করিমগঞ্জে বনাঞ্চলের জমি ঘিরে বিতর্ক |
পুলিশ অফিসারকে চড় মারার অভিযোগে কিছুদিন আগেই বিতর্কে জড়িায়েছিলেন অসমের সীমান্ত এলাকা উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী সিদ্দেক আহমেদ। বিধানসভায় এ নিয়ে তুলকালাম হয়। করিমগঞ্জ জেলা কংগ্রেস নেতারা ওই পুলিশ অফিসারের কাছে দুঃখপ্রকাশ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। কিন্তু পক্ষকাল পেরোতেই এ বার বনাঞ্চলের জমি দখলের অভিযোগ ঘিরে তাঁকে নিয়ে শুরু হয়েছে নতুন বিতর্ক। এক দিকে বিজেপি অন্য দিকে এআইউডিএফ এই প্রতিমন্ত্রীকে অবিলম্বে মন্ত্রিসভা থেকে সরানোর দাবি তুলেছে।
সংরক্ষিত বনাঞ্চলে কোনও ব্যক্তি বা বেসরকারি সংস্থা চাষবাস করতে পারে না। কিন্তু বিজেপির অভিযোগ, করিমগঞ্জ জেলার পাথারিয়া বনাঞ্চলে দীর্ঘ দিন বসবাসকারী ক’টি পরিবারকে উচ্ছেদ করে মন্ত্রী সিদ্দেক শতাধিক বিঘা জমিতে রবার বাগান করছেন। নিজস্ব লোক লাগিয়ে তাদের উচ্ছেদ করেছেন, নিজের হাতে তুলে নিয়েছেন আইন। বিষয়টি নিয়ে সরব হওয়া দক্ষিণ করিমগঞ্জের বিজেপি নেত্রী, ভারতীয় জনতা মহিলা মোর্চার সর্বভারতীয় সম্পাদিকা শিপ্রা গুণকে হত্যার হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে বিজেপি-র অভিযোগ। ওই মন্ত্রীকে মন্ত্রিসভা থেকে অপসারণের দাবিতে আজ কাছাড়ের জেলাশাসকের মাধ্যমে রাজ্যপাল জানকীবল্লভ পট্টনায়কের কাছে স্মারকলিপি পাঠিয়েছেন বিজেপি নেতারা।
বিজেপি নেত্রীকে হত্যার হুমকি নিয়ে কোনও মন্তব্য না করলেও বনাঞ্চল বেদখলের অভিযোগে সিদ্দেকের মন্ত্রিত্ব কাড়ার দাবি তুলেছে এআইইউডিএফ-ও। মন্ত্রী সিদ্দেক আহমেদ অবশ্য এই সব অভিযোগই ‘ভুয়ো ও ভিত্তিহীন’ বলে উড়িয়ে দেন। তাঁর বক্তব্য, কাউকে উচ্ছেদ করা হয়নি। বনাঞ্চলে তাঁর কোনও জমিও নেই। তাই সেখানে রবার বাগান করারও পরিকল্পনা নেই। তবে খোঁজ নিয়ে দেখেছেন, বনাঞ্চল সংলগ্ন এক খণ্ড জমি লিজ নিয়ে আসলবাঁশি গ্রামবিকাশ কেন্দ্র নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী রবারের চারা লাগিয়েছে। সিদ্দেকের প্রশ্ন, এতে দোষের কী আছে”?
বিজেপির রাজ্য কমিটির উপ-সভাপতি পরিমল শুক্লবৈদ্যের দাবি, ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার নামে জমি হাতিয়ে নিচ্ছেন মন্ত্রী সিদ্দেক আহমদ। নিজস্ব লোকজনকে দিয়ে তিনিই এই সংস্থাটি গড়েছেন।
যে জমি নিয়ে ক’দিন ধরে রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে বিতর্ক চলছে, তার মালিকানা নিয়ে সরকারি দফতরগুলির মধ্যেও মতবিরোধ দেখা দিয়েছে। বনবিভাগের দাবি, ওই জমি সংরক্ষিত বনাঞ্চল। অন্য দিকে রাজস্ব বিভাগ বলছে, বনাঞ্চল নয়, সংলগ্ন জমিটি তাদের। এই পরিস্থিতিতে করিমগঞ্জের জেলাশাসক এ বিষয়ে ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। মহকুমাশাসক শান্তিকুমার সিংহকে এই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি কাল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। বিজেপি এবং এআইইউডিএফ-এর বক্তব্য, সিদ্দেক আহমদকে মন্ত্রিত্বে রেখে নিরপেক্ষ তদন্ত হতে পারে না। প্রথমেই তাঁকে মন্ত্রিসভা থেকে সরাতে হবে। |