ইডেনে আইপিএলের প্রথম ম্যাচে নামতে তাঁর টিমের এখনও দিন পনেরো বাকি। কিন্তু তার আগেই কলকাতার বাজার ধরতে নেমে পড়লেন নাইট মালিক শাহরুখ খান!
ড্রামের জগঝম্প নয়। এ বার ইডেনে কেকেআর নামলে শোনা যাবে অন্তত শ’খানেক ঢাকের বাদ্যি। গ্যালারির সমস্ত ব্লকে যাঁরা ছড়িয়ে থাকবেন। আর ঢাক বাজবে নাইটরা চার-ছক্কা হাঁকানোর সময়। উইকেট পড়লে। বিরতিতে।
পাল্টে যাচ্ছে চিয়ারগার্লদের সাজপোশাকও। বিদেশি পোশাকের বদলে নাইট চিয়ারগার্লরা এ বার পরতে চলেছেন শাড়ি।
শাহরুখের নির্দিষ্ট কর্পোরেট বক্সে কাঠের দেওয়াল উঠে যাচ্ছে। বদলে পুরোটাই থাকবে কাচে মোড়া। যাতে ভক্তরা তাঁকে আরও ভাল করে দেখতে পান। শাহরুখের সঙ্গে যাতে আরও বেশি যোগাযোগ বাড়ে নাইট সমর্থকদের।
এবং যাবতীয় পরিকল্পনাই কিং খানের মস্তিষ্কপ্রসূত। |
ক্রিকেটমহলের অনেকেই মনে করছেন, এ বার আইপিএল ফাইভের শুরু থেকেই সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় পুণে ওয়ারিয়র্সের সংসারে ঢুকে পড়ায় কলকাতার সমর্থন ভাগাভাগি হওয়ার সম্ভাবনা যথেষ্ট। আর শুধু তো ‘মেন্টর’ নন, পুণের নেতৃত্বেও থাকছেন সৌরভ। আর তাই শহরের হৃদয় জিততে শাহরুখের বাজি বাঙালিয়ানা। উদ্বোধনী ম্যাচে ছৌ নাচ থেকে শুরু করে, বাংলা ব্যান্ড হাজির করা যে পরিকল্পনার অংশ হিসাবে ধরা হচ্ছে। শুক্রবার সিএবি-র সঙ্গে বৈঠক শেষে কেকেআর সিইও বেঙ্কি মাইসোরও বলে দিলেন, “এ বার আমরা বাংলার সংস্কৃতিকে হাজির করতে চাইছি ইডেনে।” ম্যাচের মাঝে রবীন্দ্রসঙ্গীত বাজিয়ে দেওয়া হতে পারে, এমনটাও শোনা গেল। সঙ্গে কমে যাচ্ছে টিকিটের দাম। তিনশো, চারশো এবং পাঁচশো টাকা মূল্যের টিকিট থাকছে এ বার। শাহরুখ আবার চেয়েছেন কেকেআরের ম্যাচ শেষে ইডেনে চিত্রতারকাদের নিয়ে নিয়মিত ভাবে মশলা ম্যাচ করতে। গত বারও কয়েকটা ম্যাচে যা হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা করা যাবে কি না, সন্দেহ থাকছে। কারণ, পুলিশের আপত্তি।
এক দিকে, বিনোদন-যজ্ঞের আগাম প্রস্তুতি। অন্য দিকে, ক্রিকেট কিট নিয়ে আইপিএলের দুনিয়ায় ঢুকে পড়া। শুক্রবার থেকে ইডেনে শুরু হয়ে গেল নাইটদের শিবির। কিন্তু সে ভাবে জমল না, কারণ অধিকাংশ প্লেয়ারই নেই। কোচ ট্রেভর বেইলিস শহরে ঢুকছেন শনিবার রাতে। ওয়াসিম আক্রম আসছেন ২৯ মার্চ। এ দিন চেনা মুখের মধ্যে ছিলেন মনবিন্দর বিসলার মতো দু’একজন। আর নায়ক বলতে টিমের মনোবিদ রুডি ওয়েবস্টার।
ক্লাইভ লয়েডের বিশ্বজয়ী ওয়েস্ট ইন্ডিজ টিমের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটের স্বর্ণযুগ দেখেছেন খুব কাছ থেকে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সঙ্গে যোগাযোগ এখনও ভাল রকম। গত বছরও ভারতের ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের সময় ডারেন স্যামিদের মনোবিদ হিসেবে তাঁকে নিয়োগ করেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। খুব কাছ থেকে দেখেছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের নতুন অফস্পিনার সুনীল নারিনের উত্থান। যিনি কিনা এ বার নাইটদের সম্পত্তি। ইডেনে প্র্যাক্টিস শেষে ওয়েবস্টার বলছিলেন, “নারিনের বড় গুণ হল, ও সঠিক লাইনে বল করে যেতে পারে। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ওর পারফরম্যান্সই তার প্রমাণ।” এখন বাহাত্তর চলছে ওয়েবস্টারের। কিন্তু উৎসাহে খামতি নেই। এই আইপিএলের ফাঁকেই নিজের মোটিভেশন-মূলক বই বার করবেন বলে জানা গেল। যেখানে স্যর গ্যারি সোবার্স থেকে জাক কালিস, রাহুল দ্রাবিড়, সবার সাক্ষাৎকারই থাকছে। আর নাইট শিবিরকে কতটা তাতানো যাবে এই কম সময়ে? ওয়েবস্টারের উত্তর, “সময়টা আমার হাতে নেই জানি। আইপিএলের চ্যালেঞ্জটা অন্য রকম। এখানে বিভিন্ন দেশ থেকে ক্রিকেটাররা খেলতে আসে। যাদের সংস্কৃতি আলাদা। মূল্যবোধ আলাদা। আমার কাজ হবে সবাইকে একটা নির্দিষ্ট লক্ষ্যের জন্য জোটবদ্ধ করা।” |