অন্য গোষ্ঠীর প্রতি সন্দেহ তৃণমূল বিধায়কের |
হলদিয়ায় শ্রমিক কার্যালয়ে আগুন |
নিজস্ব সংবাদদাতা • হলদিয়া |
শিল্পশহর হলদিয়ায় রাতের অন্ধকারে ফের পুড়ল তৃণমূল প্রভাবিত শ্রমিক সংগঠনের কার্যালয়। আগুন ‘লাগানো হয়েছে’ এবং এর পিছনে দলেরই একাংশের মদত থাকতে পারে বলে ‘ইঙ্গিত’ করেছেন হলদিয়ার তৃণমূল বিধায়ক শিউলি সাহা স্বয়ং। হলদিয়া শিল্পতালুকে তৃণমূলের গোষ্ঠী-বিবাদ এ ভাবেই ফের প্রকাশ্যে এসে পড়েছে।
সোমবার ভোররাতে হলদিয়া পেট্রোকেমিক্যাল লিঙ্করোডের ধারে একটি রাসায়নিক কারখানার গেটের বাইরে ওই কার্যালয়ে হঠাৎই আগুন লাগে। আগুন নেভাতে আসে দমকলের একটি ইঞ্জিন। হোগলা পাতার তৈরি কার্যালয়টি তার আগেই অবশ্য পুরোটা পুড়ে যায়। তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের এই কারখানা-ইউনিটেরই নেতৃত্বে রয়েছেন বিধায়ক শিউলি সাহা। |
|
ছবি: আরিফ ইকবাল খান। |
এই রাসায়নিক কারখানাটি-সহ হলদিয়া শিল্পতালুকের অধিকাংশ কারখানাতেই শ্রমিকদের মধ্যে কয়েক মাস আগেও একচেটিয়া প্রভাব ছিল সিপিএম প্রভাবিত ‘সিটু’র। বিধানসভা ভোটে পালাবদলের পরে এখন এই সব কারখানার শ্রমিক সংগঠনেও তৃণমূলের প্রাধান্য। অনেক ক্ষেত্রেই অবশ্য বিভিন্ন কারখানায় তৃণমূলের ইউনিয়ন এখনও পুরো স্বীকৃতি পায়নি। আপাতত তারা কারাখানার গেটের বাইরে অস্থায়ী কার্যালয় করে সাংগঠনিক কাজকর্ম চালাচ্ছে। লিঙ্করোডে রাসায়নিক কারখানাটির গেটের বাইরে বাঁ-দিকে সে ভাবেই চলছিল সোমবার ভোররাতে পুড়ে যাওয়া কার্যালয়টি। তার ঠিক উল্টো দিকেই রয়েছে তৃণমূলেরই অন্য একটি গোষ্ঠী-পরিচালিত আরও একটি অস্থায়ী কার্যালয়। একই কারখানায় তৃণমূলের দু’দু’টি সংগঠন নিয়ে দু’তরফে বেশ কিছু দিন ধরে চাপানউতোরও চলছিল।
কার্যালয় পোড়ার ঘটনায় এ দিন দুর্গাচক থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে বিধায়কের গোষ্ঠী। বেলার দিকে শিউলিদেবী নিজে কারাখানার গেটে আসেন। তাঁর বক্তব্য, “এই কারখানার ৭০০ ঠিকাশ্রমিক দৈনিক মাত্র ৯০ টাকা মজুরিতে কাজ করেন। সিটু এই সব শ্রমিকদের দিকে ফিরেও তাকাত না। শ্রমিকদের অধিকাংশই এখন তাই আমাদের সমর্থক। কিন্তু সেটা কারও কারও সহ্য হচ্ছে না। তারাই দুষ্কৃতীদের দিয়ে এই কাজ করেছে।” তাঁর অভিযোগ, “সম্প্রতি আমাদের দলেও বেনোজল ঢুকছে। তারা এই কারাখানাতেই দলের নামে আরও একটি একটি কার্যালয় খুলেছে। আগুনে ওই কার্যালয়টি কিন্তু রক্ষা পেয়েছে। তাই দলেরই একাংশ দুষ্কর্মে জড়িত কি না, সে নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ থাকছে।” যাদের ভূমিকা সম্পর্কে খোদ বিধায়কেরই সন্দেহ, তৃণমূলের সেই অন্য গোষ্ঠী প্রভাবিত শ্রমিক সংগঠনের নেতা স্বপন নস্করের পাল্টা দাবি, “ওই কার্যালয়টির সঙ্গে যুক্ত লোকজনের বেশিরভাগই সিপিএম থেকে উড়ে এসে জুড়ে বসেছে। নিজেরাই অফিসে আগুন লাগিয়ে আমাদের দিকে এখন আঙুল তুলছে!” দুর্গাচক থানার ওসি কুদরতে খোদা বক্স জানান, তদন্ত শুরু হয়েছে। |
|