আইনজীবীদের কর্মবিরতির জেরে তমালিকা দেওঘরিয়া খুনের মামলার শুনানি শুরু করা গেল না। কয়েক দফা দাবিতে বৃহস্পতিবার থেকে রঘুনাথপুরের আইনজীবীরা সাত দিনের কর্মবিরতি শুরু করেছেন। রঘুনাথপুরের ওই আট বছরের বালিকাকে খুনে অভিযুক্ত দম্পতির আইনজীবীরা এজলাসে উপস্থিত না থাকায় শুনানি শুরু করা যায়নি। চলতি বছরের ২১ জুলাই নিখোঁজ হয়ে যাওয়া ওই বালিকার দেহ পরে পড়শি দম্পতির বাড়ি থেকে ব্যাগবন্দি অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। খুন করার অভিযোগে পুলিশ সে দিনই ওই দম্পতিকে গ্রেফতার করেছিল। তদন্ত করে পুলিশও ৯০ দিনের মধ্যেই আদালতে চার্জশিট পেশ করে। এ দিন চতুর্থ ফাস্ট ট্রাক কোটের্র বিচারক অরূপ বসুর এজলাসে শুনানীর কথা ছিল।
আদালতের পরিকাঠামো উন্নয়নের দাবি ও কর্মী নিয়োগে অস্বচ্ছতার অভিযোগে কর্মবিরতি শুরু করেছেন রঘুনাথপুর আদালতের আইনজীবীরা। রঘুনাথপুর বার অ্যাসোসিয়েশন দীর্ঘ দিন ধরে এখানে পূর্ণ সময়ের ও পূর্ণ ক্ষমতা ভিত্তিক অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারকের কোর্ট শুরু করার দাবি জানিয়ে আসছে। আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্তমানে আদালতের চতুর্থ ফাস্ট ট্রাক কোর্টে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক রয়েছেন। কিন্তু বার অ্যাসোসিয়েশনের দাবি, পৃথকভাবে পূর্ণ ক্ষমতা ভিত্তিক কোর্ট শুরু করতে হবে। বার অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সম্পাদক অঘোরনারায়ণ মনি বলেন, “বর্তমানে এখানে কোনও আসামির জামিন মঞ্জুর না হলে ফের জামিনের জন্য পুরুলিয়া আদালতে আবেদন জানাতে হয়। ওই কোর্ট থাকলে এই ভোগান্তি হত না। অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারকের কোর্ট না থাকায় সমস্যা হচ্ছে। সিভিল অ্যাপিল, বিবাহ বিচ্ছেদ সংক্রান্ত মামলা, উইল এর ক্ষেত্রে ‘প্রবেট’ করানো যাচ্ছে না।”
বার অ্যাসোসিয়েশনের আরও দাবি, এই আদালতে সিভিল জাজ (সিনিয়র ডিভিসন) নিয়োগ করতে হবে। বার অ্যাসোসিয়শনের কার্যকরী সমিতির সদস্য দেবব্রত সরকার বলেন, “আদালতে সিভিল জাজ (জুনিয়র ডিভিসন) -এর এজলাস রয়েছে। কিন্তু জমির দাম ৬০ হাজার টাকার বেশি হলে সেই মামলা এখানে করা যায় না। পুরুলিয়া আদালতে সেই মামলা করতে হয়। রঘুনাথপুর মহকুমা এলাকা জমির দাম এখন অনেক বেড়ে গিয়েছে। ফলে জমি সংস্কান্ত অনেক মামলা তাই এখানে করা যাচ্ছে না।” তাঁরা আরও দাবি, আরও এক জন প্রথম শ্রেণির বিচার বিভাগীয় বিচারক নিয়োগ করতে হবে। এতে বহু মামলার দ্রুত নিস্পত্তি হবে। একই সঙ্গে তাঁদের অভিযোগ, এই আদালতে তিন জন অতিরিক্ত সরকারী আইনজীবী ও এক জন এজিপি নিয়োগে অস্বচ্ছতা রয়েছে। বার অ্যাসোসিয়েশনের অভিযোগ, সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি না দিয়ে ওই পদগুলিতে অস্বচ্ছভাবে নিয়োগ করা হয়েছে। তাঁদের পাঠানো তালিকা গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে তাঁরা অভিযোগ পত্র পাঠিয়েছেন বলে জানিয়েছেন। জেলাশাসক অবনীন্দ্র সিংহ বলেন, “নিয়োগ সংক্রান্ত অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” |