জেলে থেকেও নিজেদের ঘনিষ্ঠ শ্রীরামালুকে বল্লারিতে নির্দল প্রার্থী হিসেবে জিতিয়ে শক্তি জাহির করেছেন রেড্ডি ভাইয়েরা। উপনির্বাচনে বিজেপি প্রার্থীর জামানত জব্দ করিয়ে এখন নতুন দল গড়ারও হুমকি দিচ্ছেন শ্রীরামালু। দাবি, অন্তত হাফ-ডজন বিজেপি বিধায়ক রয়েছেন তাঁদের পক্ষে। এই অবস্থায় কর্নাটকে দলের ভাঙন ঠেকানোই বড় ভাবনা বিজেপি-র। যে কারণে দলের শ্রীরামালু-ঘনিষ্ঠ নেতাদের সম্পর্কে কড়া অবস্থান নেওয়ার পাশাপাশি
নির্দল বিধায়কদের পাশে টানতে তাঁদের মন্ত্রী করে দেওয়ার কথাও ভাবছে এখন বিজেপি। যদিও প্রকাশ্যে বল্লারির হারকে ‘জয়’ হিসেবেই তুলে ধরছেন বিজেপি নেতৃত্ব। তাঁদের বক্তব্য, দল একটা বিধানসভা আসন হারানোর ক্ষতি স্বীকার করেছে, কিন্তু দুর্নীতির সঙ্গে আপস করেনি।
অবৈধ খননে দুর্নীতির অভিযোগে কর্নাটকে বিজেপি-র প্রাক্তন মন্ত্রী জনার্দন রেড্ডি এখন হায়দরাবাদের জেলে। ইয়েদুরাপ্পাকে সরানোর পর দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় রেড্ডি বা তাঁদের ঘনিষ্ঠ শ্রীরামালুকে আর মন্ত্রী করা হয়নি সদানন্দ গৌড়া সরকারে। সেই শ্রীরামালুর কাছে দলীয় প্রার্থী হেরে যাওয়ায় বিজেপি নেতারা এখন ব্যাখ্যা দিচ্ছেন, “হেরেও আমাদের জয় হয়েছে। কারণ, শ্রীরামালুর ভোটব্যাঙ্ক বিজেপি-রই। কংগ্রেস বা জেডি-এস সেই জায়গাটা দখল করতে পারেনি। দুর্নীতির অভিযোগ থাকায় মন্ত্রী করা হয়নি বলেই তিনি নির্দল প্রার্থী হয়েছেন। দুর্নীতির কলঙ্ক ঘুচলে আবার বিজেপি-রই আশ্রয়ে ফিরবেন তিনি। আপাতত দুর্নীতির সঙ্গে কোনও আপস না করে আমরা একটি বিধানসভা আসন বলিদান করেছি মাত্র।”
কিন্তু মুখে এ কথা বললেও স্বস্তিতে নেই বিজেপি নেতৃত্ব। কারণ, নতুন দল গড়ার কথা বলছেন শ্রীরামালু। রেড্ডি ভাইয়েরা জেল থেকে বেরোলে বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠী আরও অক্সিজেন পাবে। সবেমাত্র ইয়েদুরাপ্পাকে চাপের মুখে রেখে তাঁকে একটু শান্ত করা হয়েছে। এ বারে আবার আর একটি গোষ্ঠী যদি বিজেপি-র বিরুদ্ধে মাথাচাড়া দেয়, তা হলে ভবিষ্যতে সমস্যা আরও বাড়বে। এই মুহূর্তে বিজেপি নেতারা যাতে শ্রীরামালুর সঙ্গে না যান, তার জন্য কঠোর বার্তা দিচ্ছেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।
নির্বাচনের প্রচারে শ্রীরামালুর পক্ষে যাওয়ার জন্য ইতিমধ্যেই ৩ জন বিধায়ককে দল থেকে সাময়িক বহিষ্কারের নোটিস দেওয়া হয়েছে। বিধানসভায় যে ৭ জন নির্দল বিধায়ক রয়েছেন, তাঁদেরও মন্ত্রিসভায় সামিল করার প্রস্তাব বিবেচনা করা হচ্ছে। যাতে সদানন্দ গৌড়া সরকারের হাত শক্ত হয়।
বিজেপি-র এই পরাজয়ে স্বাভাবিক ভাবেই উৎসাহিত কংগ্রেস শিবির। দলের নেতা দিগ্বিজয় সিংহ বলেন, “কর্নাটকের ফলাফল লালকৃষ্ণ আডবাণীর বিফল রথযাত্রার প্রতিফলন। কর্নাটক থেকে হিমাচল বা হরিয়ানা, যেখানেই আডবাণীর রথ গিয়েছে, তা ফ্লপ হয়েছে।” কিন্তু বিজেপি-র মুখপাত্র প্রকাশ জাভড়েকরের মতে, “কর্নাটকে রথ নিয়ে যাওয়ার আগেই আডবাণী স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন, দলের ভিতরেও দুর্নীতির সঙ্গে আপস করা হবে না। কর্নাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ইয়েদুরাপ্পার আমলের দুর্নীতির ব্যাপারেও যে বিজেপি কোনও আপস করছে না, সে কথাও জানিয়েছেন তিনি। ফলে আডবাণীর রথযাত্রার সঙ্গে এর কোনও সম্পর্কই নেই।” |