প্রসূতির মৃত্যু ঘিরে বিভ্রান্তি বাড়াল স্বাস্থ্য দফতরই
ষাদেবীকে নিয়ে তাঁর পরিবারের লোকেরা কোন হাসপাতালে গিয়েছিলেন, শনিবার ধোঁয়াশা ছিল তা ঘিরে। রবিবার বিভ্রান্তি তৈরি হল ঊষাদেবীর ‘মৃতদেহ’ পুলিশ রাস্তা থেকে তুলে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিল, নাকি বাড়ির লোকই তাঁকে ‘মৃত’ অবস্থায় হাসপাতালে এনেছিলেন, সেই প্রশ্নে। আর এই দুই বিভ্রান্তিই তৈরি করলেন স্বাস্থ্য-কর্তারা নিজেরাই।
ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মহিলা বিভাগ থেকে শিশুচুরি এবং চিত্তরঞ্জন সেবাসদন থেকে প্রসূতি ফেরানোর দুই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এ দিন দুপুরে সাংবাদিক বৈঠক ডেকেছিলেন স্বাস্থ্য-কর্তারা। দু’টি ক্ষেত্রেই পূর্ণাঙ্গ তদন্ত-রিপোর্ট এখনও তৈরি হয়নি। অথচ তার আগেই কর্তারা এ দিন দাবি করলেন, কোনও হাসপাতালই ঊষাদেবীকে ফেরত পাঠায়নি, তাঁকে ‘মৃত’ অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল। অর্থাৎ পরোক্ষে প্রসূতির মৃত্যুর দায় ঝেড়ে ফেলে তাঁদের ইঙ্গিত, বাড়ির লোকেরাই সময়মতো তাঁর চিকিৎসা করাননি।
তা হলে কে ওঁকে হাসপাতালে আনলেন?
ঊষাদেবীর স্বামী টিটু তাঁতি গোড়া থেকে দাবি করছেন, তিনি তাঁর স্ত্রীকে চিত্তরঞ্জন সেবাসদনে নিয়ে গিয়েছিলেন। সেখানকার ডাক্তারেরা তাঁকে ভর্তি না-করে ফিরিয়ে দেন বলে টিটুবাবুর অভিযোগ। যা উড়িয়ে দিয়ে রাজ্যের স্বাস্থ্য-অধিকর্তা বিশ্বরঞ্জন শতপথী এ দিন বলেন, “ঊষাদেবীকে নয়, হাসপাতালে আনা হয়েছিল তাঁর মৃতদেহ। চিকিৎসকেরা এ কথা বাড়ির লোককে জানানোর পরেই তাঁরা মৃতদেহ নিয়ে চলে যান। সদ্য জন্মানো শিশু দু’টিকে তখন আনা হয়নি। পরে তাদের নিয়ে আসা হলে দ্রুত ভর্তির ব্যবস্থা হয়।”
কিন্তু কোন হাসপাতালে ঊষাদেবীকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল?
এখানেও প্রথমে দু’রকম বয়ান দিয়েছেন কর্তারা। স্বাস্থ্য-অধিকর্তার বয়ান অনুযায়ী, উষাদেবীর দেহ আনা হয়েছিল চিত্তরঞ্জন সেবাসদনে। কারণ, ঊষাদেবীর সন্তানদের পরে সেখানেই ভর্তি করা হয়। এ দিকে চিত্তরঞ্জনের সুপার আশিস মুখোপাধ্যায় স্বাস্থ্য-অধিকর্তার বক্তব্যের পরেই জানিয়ে দেন, তাঁর হাসপাতালে ঊষাদেবীকে নিয়ে যাওয়া হয়নি।
এ হেন পরস্পর-বিরোধী দুই বয়ানে বিভ্রান্তি এককাঠি বেড়ে যায়।
পরিস্থিতি সামলাতে ফের স্বাস্থ্য দফতরের তরফে বয়ান দেন স্বয়ং সচিব সঞ্জয় মিত্র। কিন্তু তাতে ব্যাপারটা আরও ঘোরালো হয়ে পড়ে। কী রকম?
ঊষাদেবীকে কোন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, তার জবাব দিতে গিয়ে সঞ্জয়বাবু প্রথমে বলেন, “ওঁকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল এসএসকেএম হাসপাতালে।” কিছুক্ষণ পরে এক প্রশ্নের উত্তরে সঞ্জয়বাবুই আবার জানান, বাড়ির লোক নয়, ময়দান থানার পুলিশ রাস্তা থেকে ঊষাদেবীর মৃতদেহ তুলে এসএসকেএমে নিয়ে যায়। পরে সেখানেই তাঁর ময়না-তদন্তের ব্যবস্থা হয়।
স্বাস্থ্য-অধিকর্তার সঙ্গে তাঁর বক্তব্যের এতটা অমিল কেন?
সচিবের জবাব, “কোনও অমিল নেই। উনিও এটাই বলতে চেয়েছিলেন।” কিন্তু তদন্ত-রিপোর্ট পাওয়ার আগেই ওঁরা কী ভাবে এত জোর দিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে দায়মুক্ত করছেন?
স্বাস্থ্য-অধিকর্তার ব্যাখ্যা, “সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলে যা তথ্য পাওয়া যাচ্ছে, তার ভিত্তিতেই আমরা বলছি।”
কী করে মৃত্যু হল ঊষাদেবীর?
স্বাস্থ্য-অধিকর্তা এ দিন জানান, ‘‘ময়না-তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে জানা গিয়েছে, ওঁর দু’টি প্ল্যাসেন্টাই জরায়ুতে থেকে গিয়েছিল। পাশাপাশি প্রসবের পরে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়েছিল। সম্ভবত এর জেরেই মৃত্যু।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.