মেমারির স্কুলে অভিযুক্ত তৃণমূল
মনোনয়ন তুলতে গিয়ে ‘আক্রান্ত’ সিপিএম
স্কুলের পরিচালন সমিতি নির্বাচনের মনোনয়ন তোলার শেষ দিনে সিপিএম নেতা-কর্মীদের মেরে তাড়ানো হল। এক জনকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়েছে। অভিযোগের তির তৃণমূলের একটি গোষ্ঠীর দিকে, যারা দলেরই অপর এক গোষ্ঠীর লোককে মনোনয়ন তুলতে দেয়নি বলে অভিযোগ।
বুধবার সকাল ১১টা নাগাদ মেমারির রসিকলাল স্মৃতি বিদ্যালয়ের কাছে ঘটনাটি ঘটে। সিপিএমের প্রাক্তন বিধায়ক সন্ধ্যা ভট্টাচার্য ও দলের মেমারি-১ মধ্য লোকাল সম্পাদক সনৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ৮-১০ জন অভিভাবক প্রার্থী স্কুলে যাচ্ছিলেন। তখনই কিছু লোকজন তাঁদের উপরে চড়াও হয়।
সন্ধ্যাদেবীর অভিযোগ, “স্কুলগেট থেকে প্রায় ২৫-৩০ ফুট দূরে তৃণমূলের লোকেরা আমাদের আটকে দেয়। বলতে থাকে, সিপিএমের লোকেদের স্কুলে ঢোকা হবে না। মনোনয়ন জমা দেওয়াও যাবে না। তার পরেই ওরা ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকে। আমার মত এক জন মহিলাকে কয়েক জন পুরুষ মিলে এমন করে প্রকাশ্যে মারতে পারে, স্বপ্নেও ভাবতে পারিনি।” পরে সন্ধ্যাদেবী মেমারি থানায় অভিযোগ দায়ের করলেও রাত পর্যন্ত পুলিশ কাউকে ধরেনি। মেমারি থানার ওসি সঞ্জীব ঘোষ বলেন, “যত দূর জানি, ঘটনাটি বড় নয়। সিপিএমের কারও চোট তেমন গুরুতর নয়। তদন্ত হবে।”
তখন চলছে বচসা। বুধবার তোলা নিজস্ব চিত্র।
তবে সিপিএমের অভিযোগ, তাদের সাত-আটজন কর্মী-সমর্থক আহত হয়েছেন। মাথায় চোট লাগায় অসিত বিশ্বাস নামে এক কর্মীকে মেমারি গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। সিপিএমের নেতা-কর্মীদের মার খাওয়ার দৃশ্য তুলতে গিয়ে এক স্থানীয় চিত্র সাংবাদিকও তৃণমূল সমর্থকদের হাতে নিগৃহীত হন বলে অভিযোগ। তাঁর ক্যামেরা থেকে চিপ খুলে দেওয়া হয়। যদিও তৃণমূল নেতারা গোটা বিষয়টিকে ‘সিপিএমের নাটক’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।
বস্তুত, মেমারির ওই স্কুলটিতে মনোনয়ন তোলা ও জমা দেওয়া নিয়ে প্রায় প্রতি দিনই গোলমালের খবর মিলেছে। মেমারির তৃণমূল পুরপ্রধান স্বপন বিষয়ীর লোকজন শুধু সিপিএম নয়, কংগ্রেস এমনকী নিজেদের দলের অন্য গোষ্ঠীর লোকজনদেরও বাধা দেন বলে অভিযোগ। কংগ্রেসের এআইসিসি সদস্য সেলিম মোল্লা অভিযোগ করেন, তাঁদের সমর্থকদের মনোনয়ন তুলতে দেওয়া হয়নি। অভিযোগ তৃণমূলের দিকে। আবার মেমারির তৃণমূল বিধায়ক আবুল হাসেম মণ্ডলের অনুগামীদেরও স্বপন বিষয়ীর লোকেরা বাধা দেন বলে অভিযোগ।
বিধায়কের কথায়, “সোমবার আমার লোকেরা ওই স্কুলে মনোনয়ন জমা দিতে গিয়েছিলেন। কিন্তু স্বপনবাবুর লোকেরা তাঁদের তাড়িয়ে দেন। আমি আমার লোকেদের বলি, ‘ওখান থেকে সরে আসুন।’ নইলে হয়তো মারপিট বাধত। নিজের দলের লোকের হাতে জখম হতেন দলেরই লোকেরা।” স্বপনবাবু অবশ্য দাবি করেন, “সমস্ত অভিযোগ মিথ্যা। কুৎসা রটিয়ে কিন্তু আমাদের পালের হাওয়া কেড়ে নেওয়া যাবে না। ওই স্কুলে ভোট হলেও আমরাই জিততাম। এখন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতছি।”
প্রথমে ১৬-০ ফলে মেমারি পুরসভা, পরে বিধানসভা নির্বাচনে ওই আসনটি সিপিএমের হাত থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে তৃণমূল। তার পরেও স্কুলভোটে গুন্ডামির অভিযোগ উঠছে কেন? স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর স্বপন ঘোষালের জবাব, “কোথায় গুন্ডামি দেখলেন? সিপিএমের লোকেদের তো পরে বলা হয়েছিল, ওঁরা ইচ্ছে করলে মনোনয়ন জমা দিতে পারেন। দরকারে আমি ওঁদের সঙ্গে যাব। কিন্তু ওঁরা যাননি। সেটা কি আমাদের দোষ? আসলে গোটাটাই সিপিএমের নাটক। ওদের সঙ্গে লোক নেই। তাই এত নাটক করতে হচ্ছে।”
অন্য দিকে, বর্ধমান টাউন স্কুলেও অভিভাবক সমিতির ৬টি আসনেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছে তৃণমূল। দলের প্রার্থী তথা নেতা নুরুন হাসান বলেন, “সিপিএম এই স্কুলে প্রার্থীই দিতে পারেনি।” ঘটনাটি স্বীকার করে সিপিএমের বর্ধমান শহর জোনাল সম্পাদক তাপস সরকার বলেন, “আমরা মনে করছি, আপাতত কোনও স্কুলে অভিভাবক সমিতির নির্বাচন অবাধে হওয়ার পরিস্থিতি নেই। শহরের কোনও স্কুলেই তাই আমরা প্রার্থী দিচ্ছি না।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.