মগরাহাট কাণ্ডে শুরু চাপান-উতোর
তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে পোস্টার নৈনান গ্রামে
গরাহাট-কাণ্ড নিয়ে কম বিতর্ক হচ্ছে না। রবিবার নতুন বিতর্ক বাধল তৃণমূলের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মুকুল রায় এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সভাপতি শোভন চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে নৈনান গ্রামে পড়া কিছু পোস্টার নিয়ে। পোস্টার পড়েছিল খোদ মগরাহাট পূর্ব কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক নমিতা সাহার বাড়ির দেওয়াল ও লাগোয়া দোকানেও।
সাদা কাগজে কম্পিউটারে লেখা পোস্টারগুলির বক্তব্য ‘নন্দীগ্রামের গণহত্যার নায়ক সেলিম-বাহিনীকে পাশে রেখে নৈনান গ্রামে মরদেহ নিয়ে মুকুল রায়-শোভন চট্টোপাধ্যায় এলেন কেন? জবাব দিন’। নীচে লেখা ‘স্থানীয় বাসিন্দারা’। পোস্টারগুলি ‘স্বতঃস্ফূর্ত’ ভাবে লাগানো হয়েছে, না ‘রাজনৈতিক ইন্ধনের’ জেরেতা নিয়ে চাপান-উতোর শুরু হয়েছে তৃণমূল-সিপিএমে।
গত বৃহস্পতিবার নৈনান গ্রামে হুকিং-বিরোধী অভিযানকে কেন্দ্র করে জনতা-পুলিশ সংঘর্ষের সময় গুলিতে মৃত্যু হয় দু’জনের। ময়না-তদন্তের পরে শুক্রবার ডায়মন্ড হারবার মহকুমা হাসপাতাল থেকে দেহ দু’টি নিয়ে গ্রামে যান মুকুল রায় এবং শোভন চট্টোপাধ্যায়। পুলিশ সূত্রের খবর, রবিবার ওই গ্রামের কয়েকটি বাড়ির দেওয়ালে, মগরাহাট বাজার এবং বিধায়ক নমিতা সাহার বাড়ি, দোকানের দেওয়ালে ওই পোস্টার দেখা যায়। দুপুরের আগেই অবশ্য ওই সব পোস্টার ছিঁড়ে ফেলে পুলিশ। নমিতাদেবী এ দিন সন্ধ্যায় ফোনে বলেন, “আমি এলাকার বাইরে রয়েছি। আমার বাড়ির দেওয়ালে ও দোকানে ওই পোস্টার লাগানো হয়েছে বলে জেনেছি। কারা ওই পোস্টার দিল, বলতে পারব না।”
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মগরাহাটের মামুদপুরের বাসিন্দা সেলিম অর্থাৎ সেলিম সর্দার দক্ষিণ ২৪ পরগনার দাগি অপরাধী। তার বিরুদ্ধে খুন, ডাকাতি, তোলাবাজি-সহ নানা অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে মামলা চলছে। নন্দীগ্রাম-কাণ্ডেও তার নাম জড়িত রয়েছে। ওই ঘটনায় সিআইডি তাকে গ্রেফতার করে। এখন জামিনে রয়েছে সে। মগরাহাটে তার একটি দলও রয়েছে।
শুক্রবার মুকুলবাবু এবং শোভনবাবু যখন দেহ দু’টি নিয়ে ওই গ্রামে যান, তখন তাঁদের ঘিরে গ্রামবাসীরা স্থানীয় দুই তৃণমূূল নেতা-নেত্রীর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন। কিন্তু মুকুলবাবু বা শোভনবাবুর বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেননি। রবিবারের এই পোস্টার কতটা ‘স্বতঃস্ফূর্ত’ ভাবে লাগানো হয়েছে, সে প্রশ্ন তুলে শোভনবাবুর দাবি, “আমি সেলিমকে চিনিই না।” শুক্রবারের ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমরা যখন গ্রামে যাই, তখন বহু মানুষ চলে এসেছিলেন। কে, কোথায় ছিল কী করে বলব?” শোভনবাবুর মন্তব্য, “আমাদের আগে ওখানে সিপিএম নেতারা যান। ওঁদের সঙ্গেও সেলিম-বাহিনী যেতে পারে। আর এই পোস্টার দেওয়ার পিছনে সিপিএমের ভূমিকা থাকা অস্বাভাবিক নয়।”
শোভনবাবুর এই অভিযোগকে নস্যাৎ করে দিয়েছেন সিপিএমের জেলা সম্পাদক সুজন চক্রবর্তী। শুক্রবার তিনিও গিয়েছিলেন নৈনান গ্রামে। সুজনবাবু বলেন, “ওখানে আমাদের সঙ্গে শুধু কয়েকজন দলীয় সমর্থক ছিলেন। সেলিম-বাহিনীকে নিয়ে যেতে যাব কেন? সেলিম এখন কাদের সঙ্গে সবাই জানে। এ জন্য আমাদের পোস্টার দেওয়ার প্রয়োজন নেই।” তাঁর পাল্টা অভিযোগ, “আমি তো শুনেছি, বামফ্রন্টের ডাকা শনিবারের বন্ধকে বানচাল করতে সেলিম-বাহিনীকে কাজে লাগিয়েছে তৃণমূল। জোর করে দোকান খুলিয়েছে।” তৃণমূল অবশ্য এ অভিযোগ মানেনি।
এ দিন সিআইডি-র ডিআইজি (অপারেশনস) কে জয়রামনের নেতৃত্বে ৬ সদস্যের একটি দল নৈনান গ্রামে তদন্তে যায়। তদন্তকারীদের বৃহস্পতিবারের ঘটনার বর্ণনা দেন গ্রামবাসীরা। যে সব জায়গায় গুলির চিহ্ন রয়েছে, তদন্তকারীরা সেই সব জায়গা খুঁটিয়ে দেখেন। কে জয়রামন বলেন, “তদন্ত শুরু হয়েছে। কী ভাবে এবং কেন গুলি চালানোর ঘটনা ঘটল, পুলিশ কোন পরিস্থিতিতে গুলি চালাল তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।”
পুলিশের গুলি চালনা এবং দু’জনের মৃত্যুর ঘটনার প্রতিবাদে এ দিন ১২ ঘণ্টা মগরাহাট-২ ব্লকে বন্ধ ডেকেছিল এসইউসি। শনিবার বামফ্রন্টের ডাকা বন্ধের মতো এ দিনের বন্ধেও সাড়া মেলেনি। দোকানপাট খোলা ছিল। স্বাভাবিক ছিল যান চলাচলও।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.