শিল্প নিয়ে আশা, সূচক ফের ১৬ হাজারের কাছে
পরিকাঠামোয় উৎপাদন বৃদ্ধি প্রায় ৭ শতাংশ
ন্নত দুনিয়ায় মন্দার হাতছানি সত্ত্বেও ঘুরে দাঁড়াল ভারতে পরিকাঠামো শিল্পে উৎপাদন বৃদ্ধির হার।
অক্টোবরে ০.৩ শতাংশে নেমে তলানিতে এসে ঠেকার পর নভেম্বরে আটটি পরিকাঠামো শিল্পে উৎপাদন বেড়েছে ৬.৮ শতাংশ। এবং সোমবার এই সরকারি পরিসংখ্যানই সার্বিক শিল্পোৎপাদন বাড়ার সম্ভাবনা উজ্জ্বল করেছে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা। তার কারণ, শিল্পোৎপাদনের সার্বিক সূচকে পরিকাঠামোর গুরুত্ব ৩৮ শতাংশ। প্রসঙ্গত, অক্টোবরে শুধু উৎপাদন বৃদ্ধির হার নয়, কমেছিল সার্বিক শিল্পোৎপাদন। শিল্প সঙ্কোচন হয়েছিল ৫.১ শতাংশ হারে। এ দিকে, অন্ধকারের মধ্যেও আর একটি রুপোলি রেখা, সেনসেক্স ২৩২ পয়েন্ট বেড়ে ফের ১৬ হাজারের দোরগোড়ায় পৌঁছে যাওয়া। এ দিকে সম্ভাব্য বিশ্ব মন্দার মোকাবিলায় সঙ্কট প্রতিরোধ গোষ্ঠী বা ‘ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট গ্রুপ’ গড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক। এই মন্ত্রকের আওতায় অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত দফতরের সচিব আর গোপালনের নেতৃত্বে এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দেশে আর্থিক সঙ্কট এড়াতে আগাম হুঁশিয়ারি দেওয়া হবে এই গোষ্ঠীর অন্যতম লক্ষ্য।
২০১০ সালের নভেম্বরের ৩.৭ শতাংশের তুলনাতেও বেশ খানিকটা বেড়েছে পরিকাঠামো শিল্পে বৃদ্ধির হার। তবে এত দিন ঝিমিয়ে থাকার কারণে এপ্রিল থেকে নভেম্বরের হার দাঁড়িয়েছে ৪.৬ শতাংশ। গত বছরের হার ৫.৬ শতাংশ। নভেম্বরে অশোধিত তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস ছাড়া বাদবাকি ৮টি শিল্পেই উৎপাদন বৃদ্ধির হার যথেষ্ট ভাল বলে দাবি সরকারি সূত্রের। তার মধ্যে সিমেন্ট শিল্পেই বৃদ্ধির হার সবচেয়ে বেশি, ১৬.৬ শতাংশ। গত অর্থবর্ষে এই শিল্পে উৎপাদন কমেছিল ৪.৩ শতাংশ। বিদ্যুৎ ও ইস্পাত উৎপাদন বেড়েছে যথক্রমে ১৪.১ এবং ৫.১ শতাংশ। কয়লা ও তেল শোধন ক্ষেত্রে এই বৃদ্ধি ৪.৯ শতাংশ ও ১১.২ শতাংশ।
নভেম্বরে পরিকাঠামো ক্ষেত্রের সাফল্য প্রসঙ্গে ক্রিসিলের মুখ্য অর্থনীতিবিদ ডি কে জোষী বলেন, “শিল্প-বৃদ্ধির উপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে এই হার।
