মানছে বাঁকুড়ার স্বাস্থ্য দফতর
এড্স নিয়ে প্রচারে খামতি
ড্স রোগীর সংখ্যা বাঁকুড়া জেলায় ক্রমশ বাড়ছে। এর কারণ হিসেবে সচেতনতার প্রচারে ফাঁক থেকে যাচ্ছে বলেই মনে করছে স্বাস্থ্য দফতরের একাংশ।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত সাত বছরে এই জেলায় ২৯৪ জনের রক্তে এইচআইভি ধরা পড়েছে। তাঁদের মধ্যে ৭৫ জন এড্সে আক্রান্ত। স্বাস্থ্য দফতরের হিসেবে ২০০৪ সাল থেকে চলতি বছরের অক্টোবর মাস পর্যন্ত এড্স আক্রান্ত ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে ৪ জন শিশু, ১২ জন মহিলা ও ১৮ জন পুরুষ। অথাৎ গড়ে প্রতি বছর এই জেলার ৩৪ জন এইআইভি-তে আক্রান্ত হচ্ছেন এবং প্রায় পাঁচ জনের মৃত্যু হচ্ছে। পরিসংখ্যান বলছে, এই জেলায় ২০০৪ সাল থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত এইআইভি-তে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৯৩ জন। ২০১০ সালেই নতুন করে ১২৬ জনের রক্তে এইচআইভি-এর জীবানু পাওয়া গিয়েছে। চলতি বছরের অক্টোবর মাস পর্যন্ত নতুন করে ৭৫ জন এইআইভি আক্রান্ত রোগীর সন্ধান পাওয়া গিয়েছে।
স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা জানান, এই জেলার ২২টি ব্লকের মধ্যে বাঁকুড়া ২ ব্লকের এইচআইভি আক্রান্তের সংখ্যা সব থেকে বেশি। এই ব্লকের ৪০ জনের রক্তে এইআইভি-র জীবানু পাওয়া গিয়েছে। এর পরেই রয়েছে বিষ্ণুপুর ব্লক। এখানে ৩৫ জনের রক্তে এইচআইভি মিলেছে। বাঁকুড়া ১ ব্লকে ৩০ জন ও বড়জোড়া ব্লকে ২০ জনের রক্তে ওই জীবানু ধরা পড়েছে। পরিসংখ্যানের বিচারে এই চারটি ব্লক শীর্ষে থাকলেও জেলার সবক’টি ব্লকেই ওই এইচআইভি আক্রান্ত রোগী রয়েছে বলে স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে।
এড্স দিবসে বাঁকুড়ায় সচেতনতা মিছিল। বৃহস্পতিবার তোলা —নিজস্ব চিত্র।
এই মারণ ব্যাধি এ ভাবে বেড়ে যাওয়ার কারণ কী? এইচআইভি রোগীদের নিয়ে কাজ করা স্বাস্থ্যকর্মীরা জানিয়েছেন, রাস্তার ধারে বিভিন্ন হোটেল, ধাবাগুলিতে দেহ ব্যবসা চলছে। সেখান থেকে এড্স ছড়াচ্ছে। বাঁকুড়া-দুর্গাপুর, বাঁকুড়া-বিষ্ণুপুর ও বাঁকুড়া-রানিগঞ্জ রাস্তার ধারে ধাবা ও হোটেলগুলিতে দেহ ব্যবসার অভিযোগ মাঝে মধ্যেই ওঠে। জেলার উপ মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক (২) তথা রাজ্য এড্স কন্ট্রোল সোসাইটির জেলা নোডাল অফিসার দেবাশিস রায় বলেন, “কিছু ধাবা ও হোটেলগুলিতে দেহ ব্যবসা হয়। সেখানে বিভিন্ন বয়সের লোক যাতায়াত করেন। অনিয়ন্ত্রিত যৌন জীবন যাপনের জন্যেই এড্সে আক্রান্ত হচ্ছেন। দেখা গিয়েছে এড্স আক্রান্তদের বয়েস ২০ থেকে ৪০ এর মধ্যে।” একই সঙ্গে তিনি স্বীকার করেছেন, “এই এলাকাগুলিতে এড্স নিয়ে সচেতনতা শিবির বাড়ানোর প্রযোজন রয়েছে। এ বার তা করা হবে।” এত দিন করা হয়নি কেন? তাঁর জবাব, “হোটেল ও ধাবার মালিকদের নিয়ে সচেতনতা শিবির করা হয়েছে। এ বার হোটেলে যাঁরা আসেন তাঁদেরও এড্স নিয়ে সচেতন করা হবে।” তিনি জানান, এড্স আক্রান্তদের মধ্যে ৭০ শতাংশ পরিবহণ কর্মী। এড্স আক্রান্ত হওয়ার কারণ টেলিভিশন, রেডিও, দেওয়াল লিখন ও পোস্টারের মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। আরও প্রচার বাড়ানো হবে। হোটেল, ধাবায় চলতে থাকা দেহ ব্যবসা বন্ধ করা যাচ্ছে না কেন? জেলা পুলিশ সুপার প্রণব কুমারের দাবি, “মাঝে মধ্যেই ধাবা ও হোটেলগুলিতে হানা দিয়ে ধরপাকড় করা হয়। বুধবার রাতেই ১৫ জনকে ধরা হয়েছে।”
২০০৪ সাল থেকে এড্স কন্ট্রোল সোসাইটি জেলায় এড্স নিয়ন্ত্রণের জন্য বিভিন্ন কাজ শুরু করেছে। ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে এইচআইভি আক্রান্তদের পরামর্শ দেওয়ার জন্য ইন্ট্রিগেটেড কাউন্সেলিং অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টার (আইসিটিসি) খোলা হয়। কিন্তু এই জেলায় এখনও পর্যন্ত মাত্র ১১টি ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে তা চালু করা হয়েছে। বাকিগুলিতে চালু করা হয়নি। উপ মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক (২) বলেন, “আরও কয়েকটি আইসিটিসি কেন্দ্র চালু করার জন্য স্বাস্থ্য দফতরের কাছে আবেদন করা হয়েছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.