মূল শহর এলাকায় ট্রাফিক ব্যবস্থার উন্নতি হলেও অবহেলায় থেকে গিয়েছে আসানসোল ও দুর্গাপুর মহকুমার অন্তর্গত ২ নম্বর জাতীয় সড়কের বিস্তীর্ণ এলাকা। অথচ গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কে দিন-দিন বাড়ছে দুর্ঘটনার সংখ্যা। এই রাস্তাটিতেও উন্নত ট্রাফিক পরিকাঠামোর দাবি তুলেছেন বাসিন্দারা। প্রয়োজনীয়তার কথা মেনে নিয়েছেন আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কর্তৃপক্ষ। উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষও।
আসানসোল ও দুর্গাপুর, এই দুই শহরের উপর দিয়ে গিয়েছে ২ নম্বর জাতীয় সড়ক। দৈর্ঘ্যে তা প্রায় ৬০ কিলোমিটার। ১ সেপ্টেম্বর আসানসোল-দুগার্পুর পুলিশ কমিশনারেট গঠিত হওয়ার পরে এই দুই শিল্প শহরের ট্রাফিক ব্যবস্থার আধুনিকীকরণে উদ্যোগী হয়েছে পুলিশ। স্বয়ংক্রিয় সিগন্যালের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু অবহেলিত রয়ে গিয়েছে ২ নম্বর জাতীয় সড়ক। আসানসোল ও দুর্গাপুর, দুই শহরের মাঝ বরাবর গিয়েছে এই রাস্তা। এই সড়কের দু’পাশে রয়েছে বহু গ্রাম, বসতি ও ছোট শহর। সে ক্ষেত্রে এই রাস্তাটিও এলাকার বাসিন্দাদের কাছে অপরিহার্য। প্রতি দিন কয়েক হাজার ছোট-বড় যান এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করে। আশপাশের বাসিন্দারাও যাতায়াতের জন্য এই রাস্তাই ব্যবহার করেন। বাসিন্দাদের দাবি, এত গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় উপযুক্ত সিগন্যালিং ব্যবস্থা নেই। |
বাসিন্দাদের দাবি কতটা যুক্তিযুক্ত, তা জাতীয় সড়কে গেলেই বোঝা যায়। মঙ্গলপুর থেকে বরাকরের ডুবুরডিহি চেকপোস্ট পর্যন্ত কোথাও স্বয়ংক্রিয় ট্রাফিক সিগন্যাল ব্যবস্থা নেই। শুধু মাত্র রানিগঞ্জের পঞ্জাবি মোড় এলাকায় স্বয়ংক্রিয় সিগন্যাল রয়েছে। রানিসায়র, কালিপাহাড়ি, নিঘা, সেনর্যালে মোড়, কাল্লা মোড়, চৌরঙ্গি-সহ আরও কয়েকটি জনবহুল মোড়ে সিগন্যাল পোস্ট আছে। কিন্তু স্বয়ংক্রিয় আলো জ্বলে না। বাসিন্দারা জানান, এই সব জায়গায় দুর্ঘটনার প্রবণতা বাড়ছে। স্বয়ংক্রিয় সিগন্যাল ও ট্রাফিক পুলিশ না থাকায় দ্রুত গতিতে ছুটে আসা যানবাহন ইচ্ছে মতো পারাপার করে। আর তাতেই বিপত্তি বাধে। সব থকে বেশি সমস্যায় পড়েন পথচারী ও ছোট যানের চালকেরা।
জাতীয় সড়কে এই সমস্যার কথা মেনে নিয়েছেন আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের এডিসিপি (ট্রাফিক) ভাস্কর মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “বিভিন্ন মহল থেকে আমার কাছে জাতীয় সড়কের এই সমস্যার কথা জানানো হয়েছে। আমরা জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা শুরু করেছি।” ভাস্করবাবু জানান, দুর্গাপুর মহকুমা এলাকায় জাতীয় সড়কের বিভিন্ন মোড় সংলগ্ন অঞ্চলে স্বয়ংক্রিয় ট্রাফিক সিগন্যাল লাগানো হচ্ছে। ট্রাফিক পুলিশও দেওয়া হচ্ছে। রানিগঞ্জ থেকে বরাকর পর্যন্ত জনবহুল মোড়গুলিতে স্বয়ংক্রিয় ট্রাফিক সিগন্যাল ও পুলিশকর্মীর ব্যবস্থা হবে। তিনি আরও জানান, কোনও বেসরকারি বাণিজ্যিক সংস্থার কাছ থেকে আর্থিক সহায়তা নিয়ে পুলিশ ও জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের যৌথ উদ্যোগে আধুনিক পরিকাঠামোর ব্যবস্থা করা যায় কি না, তা-ও দেখা হচ্ছে। এ বিষয়ে জাতীয় সড়কের চিফ জেনারেল ম্যানেজার (পূর্বাঞ্চল) অজয় অহলুওয়ালিয়া জানান, পুলিশের সঙ্গে তাঁদের আলোচনা হয়েছে। সংস্থার প্রোজেক্ট ডিরেক্টরকে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। |