অধীরের খাসতালুকে তৃণমূলই ‘অধীশ্বর’ হবে, দাবি শুভেন্দুর
তাঁর খাসতালুক বহরমপুরে তাঁর ভাষাতেই মুর্শিদাবাদ জেলা কংগ্রেস সভাপতি তথা সাংসদ অধীর চৌধুরীকে বিঁধলেন যুব তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি তথা সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী।
গত ২০ ডিসেম্বর নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে কংগ্রেসের পঞ্চায়েতি রাজ সম্মেলনে দলের নেতা-নেত্রীরা শরিক তৃণমূলের বিরুদ্ধে প্রবল তোপ দেগেছিলেন। অধীর ওই সম্মেলনে বলেছিলেন, “যাঁরা ভাবছেন কংগ্রেস ভিক্ষাবৃত্তি করে বেঁচে থাকবে, তাঁরা ভুল ভাবছেন!” কংগ্রেসকে ‘ফিনিক্স পাখি’র সঙ্গে তুলনা করে, তৃণমূলের সঙ্গে জোট করতে গিয়ে আসনরফার প্রশ্নে কংগ্রেসের ‘মহানুভবতা’র কথা উল্লেখ করে অধীর আরও বলেছিলেন, “কংগ্রেসের মহানুভবতাকে কেউ যেন দুর্বলতা না ভাবে।” তাঁর আরও বক্তব্য ছিল, “সাধারণ মানুষের অধিকার বিঘ্নিত হলে কংগ্রেস তার প্রতিবাদ করবেই। কেন্দ্র টাকা দিচ্ছে। অথচ রাজ্য কাজ করছে না! সে বিষয়ে বলতে গেলে যদি কেউ আমাদের সিপিএমের দালাল বলে, তা হলে সিপিএমের দালাল হয়েই প্রতিবাদ করব!”
বৃহস্পতিবার বহরমপুরে শুভেন্দুর সভা ছিল অধীরের ওই আক্রমণেরই ‘জবাবি’ কর্মসূচি। সেখানে তিনি অধীরকে মুর্শিদাবাদের ‘অধীশ্বর’ বলে কটাক্ষ করলেও এক বারও তাঁর নাম করেননি। শুভেন্দু বলেন, “আর পনেরো মাস অপেক্ষা করুন। মুর্শিদাবাদের অধীশ্বর হয়ে উঠবে একটাই দল। তৃণমূল।” অধীরের বরাবরের অভিযোগ, মুর্শিদাবাদে সিপিএমকে ‘অক্সিজেন জোগায়’ তৃণমূল। এ দিন বহরমপুর ওয়াইএমএ মাঠে জেলা তৃণমূলের সমাবেশে শুভেন্দুর পাল্টা হুমকি, “মুর্শিদাবাদে এরা (কংগ্রেস) যত দিন থাকবে, তত দিন সিপিএমকে হঠানো যাবে না।
বহরমপুরে তৃণমূলের সভায় শুভেন্দু। নিজস্ব চিত্র
ওরাই সিপিএমকে অক্সিজেন জোগায়।” তাঁর অভিযোগ, গত পুরভোট ও বিধানসভা ভোটে রাজ্যের বেশ কিছু জেলায় সিপিএম ‘নিশ্চিহ্ন’ হয়ে গেলেও মুর্শিদাবাদে কংগ্রেসের ‘অক্সিজেন’ পেয়েই ২২টি বিধানসভা আসনের মধ্যে ৪টি, ৬টি পুরসভার মধ্যে ৩টি ও জেলা পরিষদ ধরে রেখেছে বামফ্রন্ট।
কয়েক দিন ধরেই লালগোলা, ভগবানগোলা স্টেশনে মাওবাদীদের নাম করে বোমাতঙ্ক ছড়ানো হচ্ছে। শুভেন্দুর কটাক্ষ, তৃণমূলকে আটকাতে কংগ্রেসই ওই ‘মাওবাদীদের’ হাতিয়ার করেছে। তিনি বলেন, “এ জেলায় মাওবাদী নেই। তবু তৃণমূলের উত্থান আটকাতেই রাতের অন্ধকারে মাওবাদীদের নামে পোস্টার ফেলা হচ্ছে। তা এই সভাকে বানচাল করতেই।”
গত বিধানসভা ভোটে মুর্শিদাবাদে ১৮টি আসন কংগ্রেসকে ছেড়ে, চারটি আসনে লড়াই করেছিল তৃণমূল। শুভেন্দুর অভিযোগ, “ওই চারটি আসনে আমাদের পরাস্ত করতে চক্রান্ত করা হয়েছে। যাতে এই জেলা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কোনও প্রতিনিধি মন্ত্রিসভায় না থাকেন।” এর পরেই শুভেন্দুর বক্তব্য, “সাগরদিঘির মানুষ অবশ্য জেলা-অধীশ্বরের সেই ছক বানচাল করে দিয়েছেন। আগামী ১৪-১৫ মাসে এ জেলাতে তৃণমূলই অধীশ্বর হয়ে উঠবে।”
সহায়ক মূল্যে ধান ও পাট কেনা নিয়েও অধীরের আন্দোলনও যুব তৃণমূল নেতার কথায় নিছকই ‘নাটক’। শুভেন্দুর কটাক্ষ, “রাজ্য নয়, কেন্দ্রই ধান, পাটের সহায়ক মূল্য ঠিক করে। এক কুইন্টাল পাটের সহায়ক মূল্য ২৩০০ টাকা। জেসিআই পাট না কেনায় আপনারা ওই দাম পাননি। আপনারা দাম পেয়েছেন ১৬০০ টাকা।” তিনি জানান, ২ লক্ষ ৮০ হাজার কোটি টাকা ঋণের বোঝা থাকা সত্ত্বেও রাজ্য সরকার কুইন্টাল প্রতি ১০০ টাকা ভর্তুকি দিয়েছে। সেই সঙ্গে কেন্দ্রকে কুইন্টাল প্রতি ৩০০ টাকা ভর্তুকি দেওয়ার জন্যও অনুরোধ করা হয়েছিল বলে তাঁর দাবি। কেন্দ্র অবশ্য সে ‘অনুরোধ’ রাখেনি।
এ ব্যাপারে অধীর অবশ্য পাল্টা বলেন, “কে কী মন্তব্য করল, তাতে কিছু যায় আসে না।” তিনি জানান, কেন্দ্র ধান, পাটের সহায়ক মূল্য নির্ধারণ করলেও তা প্রাথমিক ভাবে রাজ্যকেই কিনতে হয়। অধীরের কথায়, “সহায়ক মূল্য নির্ধারণের পাশাপাশি কেন্দ্র চেক নিয়েও তৈরি। কিন্তু ধান, পাট কিনতে তো হবে রাজ্যকে। সে কাজটাই রাজ্য সরকার করছে না। আমার আন্দোলন তা নিয়েই।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.