এ দিকে, পড়তি বাজারে শেয়ার কেনার জেরেই সোমবারও বেশ কিছুটা তেজী হয়ে উঠল শেয়ার বাজার। তা ছাড়া চলতি মাসের জন্য আগামী বৃহস্পিতবার আগাম লেনদেনের শেয়ার হস্তান্তর ও দাম মেটানোর দিন। যে-সব লগ্নিকারী হাতে শেয়ার না-থাকা সত্ত্বেও তা আগাম বিক্রি করে রেখেছেন, তাঁরাও গত কয়েক দিন ধরে পড়তি বাজারে শেয়ার কিনতে শুরু করেছেন। এর জেরেও এই দিন সূচক বেড়েছে বলে মনে করছেন বশেষজ্ঞরা। এই নিয়ে নিট হিসাবে গত ছ’দিনের লেনদেনে সেনসেক্সের বৃদ্ধি ৪৪১ পয়েন্ট। তবে শেয়ার বাজার সত্যিই ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে কি না, তা নিয়ে অবশ্য দ্বিমত রয়েছে বাজার বিশেষজ্ঞদের মধ্যে। কেউ কেউ সূচকের এই বৃদ্ধিকে শেয়ার বাজারের হাল ফেরা হিসাবেই দেখতে শুরু করেছেন। তবে অনেকেই কিন্ত এখনই তা মানতে রাজি নন।
অ্যাসোসিয়েশন অফ না্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জ মেম্বার্স অফ ইন্ডিয়া (অ্যানমি)-র অলটারনেট প্রেসিডেন্ট এবং নাকামিচি সিকিউরিটিজের ডিরেক্টর নবরতন টেব্রিওয়ালের মতো বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, “শেয়ার বাজার ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে।” তাই তাঁদের পরামর্শ, ভাল শেয়ারে বিনিয়োগ করার এটাই উপযুক্ত সময়। কারণ, বাজার অনেকটা পড়ে যাওয়ার পর এখন শেয়ারের দামে আর কৃত্রিমতা আছে বলে তাঁরা মনে করছেন না। বহু ভাল সংস্থার শেয়ার তুলনামূলক ভাবে অনেক কম দামে পাওয়া যাচ্ছে। টেব্রিওয়াল মনে করেন, “এখন ওই সব শেয়ারে বিনিয়োগ করলে ভাল মুনাফার মুখ দেখার সুযোগ রয়েছে।”
কেন বাজার ঘুরে দাঁড়াল বলে মনে হচ্ছে?
টেব্রিওয়াল বলেন, “বাজার তার চূড়ান্ত খারাপ সময়ের মধ্যে দাঁড়িয়ে ছিল। এর থেকে বেশি খারাপ হওয়ার সম্ভাবনা কম বলেই আমি মনে করছি। এই সময়েই ভাল শেয়ারে দীর্ঘ মেয়াদে লগ্নি করে মুনাফা করার সুযোগ রয়েছে।”
টেব্রিওয়ালের মতো বাজার বিশেষজ্ঞদের ধারণা, খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি কমার হাত ধরে এ বার সাধারণ ভাবে মূল্যবৃদ্ধির হার কিছুটা কমবে। আর সেটা হলে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সুদের হার কমানোর পথে হাঁটতে শুরু করবে। সে ক্ষেত্রে বদলাতে শুরু করবে শিল্পোৎপাদনের হার-সহ আর্থিক ক্ষেত্রের সার্বিক চিত্র। টেব্রিওয়াল বলেন, “তখন কিন্তু শেয়ারের দাম বাড়তে থাকবে হু হু করে।” অবশ্য বাজার আরও কিছুটা পড়ার সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দেননি টেব্রিওয়াল। তবে তিনি মনে করেন, “প্রতিটি পতনের পরেই দ্বিগুণ গতিতে বাজার উঠবে বলে আমার বিশ্বাস।”
কিন্তু সূচকের এই বৃদ্ধি দেখে বাজার ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে বলে মানতে নারাজ বিশেষজ্ঞ অজিত দে। অজিতবাবুর মতে, “শিল্প সংস্থাগুলি যতদিন ভাল অবস্থায় না-আসবে, তত দিন শেয়ার বাজারের হাল ফেরা কঠিন।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.