আকাল অন্যত্রও
একসঙ্গে চার অ্যানাস্থেটিস্ট কাজ ছাড়লেন ডাফরিনে
যে কোনও শর্তে অ্যানাস্থেটিস্ট চাই।
তাই এমন চুক্তিতে তাঁদের নেওয়া হল যাতে আগাম নোটিস না-দিয়েই তাঁরা চাকরি ছেড়ে দিতে পারেন!
এত গুরুত্বপূর্ণ একটি পদ, যে পদে লোক না থাকলে অস্ত্রোপচারই বন্ধ হয়ে যাবে, মানুষের জীবন নিয়ে টানাটানি পড়বে, সেখানে এমন অদ্ভুত শর্তে লোক নেওয়ার খেসারত এ বার দিতে হচ্ছে স্বাস্থ্য দফতরকে।
হাসপাতালের সুপার দুপুরে খেতে যেতে দিচ্ছেন না, এই অভিযোগ জানিয়ে লেডি ডাফরিন হাসপাতালে অ্যানাস্থেশিয়ার চার জন সিনিয়র রেসিডেন্ট আচমকা এক সঙ্গে একই দিনে চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন। ফলে হাসপাতালের সার্জারি বিভাগে অস্ত্রোপচার বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
বিভিন্ন বিভাগেই সিনিয়র রেসিডেন্ট নিয়োগ করেছে স্বাস্থ্য দফতর। চুক্তির ভিত্তিতে এক বছরের জন্য এঁদের নিয়োগ করা হয়। কিন্তু যে কোনও মুহূর্তে আগাম না-জানিয়ে সরকার এঁদের ছাড়িয়ে দিতে পারেন বা এঁরাও চাকরি ছাড়তে পারেন। এখন প্রশ্ন উঠছে, অন্যান্য বিভাগের সঙ্গে অ্যানাস্থেশিয়াকে এক করা উচিত কি না, তা নিয়ে। কারণ, অ্যানাস্থেটিস্টরা আচমকা চাকরি ছেড়ে দিলে মানুষের জীবন-মরণ সমস্যা হতে পারে।
কেন তা হলে এত গুরুত্বপূর্ণ পদে চিকিৎসক নিয়োগের ব্যাপারে এত উদাসীন স্বাস্থ্য দফতর? স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিকর্তা সুশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায়ের জবাব, “রাজ্য জুড়ে অ্যানাস্থেটিস্টদের মারাত্মক আকাল। যে কোনও সময় তাঁরা চাকরি ছাড়তে পারেন এমন চুক্তিতেই রাজি হতে হচ্ছে, না হলে এই ক’জনকেও পাব না।” কিন্তু কেন এই আকাল? স্বাস্থ্যকর্তারা জানিয়েছেন, মেডিক্যালে স্নাতকোত্তরে অ্যানাস্থেশিয়ায় সার্ভিস ডাক্তারদের জন্য মাত্র ২-৩টি আসন রয়েছে। ফলে প্রতি বছর নামমাত্র অ্যানাস্থেটিস্ট পাশ করে বার হন।
গত কয়েক মাস ধরেই লেডি ডাফরিন হাসপাতাল অ্যানাস্থেটিস্ট-সঙ্কটে ভুগছে। মাত্র ৪ জন অ্যানাস্থেটিস্ট নিয়ে প্রতিদিন সিজার, শিশুদের অস্ত্রোপচার ও সাধারণ সার্জারি সামলানো দায় হয়ে উঠেছিল। এই হাসপাতালকে মেডিক্যাল কলেজের সহযোগী হাসপাতাল ঘোষণা করার পরে অবস্থা কিছুটা সামলাতে মেডিক্যালের অ্যানাস্থেশিয়ার চার জন সিনিয়র রেসিডেন্টকে ডাফরিনের সার্জারি সামলাতে পাঠানো হয়। তার পরেই এই বিপত্তি। ইস্তফা দেওয়া এক চিকিৎসকের কথায়, “বেশ কয়েকটা অস্ত্রোপচার করার পরে দুপুরবেলা যখন খেতে যাওয়ার জন্য ১ ঘণ্টার ছুটি চাইতাম তখন সুপার বলতেন, খাওয়ার জন্য ছুটি নিলে বিকেল পাঁচটার পর অতিরিক্ত এক ঘণ্টা থাকতে হবে। এই বাড়াবাড়ি সহ্য হয়নি। স্বাস্থ্য দফতর প্রয়োজন অনুযায়ী অ্যানাস্থেটিস্ট দেয় না কেন?”
ডাফরিনের সুপার তনিমা মণ্ডল এই অভিযোগ শুনে বলেছেন, “অ্যানাস্থেটিস্টদের ডিউটি আওয়ার্স ঠিক না রাখা হলে পরে স্বাস্থ্য দফতর বলবে, সুপার কড়া নন বলে চিকিৎসকেরা কাজ করেন না। আর কড়া হলে চিকিৎসকেরা ইচ্ছেমতো চাকরি ছাড়বেন!”
এ দিকে, অ্যানাস্থেটিস্টের অভাবে ত্রাহি ত্রাহি অন্যান্য হাসপাতালেও। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে অ্যানাস্থেটিস্টের ৪৪টি পদের মধ্যে ২৬টিই ফাঁকা। এনআরএসে ২৬টি খালি। আরজিকর মেডিক্যাল কলেজেও অ্যানাস্থেটিস্টদের ১০টি পদ খালি। সর্বত্র কাজ চালাতে নাভিশ্বাস উঠছে কর্তৃপক্ষের।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.