ধান কেনার কাজে কোনও চালকলের বিরুদ্ধে অভিযোগ এলে তা তদন্ত করে দেখা হবে। তদন্তে মিল কর্তৃপক্ষের দোষ প্রমাণিত হলে তাকে কালো তালিকাভুক্ত করে দেওয়া হবে। সোমবার কালনায় সরকারি সহায়ক মূল্যে ধান কেনার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে এসে এমনটাই জানিয়ে গেলেন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।
মন্তেশ্বরে বামুনপাড়া পঞ্চায়েতের পূর্ব খাঁপুর এলাকার একটি মাঠে ক্যাম্প খুলে এলাকার চাষিদের ধান কেনা শুরু করেছে বান্দেশ্বরী রাইসমিল। সেখানে চাষিদের নানা অভিযোগ শোনার পরে মন্ত্রীর আশ্বাস, “২০১২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কুইন্টাল প্রতি ১০৮০ টাকা দরে ধান কেনা হবে চাষিদের কাছ থেকে। তাই অযথা হুড়োহুড়ি না করে ধীরে ধীরে ধান আনতে হবে।” |
মন্ত্রীর বক্তব্য, “রাজ্যে সবচেয়ে বেশি ধানকল রয়েছে বর্ধমান জেলায়। মোট ৪৩২টি। তার মধ্যে চালু ৩৯৮টি। জেলাশাসককে বলা হয়েছে, চাষিদের পরিষেবা দেওয়ার স্বার্থে বন্ধ মিলগুলি ফের চালু করা দরকার। মুখ্যসচিবের সঙ্গেও আলোচনা করা হবে।” মন্ত্রী জানান, এ বার রাজ্যে রেকর্ড পরিমাণ ধান উৎপাদন হয়েছে। উৎপাদনের পরিমাণ প্রায় দেড়শো লক্ষ টন। চাল হবে ১০০ লক্ষ মেট্রিক টন। নানা খাতে রাজ্যের প্রয়োজন ৫০ লক্ষ টন চাল। মন্ত্রী বলেন, “দোষী প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট চালকলের বিরুদ্ধে সরকার যেমন কড়া হবে, তেমনই ধানের গুণগত মান যাতে খারাপ না হয় তার জন্য চাষিদেরও চালকলগুলির সঙ্গে সহযোগিতা করতে হবে।”
সম্প্রতি মন্তেশ্বর ছাড়া কালনা মহকুমার বাকি চার ব্লকে শ্লথ গতিতে ধান কেনার অভিযোগ ওঠে। চাষিরা দাবি করেন, ধান কেনা নিয়ে গ্রামেগঞ্জে যথেষ্ট প্রচার নেই। অনেকে শহরের চালকলে ধান আনতেও বিরক্তি প্রকাশ করেন। মন্ত্রীর বক্তব্য, “গ্রামগঞ্জের মানুষ এখন রেডিও-এফএম শোনেন। দফতরের তরফে ধান কেনার বিষয়টি লাগাতার দুই মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।” দূরবর্তী স্থানে ধান বিক্রিতে চাষিদের অনীহা প্রসঙ্গে তিনি জানান, বেনফেড, কনফেড, নাফেডের মতো পাঁচ সংস্থা সমবায়ের মাধ্যমে ধান কেনা শুরু করছে। এর ফলে ওই সমস্যা আর থাকবে না।
মন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, চেকের মাধ্যমে টাকা নিতে গেলে প্রত্যেক চাষির ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট দরকার। এই মুহূর্তে রাজ্যের ৭৫ শতাংশ চাষির অ্যাকাউন্ট রয়েছে। ব্যাঙ্কগুলির সঙ্গে কথা বলে ঠিক হয়েছে, যাঁদের অ্যাকাউন্ট নেই, তাঁদের জিরো ব্যালান্স অ্যাকাউন্ট খুলে দেওয়া হবে। |