চলচ্চিত্রের সূচনা লগ্ন থেকে বাংলা চলচ্চিত্রে রবীন্দ্রনাথের গান, ‘আলো’, ‘কাঁচের স্বর্গ’ ছবির পরিচালক তরুণ মজুমদারের বক্তৃতায় সে কথাই শুনলেন উৎসাহীরা।
শনিবার ‘চলচ্চিত্রে রবীন্দ্রনাথের গান’ বিষয়ে শিলিগুড়ির মিত্র সম্মেলনী হলে বিকাশ ঘোষ স্মারক বক্তৃতা দিলেন তিনি। শিলিগুড়ি পুরসভার প্রাক্তন মেয়র প্রয়াত বিকাশ ঘোষের স্মৃতিতে দলের উদ্যোগে বিকাশ ঘোষ স্মারক কমিটি গড়ে প্রতি বছর এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এ বার ছিল দ্বিতীয় বছর।
উদ্যোক্তা কমিটির অন্যতম অশোক ভট্টাচার্য জানান, বিকাশ ঘোষ স্মারক বক্তৃতা জনপ্রিয় করতে তাঁরা সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুণী মানুষদের ভবিষ্যতেও আমন্ত্রণ জানাবেন। গত বছর বিকাশ ঘোষ স্মারক বক্তৃতা রাখেন ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। এ বার চলচ্চিত্রে রবীন্দ্রনাথের গান বিষয়টি তুলে ধরে বক্তব্যের অংশটি কয়েকটি ভাগে ব্যাখ্যা করেন তরুণবাবু। প্রথমে ‘চলচ্চিত্র কাকে বলে’, চলচ্চিত্রের সূচনার বিষয়টি সংক্ষেপে তুলে ধরেন। এর পর বাংলা চলচ্চিত্রে সাহিত্যের সূচনা। শেষে বাংলা ছবিতে রবীন্দ্রনাথের গান।
তরুণ মজুমদারের কথায়, ১৯৩৫ সালে নিউ থিয়েটার্সের কর্ণধার বীরেন্দ্রনাথ সরকারের উদ্যোগে তৈরি প্রমথেশ বড়ুয়ার ছবি ‘মুক্তি’তে প্রথম দু’টি রবীন্দ্রসঙ্গীত ব্যবহার করা হয়। সঙ্গীত পরিচালক পঙ্কজকুমার মল্লিক পরিচালক প্রমথেশবাবুকে ওই দুটি রবীন্দ্রনাথের গান রাখার জন্য বলেছিলেন। সেই থেকে শুরু হল এক নতুন অধ্যায়। চলচ্চিত্রে রবীন্দ্রনাথের গানের ব্যবহার শুরু হলেও সেই সময় রবীন্দ্রনাথের গান ছবিতে রাখতে অনেকেই দু’ বার ভাবতেন। ক্রমশ অবশ্য সেই ভুল ভেঙেছে। আর এখন রবীন্দ্রনাথের গানই ছবিতে রাখাকে সব চেয়ে নিরাপদ বলে মনে করেন প্রযোজক-পরিচালকদের একাংশ। মুক্তির পর একে একে সাথী, উদয়ের পথে, পরিচয়, পরাজয়ের মতো বহু ছবিতে রবীন্দ্রনাথের গান ব্যবহার হতে থাকে। উদয়ের পথে ছবির অধিকাংশ গানই রবীন্দ্রসঙ্গীত। পরে ঋত্বিক ঘটক, সত্যজিৎ রায়, তপন সিংহ, অরবিন্দ মুখোপাধ্যায়ের মতো পরিচালকেরা রবীন্দ্রনাথের গানকে তাঁদের ছবিতে ব্যবহার করেছেন। উল্লেখ্য তরুণবাবু তাঁর পরিচালনায় কাঁচের স্বর্গ ছবিতে প্রথম দুটি রবীন্দ্র সঙ্গীত ব্যবহার করেন। আলো ছবির সব গানই রবীন্দ্র সঙ্গীত। আরও অনেক ছবিতে তিনি রবীন্দ্রনাথের গান ব্যবহার করেছেন। এ দিন অনুষ্ঠানে রবীন্দ্র সঙ্গীত গান শুভপ্রসাদ নন্দী মজুমদার। |