|
|
|
|
লক্ষ্য ২৫ হাজার কোটি ভর্তুকি কমানো |
জ্বালানির দাম বাড়ানোর ইঙ্গিত দিলেন অর্থমন্ত্রী |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
ভর্তুকির বোঝা কমাতে ফের ডিজেল, রান্নার গ্যাস ও কেরোসিনের দাম বাড়ানোর ইঙ্গিত দিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়। ডিজেলের ক্ষেত্রে সরাসরি দাম বাড়ানোর বদলে পেট্রোলের মতোই এর দাম বিনিয়ন্ত্রণ করে দেওয়ার কথাও ভাবছে
অর্থ মন্ত্রক।
বাজেট পেশের পর আজ বণিকসভাগুলির সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন প্রণববাবু। ফিকি, সিআইআই ও অ্যাসোচ্যাম-কর্তারা সেখানে স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন তোলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে যেখানে অপরিশোধিত তেলের দাম ব্যারেল-প্রতি ১২০ ডলারের উপরে ঘোরাফেরা করছে, সেখানে সরকারের পক্ষে কত দিন ভর্তুকি দিয়ে চলা সম্ভব হবে?
বাজেটে ভর্তুকির বহর কমানো ও রাজকোষের ঘাটতিতে শক্ত হাতে রাশ টানার কথা ঘোষণা করেছেন অর্থমন্ত্রী। এবং সেই সূত্রে পেট্রোপণ্যে ভর্তুকি এক ধাক্কায় ২৫ হাজার কোটি টাকা কমানোর কথাও ঘোষণা করেছেন তিনি। কিন্তু কী ভাবে তা কমানো হবে, তার রূপরেখা দেওয়া হয়নি।
আজ বণিকসভাগুলির প্রশ্নের মুখে প্রণব জানান, সরকার খুব শীঘ্রই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে। কিন্তু পেট্রোপণ্যের দাম বাড়ানো বা ডিজেলের দাম নিয়ন্ত্রণমুক্ত করে দেওয়ার আগে রাজনৈতিক দল ও অংশীদারদের সঙ্গে ঐকমত্যে পৌঁছনোটা যে জরুরি, সেটাও উল্লেখ করতে ভোলেননি তিনি। প্রণব বলেন, “আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম যথেষ্ট না কমলে একটা দেশের পক্ষে ১০ থেকে ১২ কোটি টন অপরিশোধিত তেল আমদানি করে চলা সম্ভব কি না, সেটা গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। সবাই মিলে এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে হবে।”
বিকল্প জ্বালানির কথা ভাবা যেতেই পারে। কিন্তু সেটাও দীর্ঘমেয়াদি প্রশ্ন। আপাতত ভর্তুকির বোঝা কমাতে ডিজেলের দাম নিয়ন্ত্রণমুক্ত করে দেওয়া ছাড়া উপায় নেই বলেই মনে করছে অর্থ মন্ত্রক।
অর্থ মন্ত্রকের কর্তাদের বক্তব্য, চলতি অর্থবর্ষের সংশোধিত হিসেব অনুযায়ী ভর্তুকির পরিমাণ মোট দেশীয় উৎপাদনের ২.৪%-এ গিয়ে ঠেকেছে। আগামী অর্থবর্ষে
তা ২%-এ কমিয়ে আনার কথা বলা হয়েছে। ভবিষ্যতে ভর্তুকির পরিমাণ ১.৭%-এ নামিয়ে আনার কথাও বলা হয়েছে। বাজেটে ডিজেলের দাম বাড়ানোর কথা বলা না হলেও, হিসেবনিকেশ থেকেই স্পষ্ট, ডিজেলের দাম বাড়ানো বা তা নিয়ন্ত্রণমুক্ত করে দেওয়ার পথে হাঁটতে চাইছে সরকার। প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ নিজেও বলেছেন, “পেট্রোপণ্যের দামে বদল না আনলে ভর্তুকির বোঝা কমানোর কোনও উপায় নেই।” অর্থ মন্ত্রকের বক্তব্য, শুধু আয় বাড়িয়ে রাজকোষ ঘাটতি ৫.৯% থেকে ৫.১%-এ নামিয়ে আনা যাবে না। তার জন্য ব্যয় বা ভর্তুকির বহরও কমাতে হবে। বণিকসভা ও শিল্পমহলের সামনে প্রণব আজ স্বীকার করে নিয়েছেন, আগামী বছরের বাজেট তৈরি হবে ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে। তাই তাঁর সামনে রাজকোষের ঘাটতিতে লাগাম পড়ানোর শেষ সুযোগ ছিল এই বাজেটেই। বণিকসভাগুলির তরফে দাবি তোলা হয়েছে, পণ্য-পরিষেবা কর ও অন্যান্য ক্ষেত্রে আর্থিক সংস্কারে দ্রুত পদক্ষেপ করুক কেন্দ্র। |
|
|
|
|
|