|
|
|
|
ফলন নিয়ে চিন্তায় আমন চাষিরা |
অরিন্দম সাহা • কোচবিহার |
লেদা পোকার আক্রমণের ধাক্কা এখনও সামলানো যায়নি। তার উপরে ধানের শিস বার হচ্ছে না। ফলে মাথায় হাত পড়েছে কোচবিহার জেলার বিস্তীর্ণ এলাকার আমন চাষির। নভেম্বরে জেলার কোচবিহার-১, দিনহাটা-২, মাথাভাঙা-২ এবং সিতাই ব্লকে লেদা পোকার আক্রমণে আমন ধানের ক্ষতি হয়। সপ্তাহ খানেক হল জেলা জুড়ে বহু কৃষকের জমিতে ধানের শিস বার না-হওয়ায় সমস্যা সামনে চলে এসেছে। সাধারণত, মরসুমের শেষের দিকে বৃষ্টি না-হলে এমন সমস্যা হতে পারে। বিশেষ করে রোপণ করা চারা যদি ঠিকমতো বৃষ্টির জল না-পায় তাহলে ধানের শিস বার না-হওয়ায় সমস্যা দেখা দিতে পারে। ফলনের হাল দেখে হতাশ কৃষকেরা অনেকেই ধান খেতে গবাদি পশু চরানো শুরু করেছেন। কোচবিহার জেলা কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বার সেপ্টেম্বরে জেলায় স্বাভাবিক বৃষ্টি হয়নি। তারই জেরে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। জেলার মুখ্য কৃষি আধিকারিক অরুণ রায় বলেন, “যা পরিস্থিতি, তাতে জেলায় প্রায় ১৫ শতাংশ উৎপাদন মার খাবে বলে সন্দেহ করছি। সেপ্টেম্বরে বৃষ্টি না-হওয়াতেই এই সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। কিছুদিন আগে লেদা পোকার আক্রমণে জেলার ৪টি ব্লকে আমন ধার মার খায়। ঊর্ধ্বতন কর্তাদের কাছে এই ব্যাপারে রিপোর্ট পাঠানো হচ্ছে।” জেলার বহু জমি বহু ফসলি হলেও কোচবিহারের এখনও প্রধান ফসল বলতে আমন চাষ। জেলার প্রায় ২লক্ষ ১০ হাজার হেক্টর জমিতে বড় চাষি থেকে প্রান্তিক, সকলেই মরসুমের এই সময়ে ধানের চাষ করে থাকেন। উৎপাদিত ফলনের পরিমাণ প্রায় ৪ লক্ষ ২০ হাজার মেট্রিক টন। উদ্বৃত্ত ফসল বিক্রি করে আয়ের সংস্থান করা ছাড়া সারা বছরের খোরাকিও হয় আমনের উপরে ভরসা করেই। চাষের খরচ বেড়ে যাওয়ায় ক্ষুদ্র চাষিরা অনেকে ঋণ করে হলেও আমনের চাষ করে থাকেন। সেই আমন চাষ জেলার বিস্তীর্ণ এলাকায় মার খাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন চাষিরা। প্রাথমিক হিসাবে, লেদা পোকার আক্রমণে জেলার ৫০০ হেক্টর জমির ধান নষ্ট হয়। সপ্তাহ খানেক হল, তুফানগঞ্জ-সহ জেলার নানা এলাকায় ধানের শিস না-বার হওয়ার সমস্যা নিয়ে অভিযোগ জমা পড়ছে। তুফানগঞ্জের দ্বারিকামারি গ্রামের কৃষক হারানচন্দ্র দাস বলেন, “সেপ্টেম্বরে ৪ বিঘা জমিতে আমন রোপণ করি। ১২ হাজার টাকা খরচ হয়েছিল। চারাগুলো ভালই বেড়ে উঠেছিল। এখন দেখছি শিস বার হয়নি।” নাটাবাড়ির বাসিন্দা নিরঞ্জন দাস বলেন, “৫ বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছিলাম। এক বিঘা জমির ধানে শিসই বার হয়নি। বাকি জমিতেও বিঘা প্রতি ২-৩ মণের বেশি ফলন হবে না।” জেলার কংগ্রেস নেতা শৈলেন বর্মা বলেন, “শস্য সুরক্ষার ব্যাপারে কৃষি দফতরের কোনও হেলদোল নেই। এমনকী, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনেও কৃষি দফতরের কোনও কর্তা যাননি।” |
|
|
|
|
|