গুলিতে মৃত্যু হল এক বধূর। বুধবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার স্বরূপনগর থানার গুণরাজপুর গ্রামে। পুলিশ জানায়, নিহত মর্জিনা বিবি (৪০) গোবিন্দপুর পঞ্চায়েতের সদস্য তথা কংগ্রেস নেতা সহিদুল গাজির স্ত্রী। স্থানীয় কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকদের অভিযোগ, সহিদুলকে খুনের উদ্দেশেই এসেছিল দুষ্কৃতীরা। গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে মর্জিনার মাথায় লাগে। অপরাধীদের গ্রেফতারের দাবিতে বৃহস্পতিবার পথ অবরোধ করে দলের লোকজন। বসিরহাটের এসডিপিও আনন্দ সরকার বলেন, “প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে, পুরনো শত্রুতার জেরেই এই খুন। সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” দেহ ময়না-তদন্তে পাঠিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার রাতে বাড়ির একতলায় শুয়েছিলেন স্বামী-স্ত্রী। সহিদুলের দাবি, রাত তখন প্রায় ১২টা। বাইরে শব্দ পেয়ে ঘুম ভেঙে যায় তাঁর। উঠে দেখেন, একটি জানলা বাইরে থেকে খোলার চেষ্টা করছে কেউ। তড়িঘড়ি আলো জ্বালানোর চেষ্টা করেন তিনি। ইতিমধ্যে গুলির শব্দ পান। আলো জ্বেলে দেখেন, রক্তে ভেসে যাচ্ছে মর্জিনার শরীর। সহিদুলের দাবি, জানলা ফাঁক করে গুলি চালিয়ে দেয় দুষ্কৃতীরা। তিনি কয়েক জনকে পালাতে দেখেছেন। মর্জিনাকে প্রথমে আনা বসিরহাট মহকুমা হাসপাতালে। সেখান থেকে কলকাতায় নিয়ে যাওয়ার পরে মৃত্যু হয় ওই মহিলার। |
কিন্তু কেন মরতে হল মর্জিনাকে?
পুলিশকে ভাবাচ্ছে কয়েকটি বিষয়। দুষ্কৃতীরা কী সহিদুলকেই খুন করতে এসেছিল? যদি তা-ই হয়ে থাকবে, তা হলে কারা খুন করতে চাইল সহিদুলকে। সীমান্ত-লাগোয়া এলাকার বাংলাদেশি দুষ্কৃতীরাই কি এ জন্য দায়ী? নাকি রাজনৈতিক কারণ আছে খুনের পিছনে। পারিবারিক বিবাদের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না তদন্তকারী অফিসারেরা।
সহিদুলের ভাইপো চঞ্চল গাজি বলেন, “কাকার চিৎকারে ছুটে এসে দেখি, কাকিমা বিছানায় রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে। মাথার পিছনে কানের পাশে গুলি লেগেছে। যে দিক দিয়ে দুষ্কৃতীরা পালিয়েছিল বলে জানিয়েছেন কাকা, সে দিকে খোঁজাখুঁজি করেও কিছু পাওয়া যায়নি।” এ দিকে, খুনের ঘটনার প্রতিবাদে এ দিন দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত বিডিও অফিসের সামনে সংগ্রামপুর-স্বরূপনগর রাস্তা অবরোধ করেন কংগ্রেসের কর্মী-সমর্থকেরা। তৃণমূল নেতৃত্বও থানায় গিয়ে দোষীদের গ্রেফতারের দাবি জানান। থানার সামনে অবস্থা-বিক্ষোভ করে কংগ্রেস। ব্লক কংগ্রেস সভাপতি মুজিবর রহমান বলেন, “সর্বত্রই কংগ্রেস কর্মীদের উপরে যে ভাবে হামলা হচ্ছে, তা আদৌ কাঙ্খিত নয়। এখানেও দুষ্কৃতীদের লক্ষ্য ছিলেন সহিদুল। দোষীরা ধরা না পড়লে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনের পথে যেতে বাধ্য হব।” |