শনিবার সন্ধ্যা ৭টা ৩৫ মিনিট। আকাশ থেকে হারিয়ে গেল পূর্ণিমার চাঁদ। ঘণ্টা খানেক পর এক টুকরো উঁকি দিল সে। আর ঝলমলে রূপ নিয়ে ফিরে এল রাত ৯টা ৪৮ মিনিটে। সৌজন্যে পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ। যার অর্থ প্রায় এক ঘণ্টা পৃথিবীর ছায়ায় পুরোপুরি ঢাকা পড়েছিল চাঁদ।
কেন্দ্রীয় সরকারের জ্যোর্তিবিজ্ঞান সংস্থা, পজিশনাল অ্যাস্ট্রোনমি সেন্টার জানাচ্ছে, এ দিন ছিল বছরের দ্বিতীয় পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ। কলকাতার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে খোলা চোখেই দেখা গিয়েছে এই মহাজাগতিক দৃশ্য। এর আগে গত ১৫ জুন সাম্প্রতিক সময়ের দীর্ঘতম পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু আকাশ মেঘে ঢাকা থাকার ফলে সেই মহাজাগতিক দৃশ্য দেখার সুযোগ পাননি অনেকেই। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, শনিবারের পর ২০১৮ সালের ২৭ জুলাই ভারত থেকে আবার পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ দেখা যাবে। |
চন্দ্রগ্রহণ। শনিবার দেশকল্যাণ চৌধুরীর তোলা চবি। |
পজিশনাল অ্যাস্ট্রোনমি সেন্টারের অধিকর্তা সঞ্জীব সেন জানান, শনিবার সন্ধ্যা ৬টা ১৫ মিনিট ২৪ সেকেন্ড থেকে পৃথিবীর ছায়া ঢাকতে শুরু করে চাঁদকে। সন্ধ্যা ৭টা ৩৫ মিনিট ৪২ সেকেন্ডে পৃথিবীর ছায়ায় পুরোপুরি ঢাকা পড়ে যায় চাঁদ। টানা ৫২ মিনিট পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ চলে। রাত ৮টা ২৮ মিনিটে শেষ হয় পূর্ণগ্রাস। এর পর রাত ৯টা ৪৮ মিনিট ১২ সেকেন্ডে গ্রহণ শেষে আকাশে ফিরে আসে ঝলমলে চাঁদ।
জুন মাসে পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ না দেখতে পাওয়ায় হতাশ হয়েছিলেন সাধারণ মানুষ। কিন্তু দিন কয়েক আগে আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছিল, শনিবার সন্ধ্যায় আকাশে ঘন মেঘ থাকবে না। সেই তথ্যের উপর ভিত্তি করে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা জানিয়েছিলেন, বছরের শেষে পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ দেখতে না পাওয়ার আশঙ্কা নেই। সন্ধ্যার আকাশে মেঘ না থাকায় কলকাতার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সাধারণ মানুষ চন্দ্রগ্রহণ লক্ষ্য করেছেন।
শনিবার সন্ধ্যায় পূর্ণগ্রাসের সময় চাঁদের আবছা লালচে আভা দেখা গিয়েছে। এর কারণ কী?
সঞ্জীববাবু জানান, পূর্ণগ্রাসের সময় পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের ভিতর দিয়ে সূর্যের আলোর লাল রশ্মি প্রতিসৃত হয়ে চাঁদের গায়ে পড়ে। এই জন্য চাঁদের লালচে ছায়া দেখতে পাওয়া যায়। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, বেশি সময় ধরে পূর্ণগ্রাস গ্রহণ না চললে চাঁদ পুরো কালো হয় না। কারণ, অল্প সময়ের পূর্ণগ্রাসে চাঁদের মধ্যভাগে পৃথিবীর ছায়া পড়ে না। এ দিন পূর্ণগ্রাসের স্থায়িত্ব বেশি ক্ষণ না হওয়ার ফলে চাঁদের লালচে আভা দেখা গিয়েছে। |