প্রয়োজনীয় পরিমাণ বর্জ্য না পাওয়ার অভিযোগ তুলে মাসখানেক আগে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল দুর্গাপুরের কঠিন বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ প্রকল্পটি। অথচ রাজ্য সরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী সংস্থা দুর্গাপুর প্রজেক্টস লিমিটেডের (ডিপিএল) কলোনি, ওয়াটার ওয়ার্কস, স্টেশন ক্লাব সংলগ্ন অঞ্চলের বর্জ্য নিয়মিত সাফাই করা হয় না বলে অভিযোগ।
ডিপিএল কলোনির বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, দীর্ঘ দিন ধরেই বর্জ্য নিয়মিত সাফাই করা হয় না। দুর্গন্ধ ছড়ায়। প্লাস্টিক উড়ে আশপাশের বাড়িতে গিয়ে ঢোকে। বিপাকে পড়েন বাসিন্দারা। এলাকাবাসী সুমিতা বসু, নন্দলাল বন্দ্যোপাধ্যায়দের অভিযোগ, ঘরের জানলা খোলার উপায় নেই। রাস্তা দিয়ে হাঁটতে হয় নাকে রুমাল দিয়ে। আবর্জনার স্তুপ জমে থাকায় মশা-মাছির উপদ্রব বাড়ছে। স্বভাবতই বাড়ছে রোগ সংক্রমণের আশঙ্কাও।”
ডিপিএল সূত্রে জানা গিয়েছে, আগে কলোনির বর্জ্য সাফাই করার দায়িত্বে ছিল ডিপিএল। তখন শহরে কোনও বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্র না থাকায় ডিপিএল সেই বর্জ্য নির্দিষ্ট সময় অন্তর সংগ্রহ করে নিয়ে গিয়ে দূরের কোনও নিচু জায়গায় ফেলে দিত। পরে তা মাটিতে মিশে যেত। কিন্তু কেন্দ্রীয় জওহরলাল নেহরু ন্যাশনাল আরবান রিনিউয়াল মিশন প্রকল্পের আর্থিক বরাদ্দে ২০১০ সালে দুর্গাপুরের শঙ্করপুরে কঠিন বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্রটি গড়ে ওঠার পরে পরিস্থিতি বদলায়। শহরের অন্যান্য জায়গার মতোই পুরসভা ডিপিএল কলোনির বর্জ্য সংগ্রহ করে পাঠাতে শুরু করে প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্রে। |
ওই কেন্দ্রে বর্জ্য বিজ্ঞানসম্মত ভাবে প্রক্রিয়াকরণ করে প্লাস্টিক, সার, বিশেষ ধরনের ইট তৈরি হত। কিন্তু যে পরিমাণ বর্জ্য প্রয়োজন তা পুরসভা পাঠাতে পারে না বলে অভিযোগ দায়িত্বপ্রাপ্ত বেসরকারি সংস্থাটির। তাদের মতে, কেন্দ্রের জন্য প্রতিদিন প্রায় তিনশো মেট্রিক টন বর্জ্য দরকার। কিন্তু পুরসভা গড়ে একশো মেট্রিক টনের বেশি পাঠাতে পারে না।
পুরসভা অবশ্য সে অভিযোগ অস্বীকার করেছে। মেয়র রথীন রায় জানান, বর্জ্যের পরিমাণ একবারে খুব বেশি বাড়ানো সম্ভব নয়। ধাপে ধাপে বাড়াতে হয়। সে ভাবেই এগোচ্ছে পুরসভা।
পুরসভা সূত্রে জানানো হয়েছে, ডিপিএল কলোনিতে বাসিন্দাদের বর্জ্য ফেলার জন্য বেশ কয়েকটি ‘কনটেনার’ রাখা হয়েছে। সেগুলিতে সাধারণত বর্জ্য ফেলেন বাসিন্দারা। অনেকে আবার বাইরেও ফেলেন। তাতেই সমস্যা বাড়ে। বাসিন্দাদের বক্তব্য, নিয়মিত কনটেনার বা বাইরে জমা বর্জ্য সরিয়ে নিতে হবে। নিয়মিত বর্জ্য সাফাই করার কাজ যাতে হয় সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার আশ্বাস দিয়েছেন পুরসভার ডেপুটি মেয়র শেখ সুলতান। তিনি বলেন, “শহরের কোথাও যাতে বর্জ্য না জমে সে ব্যাপারে নজর রাখা হচ্ছে। অন্য জায়গার মতো ডিপিএল কলোনিতেও বর্জ্য যাতে নিয়মিত সাফাই করা হয় সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্মী-আধিকারিকদের নির্দেশ দেব।”
|
মঙ্গলবার ছবিটি তুলেছেন রাজকুমার মোদক। |
সঙ্গিনীর নজর এড়িয়ে জখম দাঁতালের চিকিৎসা করলেন বনকর্মীরা। মঙ্গলবার ডুয়ার্সের খট্টিমারি জঙ্গলের তোতাপাড়া বিটে কুনকি হাতি শিলাবতী ও ফুলমতীর সাহায্যে ঘুমপাড়ানি গুলি করে দাঁতালকে অচেতন করার পরে চিকিৎসা করানো হয়। প্রায় ফুট দশেক উচ্চতার দাঁতালটি গত কয়েকদিন ধরে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটছিল। হাতিটির সামনের বাঁ পা এবং দাঁতে চোট লাগে। বনকর্মীরা কয়েকদিন ধরে সেটির চিকিৎসার পরিকল্পনা নিলেও সঙ্গী স্ত্রী হাতিটির জন্য দাঁতালটির কাছে ঘেঁষতে পারছিলেন না বনকর্মীরা। পাশাপাশি, সম্প্রতি ওই জঙ্গলে বুনো হাতির একটি দল আশ্রয় নিয়েছে। সেই কারণে বনকর্মীরা পাল্টা হামলার আশঙ্কা করছিলেন। এ দিন অবশ্য সহজেই দাঁতালটিকে বাগে আনা হয়। কুনকি দেখে স্ত্রী হাতিটি দূরে সরে যায়। জলপাইগুড়ি জেলার বনাধিকারিক কল্যাণ দাস বলেন, “জখম হাতিটিকে কয়েকদিন ধরে নজরে রাখা হচ্ছিল। আজ সেটির চিকিৎসা করা হয়। আশা করি কয়েকদিনের মধ্যেই দাঁতালটি সুস্থ হবে উঠবে।” সঙ্গিনী দখলের লড়াইয়ে দাঁতালটি জখম হয় বলে সন্দেহ বনকর্মীদের। |