কেন্দ্রীয় বাজেটে উৎপাদন শুল্ক বৃদ্ধির ফলে এই সবে এক দফা দাম বেড়েছে অধিকাংশ গাড়ির। তাই তার পর রাজ্য বাজেটেও ১০ লক্ষ টাকার বেশি দামের গাড়ির উপর কর বাড়ানোকে মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট শিল্পমহল। দশ লক্ষের বেশি দামের গাড়ি মানে, মূলত দামি সেডান বা এসইউভি জাতীয় গাড়িই এই বর্ধিত করের আওতায় আসবে। আর, তা মানছে গাড়ি শিল্পও। কিন্তু তাদের অভিযোগ, তা সত্ত্বেও ফের গাড়ির দাম বাড়া নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হবে সম্ভাব্য ক্রেতাদের মধ্যে। যার জেরে দামি বড় গাড়ির বিক্রি বৃদ্ধির গতি কিছুটা হলেও ধাক্কা খাওয়ার সম্ভাবনা। তার ফলে আশঙ্কা থাকছে তাদের ডিলারশিপ বা পরিষেবা কেন্দ্রে কর্মসংস্থানে প্রভাব পড়ারও। শুক্রবার বাজেটে ১০ লক্ষ টাকার বেশি দামের গাড়ির উপর করের হার ১৩.৫% থেকে বাড়িয়ে ১৪.৫% করেছেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। গাড়ি শিল্পমহলের দাবি, দেশের অন্য বেশ কয়েকটি রাজ্যের তুলনাতেই দামি বড় গাড়ির বাজার পশ্চিমবঙ্গে ছোট। তবে সম্প্রতি ওই ধরনের গাড়ির বিক্রি বাড়ছিল দ্রুত হারে। কিন্তু কর বৃদ্ধির সিদ্ধান্তে সেই গতি শ্লথ হতে পারে বলে আশঙ্কা তাঁদের। বিশেষত যখন কেন্দ্রীয় বাজেটে উৎপাদন শুল্ক বৃদ্ধির দরুন এই সবে দাম বেড়েছে গাড়ির। সমস্যা রয়েছে তেলের চড়া দাম এবং চড়া সুদের কারণেও। সব মিলিয়ে, এই পরিস্থিতিতে বাড়তি করের বোঝা এ রাজ্যে তাদের আরও সঙ্কটের মুখে ঠেলে দেবে বলে অভিযোগ গাড়ি শিল্পমহলের। অবশ্য দ্বৈত করের সমস্যা মেটাতে গাড়ির মূল দামের উপর কর বসানোর পাশাপাশি গাড়ি সারাইয়ের ক্ষেত্রে ডিলারদের জন্য কর ছাড়ের কথাও ঘোষণা করেছেন অমিতবাবু।
|
রাজ্য বাজেটে দু’ধরনের সেস-ই তুলে নেওয়ার ঘোষণাকে স্বাগত জানাল চা শিল্প। প্রত্যাশিত ভাবেই। তাদের মতে, এর ফলে বছরে বাঁচবে প্রায় ১২-১৩ কোটি টাকা। কিছুটা হলেও অক্সিজেন পাবে ধুঁকতে থাকা চা শিল্প। ১৯৭৬ সালের পশ্চিমবঙ্গ গ্রামীণ কর্মসংস্থান ও উৎপাদন আইন এবং ১৯৭৩ সালের পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা আইনে যথাক্রমে গ্রামীণ কর্মসংস্থান সেস এবং শিক্ষা সেস দিতে হয় রাজ্যের চা বাগানগুলিকে। শুক্রবার এই দু’ধরনের সেস-ই তুলে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। একই সঙ্গে, যাঁরা ওই সেসের টাকা দিতে পারেননি, আগামী ৩১ মার্চের মধ্যে তাঁরা তা মিটিয়ে দিতে পারলে জরিমানা ও সুদের অঙ্ক কম হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। এই ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়ে ইন্ডিয়ান টি অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান সি এস বেদী এবং ম্যাকলিওড রাসেল টি-র ম্যানেজিং ডিরেক্টর আদিত্য খেতান বলেন, “এতে সত্যিই অক্সিজেন পাবে সমস্যা জর্জরিত চা বাগান।” বেদীর মতে, “এর থেকে কতটা টাকা বাঁচবে, শুধু সেই অঙ্কটুকু দেখলে হবে না। বরং ধুঁকতে থাকা চা শিল্পকে ঘুরে দাঁড় করাতে রাজ্য সরকার যে সদর্থক পদক্ষেপ করেছে, তা মাথায় রাখতে হবে। সেই হিসেবে দেখলে, রাজ্যের সদিচ্ছার প্রতিফলন এই ঘোষণায় স্পষ্ট।”
|
আগামী ১ এপ্রিল থেকে যে কোনও চেক, ব্যাঙ্ক ড্রাফ্ট ও পে অর্ডার তিন মাসের জন্য বৈধ হিসেবে গণ্য করা হবে বলে নির্দেশ দিল ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। এখন টাকা মেটানো বা লেনদেনের এই মাধ্যমগুলির বৈধতা ধরা হয় ছ’মাস। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক জানিয়েছে, এপ্রিল থেকে এমন কোনও চেক, ড্রাফ্ট বা পে অর্ডার ভাঙানোর অনুমতি ব্যাঙ্কগুলি দিতে পারবে না, যেটির মেয়াদ, ইস্যু করার দিন থেকে শুরু করে ৩ মাস পেরিয়ে গিয়েছে। শীর্ষ ব্যাঙ্কের দাবি, জালিয়াতি রুখতেই এই সিদ্ধান্ত। যার ইঙ্গিত তারা দিয়েছিল বেশ কিছু দিন আগেই। তখনই কারণ হিসেবে জানানো হয় যে, ছ’মাসের লম্বা সময়ের সুযোগ নিয়ে কিছু ব্যক্তি নগদের মতো চেক, ড্রাফ্ট বা পে অর্ডার বাজারে অপব্যবহার করছে বলে অভিযোগ এসেছে।
|
রাজ্যে স্বর্ণশিল্পে আজ ও কালকের ধর্মঘটের ডাক তুলে নেওয়া হল। এর ফলে আজ থেকে যথারীতি গয়নার দোকানগুলি খোলা থাকবে। স্বর্ণশিল্প বাঁচাও কমিটির কার্যকরী সভাপতি বাবলু দে জানান, “রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অনুরোধে আমরা ধর্মঘট তুলে নিলাম। পার্থবাবু আমাদের অভিযোগগুলি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। প্রয়োজনে আমরাও মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করব।” বাজেটে নতুন কর বসানো এবং পুরনো করের হার বাড়ানোর প্রতিবাদে গত শনিবার থেকে দেশ জুড়ে ধমর্ঘট ডাকেন স্বর্ণ ব্যবসায়ী এবং কারিগরেরা। |