৪ পরগনার জেলা সদর বারাসতের একমাত্র পুলিশ থানা।
পাঁচ বছরেরও বেশি পেরিয়ে গেল, কোনও গাড়ির ‘অকশন’ বা নিলাম হচ্ছে না পরিবহণ দফতরে। সে জন্য নানা কারণে ধরা পড়া গাড়িগুলি জমে জমে কার্যত পাহাড় হয়ে গিয়েছে খাস পুলিশ থানাতেই। শুধু বারাসতই নয়। মধ্যমগ্রাম, শাসন, দত্তপুকুর, ময়না, নীলগঞ্জের মতো আশপাশের এলাকা থেকেও বাজেয়াপ্ত করা প্রচুর গাড়ি বারাসত থানায় জমা থাকে। অভিযোগ উঠেছে, নিলাম না হওয়ায় প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ টাকার রাজস্ব ক্ষতি হচ্ছে সরকারের। |
|
কিন্তু তা নিয়ে কতটা হেলদোল রয়েছে প্রশাসনিক মহলে? পরিবহণ দফতরের ভারপ্রাপ্ত কর্তা তথা উত্তর ২৪ পরগনার অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) রণধীর কুমার বলেন, “নিলাম না হওয়ায় রাজস্ব ক্ষতির কথা অস্বীকার করা যাবে না। বেশ কয়েক বছর ধরে কিছু জটিলতায় নিলাম করা যায়নি। তবে, আগামী দু’মাসের মধ্যে করার চেষ্টা চলছে।” নিলাম না হওয়ার জন্য ক্ষতিও হচ্ছে নানা ধরনের। যেমন, থানার পরিসর দখল হয়ে গিয়েছে বাজেয়াপ্ত মোটরবাইক এবং নানা ধরনের গাড়িতে। ছাউনি না থাকায় রোদে-জলে নষ্ট হচ্ছে দামী গাড়িগুলি। বেশ কিছু গাড়ির যন্ত্রাংশ মরচে পড়ে খুলে গিয়েছে। এ সব গাড়িগুলির মধ্যে পুরনো থেকে একেবারে হালফিলের নতুন গাড়িও রয়েছে।
জেলার অতিরিক্ত পরিবহণ অধিকর্তা সমীর প্রামাণিক বলেন, “দীর্ঘ দিন পড়ে থাকলে এক দিকে যেমন গাড়ির ক্ষতি হয়, তেমনই গাড়ির আধুনিক মডেল আসার পরে পুরনো মডেলগুলির দাম কমে যায়।” তিনি বলেন, “এই সমস্ত গাড়ির পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ
নিয়ে ফাইল তৈরি চলছে। কিছু দিনের মধ্যেই নিলাম হবে।” |
|
পরিবহণ দফতর সূত্রে বলা হয়, অনেক সময় গাড়ির ঋণ শোধ করতে না পারায় সংশ্লিষ্ট গাড়িগুলিকে বাজেয়াপ্ত করা হয়। অনেক সময় কমার্শিয়াল লাইসেন্স ছাড়াই গাড়ি ভাড়া খাটানো, লাইসেন্স না থাকা, গাড়ির কাগজপত্র ঠিকঠাক না থাকা এবং ট্রাফিক বিধি ভাঙার কারণেও অনেক গাড়ি বাজেয়াপ্ত করা হয়। আবার অপরাধমূলক কাজকর্মে ব্যবহৃত গাড়িও পুলিশ আটক করে জমা রাখে। এই গাড়িগুলির একশো শতাংশই রাস্তায় চলাচলের অবস্থায় থাকে। কিন্তু দীর্ঘ দিন না চলায় বেশির ভাগ গাড়ির ইঞ্জিন বিকল হয়ে পড়ে। দামও পড়ে যায়। এ ব্যাপারে বারাসত থানার আইসি পরেশ রায় বলেন, “গাড়িগুলিকে আলাদা করে রাখার মতো পরিকাঠামো আমাদের নেই। তবে অবিলম্বে নিলামের জন্য গাড়িগুলির অবস্থা পরিবহণ দফতরে জানানো হয়েছে।”
২০০৯ সালেও এক বার এ রকম নিলামের কথা হয়েছিল। কিন্তু সে বারেও শেষমেশ নিলাম করে উঠতে পারেনি পরিবহণ দফতর। এ বারেও কাগজপত্র তৈরি করে প্রস্তুতি নিলেও আদৌ নিলাম হবে কি না তা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে।
|
ছবি: সুদীপ ঘোষ |
|
|
|
|
|