শিক্ষক নিয়মিত হাজির না থাকায় ক্লাস ঠিকমতো হচ্ছে না এবং তার প্রভাব পড়ছে পরীক্ষার ফলেএমনই অভিযোগ তুলে বুধবার কলেজের টিচার্স রুমে তালা ঝুলিয়ে দিলেন ছাত্রছাত্রীদের একাংশ। ঘটনাটি হুড়ার লালপুর মহাত্মা গাঁধী কলেজের। তার জেরে এ দিন কলেজের পঠনপাঠনও ব্যাহত হয়।
ঘটনার সূত্রপাত এ দিন বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ। সকালে নির্ধারিত সময়ে কলেজে ক্লাস শুরু হওয়ার পরে দেখা যায়, একাধিক ক্লাসের ছাত্রছাত্রীরা ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কলেজের তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি) পরিচালিত ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক রাহুল মল্লিক বলেন, “ওই সব ছাত্রছাত্রীর সঙ্গে কথা বলে জানতে পারি, তাঁদের যে যে বিষয়ের ক্লাস রয়েছে, সেগুলির শিক্ষকেরা নেই। তাই ক্লাস হচ্ছে না।” এর পরে বিভিন্ন বিভাগের পড়ুয়ারা টিচার্স রুমে গিয়ে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, অধ্যক্ষও নেই। কাজে বাইরে গিয়েছেন। তাঁর পরিবর্তে যিনি দায়িত্বে রয়েছেন, অনুপস্থিত সেই শিক্ষকও। |
কলেজের তৃতীয় বর্ষের কলা বিভাগের ছাত্র রতন মাহাতো, মহম্মদ নারুম, মহম্মদ ইরফান বা ইংরেজি অনার্সের প্রশান্ত দাস, ইতিহাসের সৌম্যদীপ মাহাতোদের ক্ষোভ, “আজ নয়, এই অবস্থা বেশ কিছুদিন ধরেই চলছে। কলেজ কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। এ রকম অবস্থা চলছে বলে পরীক্ষার ফলে প্রভাব পড়ছে। পার্ট-১ পরীক্ষার ফল একেবারেই ভাল হয়নি। তাই আমরা বাধ্য হয়ে এ দিন টিচার্স রুমে তালা ঝুলিয়েছি।” এ দিন কলেজে গিয়ে দেখা যায়, ছাত্রছাত্রীদের জটলা। তালাবন্ধ টিচার্স রুমের সামনে টিএমসিপি-র পতাকা আটকানো। স্লোগান চলছে, ‘শিক্ষকদের অনিয়মিত আসা চলবে না’। রাহুল বলেন, “আমরা এ ধরনের আন্দোলনের বিরুদ্ধে। কলেজের পঠনপাঠন যাতে সুষ্ঠু ভাবে হয়, সে দিকে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করতেই ছাত্রেরা শুধু টিচার্স রুমেই চালা ঝুলিয়েছেন।”
উপস্থিত শিক্ষক বিনোবা পাত্র, সোনিমা মুখোপাধ্যায়রা বলেন, “আজ অধ্যক্ষ কলেজের বাইরে রয়েছেন। আমরা এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করব না।” তালা ঝোলানোর খবর পেয়ে কলেজে আসেন পরিচালন সমিতির সভাপতি নরেন চক্রবর্তী। তিনি বলেন, “এ দিন অধ্যক্ষের পরিবর্তে যে শিক্ষক দায়িত্বে রয়েছেন, তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলে শুনেছি। এ দিন বেশ কয়েক জন শিক্ষক-শিক্ষিকা অনুপস্থিত। তার জেরেই পড়াশোনা ব্যাহত হয়েছে। ক্ষোভে পড়ুয়ারা তালা ঝুলিয়েছেন।” সমস্যার সমাধানে সকলকে নিয়ে শীঘ্রই বৈঠকে বসবেন বলে নরেনবাবু জানান। কলেজের অধ্যক্ষ রঞ্জিত রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “আমি এ দিন বাইরে ছিলাম। ফিরে ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলব।” তবে বেশ কিছু দিন ধরেই এ ভাবে ক্লাস হচ্ছে না বলে পড়ুয়াদের যে অভিযোগ, তা অধ্যক্ষ মানতে চাননি। |