যে তিন শিশুসন্তানের দেহ হাওড়ার বাগনানে দামোদর থেকে পুলিশ উদ্ধার করেছিল, তাদের বাবা হাদি কুরেশিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ওই তিন জনের সঙ্গে হাদির শ্যালিকার শিশুসন্তানকেও দামোদর থেকে উদ্ধার করা হয়। চার জনই একটি বিয়েবাড়ির অনুষ্ঠান থেকে হাদির সঙ্গে গত ১৪ নভেম্বর বিকেলে বেরিয়ে এসেছিল। চার জনের দেহ উদ্ধার করা হলেও হাদির কোনও হদিস মিলছিল না। তাদের বাড়ি টিকিয়াপাড়ায়। সোমবার সকালে হাদি কোলাঘাটে তার এক আত্মীয়ের বাড়িতে এসে হাজির হয়। তাঁদের কাছ থেকে খবর পেয়ে বাগনান থানার পুলিশ হাদিকে গ্রেফতার করে। পুলিশ জানিয়েছে, হাদি ফিনাইল জাতীয় কিছু একটা খেয়ে ফেলায় অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। তাই তাকে বাগনান গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়।
হাদি কুরেশি নিজস্ব চিত্র |
সকাল ১০টা নাগাদ কিছুটা সুস্থ হয়ে হাসপাতালে বসে হাদি জানায়, প্রতিবেশীর বিয়ের অনুষ্ঠানে খাওয়া-দাওয়া করে সে অসুস্থ হয়ে পড়ায় বাইরে এসে বসেছিল। নিজের তিন ছেলেমেয়ে আমান কুরেশি (৬), রৌনক খাতুন (৪) এবং আলিসা খাতুন (৩) তার কাছে এসে তাদের বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার জন্য বায়না ধরে। তাদের সঙ্গে আসে শ্যালিকার ছেলে হাসান (৮)। হাদির কথায়, “আমি ওদের ফিরে যেতে বলেছিলাম। কারণ, আমার শরীর ঠিক ছিল না। কিন্তু ছেলেমেয়েরা জেদ ধরল। শ্যালিকার ছেলেকে চকোলেট এবং ২ টাকা দিয়ে ফিরে যেতে বলি। ফিরে গেলেও সে কিছু ক্ষণ পরে এসে বলল, ভাইবোন এবং আমার সঙ্গে বেড়াতে যাবে।” চার জনকে নিয়ে সে কাছাকাছি ঘোরাফেরা করে। তার কথায়, “এর পরে আমি কী করেছি সে বিষয়ে কিছু মনে নেই।” এমনকী ১৮ দিন ধরে সে কোথায় ছিল সে বিষয়েও তার কিছু মনে নেই বলে হাদি জানায়। এ দিন ধরা পড়ার সময়ে তার কাছে ছিল একটি মোবাইল ফোন। উল্লেখ্য, ছেলেমেয়েদের দেহ উদ্ধার হওয়ার দু’দিন পরে হাদি টিকিয়াপাড়ায় তার ভাইকে নিজের মোবাইল থেকে ফোন করেছিল। টেলিফোন পাওয়ার পরেই হাদির শ্বশুরবাড়ির লোকজন তার বিরুদ্ধে হাওড়া থানায় চার জন শিশুকে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। হাওড়ার পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) রবীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, “খুনের অভিযোগটি যেহেতু হাওড়া থানাতে হয়েছে তাই হাদিকে ওই থানার হাতে তুলে দেওয়া হবে।” |