সরিয়ে দেওয়া হল গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অপূর্ব চক্রবর্তীকে।
শুক্রবার উপাচার্য গোপা দত্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের এডুকেশন বিভাগের শিক্ষক শ্যামসুন্দর বৈরাগ্যকে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার পদের অতিরিক্ত দায়িত্ব দিয়েছেন। গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার পদটি নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই বিতর্ক চলছে। এ ব্যাপারে হাইকোর্টে একটি মামলাও চলছে।
উপাচার্য দাবি করেন, “অপূর্ববাবু গত ২ নভেম্বর রেজিস্ট্রারের পদ থেকে অব্যাহতি চেয়ে চিঠি দিয়েছিলেন। তাঁকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার পদে বিশ্ববিদ্যালয়ের এডুকেশন বিভাগের শিক্ষক শ্যামসুন্দর বৈরাগ্যকে ৬ মাসের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কলকাতা হাইকোর্টে চলা মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত রেজিস্ট্রার পদে স্থায়ী নিয়োগ করা যাবে না।” অপূর্ববাবু অবশ্য পাল্টা জানিয়েছেন, “আমি কোনও অন্যায় করিনি। যেভাবে দিনের পর দিন অপমানিত হতে হচ্ছে তাতে ২ নভেম্বর রেজিস্ট্রারের পদ থেকে অব্যাহতি চেয়ে উপাচার্যকে চিঠি দিয়েছিলাম।”
এ দিকে তাঁদের আন্দোলনের জেরেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে দাবি করে সন্তোষ প্রকাশ করেছে অধ্যাপক মঞ্চ ও তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। অধ্যাপক মঞ্চের সম্পাদক দিলীপ দেবনাথ বলেন, “আমাদের আন্দোলনের জেরে উপাচার্য অপূর্ববাবুকে সরিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছেন।” তৃণমূল ছাত্র পরিষদের হুমকি, এ বার ইন্সপেক্টর অফ কলেজ পদ থেকেও অপূবর্বাবুকে ইস্তফা দিতে হবে। এই দাবিতে তাঁরা আন্দোলন চালাবেন।
২০০৮-এ বিশ্ববিদ্যালয় চালুর সময় গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার পদে বসানো হয় উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার তাপস চট্টোপাধ্যায়কে। তাঁর মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই স্থায়ী রেজিস্ট্রার পদে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের বিকাশ মুখোপাধ্যায়কে নিয়োগপত্র দেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিকাশবাবু কাজে যোগ দেওয়ার আগেই তা আটকে দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কাউন্সিল। বিকাশবাবুর গবেষণাপত্র নিয়ে বিতর্ক দেখা দেওয়ায় শেষ পর্যন্ত তাঁকে রেজিস্ট্রার পদে যোগ দিতে দেওয়া হয়নি। এ ব্যাপারে বিকাশবাবু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন। আর সেই মামলার জেরে এখন পর্যন্ত স্থায়ী রেজিস্ট্রার নিয়োগের বিষয়টি ঝুলে রয়েছে। এই সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নিয়োগ করে অপূর্ব চক্রবর্তীকে। অভিযোগ, অধ্যাপক, সহযোগী-অধ্যাপক (অ্যাসোসিয়েটেড প্রফেসর) পদ মর্যাদার শিক্ষক ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকা সত্ত্বেও বিশ্ববিদ্যালয় কাউন্সিল সহ-অধ্যাপক (অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর) অপূর্ব চক্রবর্তীকে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার পদে নিয়োগ করেন। ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারের পদে থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্সপেক্টর অব কলেজ পদে নিয়োগের বিজ্ঞাপন দেন অপূর্ববাবু। তিনি নিজেও ওই পদের জন্য আবেদন করেন। ইন্সপেক্টর অফ কলেজ পদে আবেদনকারীদের ন্যূনতম যোগ্যতা চাওয়া হয়েছিল ১০ বছরের শিক্ষকতার পাশাপাশি ৫ বছরের প্রশাসনিক অভিজ্ঞতা। ওই যোগ্যতা না-থাকা সত্ত্বেও তাঁর নিয়োগ হয়েছিল বলে অভিযোগ। |