পুলিশের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ নিয়ে কংগ্রেস-তৃণমূলের আকচাআকচি চরমে উঠেছে। রবিবার রাতে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে ছাত্র পরিষদ ও তৃণমূল ছাত্র পরিষদের মধ্যে মারপিট হয়। ওই ঘটনার জেরে মঙ্গলবারও দিনভর উত্তপ্ত ছিল শিলিগুড়ি শহর ও লাগোয়া এলাকা। ছাত্র পরিষদের তরফে ছাত্র ধর্মঘটের জেরে অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (ছাড় দেওয়া হয়েছিল পরীক্ষায়) অচল হয়ে যায়। পক্ষান্তরে, তৃণমূল ছাত্র পরিষদের পক্ষ থেকে ধৃত ছাত্র পরিষদ নেতা ‘সমাজবিরোধী’ বলে দাবি জানিয়ে উত্তরবঙ্গের আইজি-র কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়।
এই ঘটনার কথা শুনেছেন উচ্চ শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান সুগত মার্জিত। মঙ্গলবার সুগতবাবু উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি আলোচনাসভায় যোগ দেন। সেখানে সুগতবাবু বলেন, “কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ রাজনীতি-মুক্ত করতে রাজ্য সরকার বদ্ধপরিকর। ইতিমধ্যে ৫ জন উপাচার্যকে নিয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি ১২ মার্চের মধ্যে রিপোর্ট দেবে।” মঙ্গলবার বিধানসভায় ওই ঘটনাকে ঘিরে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিবৃতির দাবি করেন কংগ্রেস বিধায়ক অসিত মিত্র। এই নিয়ে বিধানসভার মধ্যে কংগ্রেস এবং তৃণমূলের বাদানুবাদ শুরু হয়ে যায়। উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেব জানিয়ে দেন, এফআইআর হয়েছে। পুলিশ আইনের পথে চলছে এবং চলবে। অসিতবাবু বিধানসভায় বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছেন বলে গৌতমবাবু অভিযোগ করেন। |
দার্জিলিং জেলা কংগ্রেস (সমতল) সভাপতি শঙ্কর মালাকার অবশ্য
এ দিনও অভিযোগ করেন, “উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেবের নির্দেশেই মারপিটের ঘটনায় ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক রোনাল্ড দে-কে গ্রেফতার করেছে। কিন্তু তৃণমূল নেতা পঙ্কজ দে-কে পুলিশ ধরেনি।”
পুলিশের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ এনে এ দিনও ছাত্র পরিষদের পক্ষ থেকে শিলিগুড়ির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অমিত জাভালগির অফিসের সামনে প্রায় আধ ঘণ্টা পথ অবরোধ করা হয়। কিছুক্ষণ পরে হিলকার্ট রোডের হাসমি চকে উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রীর কুশপুতুল পোড়ান কংগ্রেস ও ছাত্র পরিষদ পরিষদের নেতা-সমর্থকেরা। দার্জিলিংয়ের পুলিশ সুপার আনন্দ কুমার বলেন, “দু’টি অভিযোগই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নিরপেক্ষ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
সোমবার রাত থেকে শিলিগুড়ি বিশেষ সংশোধনাগারে অনশন শুরু করেছেন রোনাল্ড। জেল কর্তৃপক্ষ রোনাল্ডের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল বলে দাবি করেছেন। রবিবার রাতে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন নম্বর গেটের সামনে ছাত্র পরিষদ ও তৃণমূল ছাত্র পরিষদ নেতা-সমর্থকদের মধ্যে মারপিট হয়। |
মঙ্গলবার আসরে নামে তৃণমূলও। তৃণমূলের পক্ষ থেকে পঙ্কজ সিংহের মা উত্তরাদেবীকে দলীয় অফিসে নিয়ে গিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করানো হয়। উত্তরাদেবীর অভিযোগ, দু’টি বাইকে রোনাল্ড-সহ ছয় জন পঙ্কজের বাড়ির সামনে গিয়ে তাঁকে মারধর করে। বাধা দিতে গেলে উত্তরাদেবীও নিগৃহীত হন। টিএমসিপির দার্জিলিং জেলার সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণ পাল বলেন, “পঙ্কজের নেতৃত্বে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে টিএমসিপির সংগঠন শক্তিশালী হচ্ছিল। সেই কারণে তাঁর উপরে হামলা।” তৃণমূলের অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন ছাত্র পরিষদের দার্জিলিং জেলা সভাপতি অমিত তালুকদার। |