‘টি-টোয়েন্টিতে আমরা সৌরভকে ফিরিয়ে আনলাম কলকাতার কাছে’

ক্রিকেটে হঠাৎ করে তাঁদের আগ্রহ গজানোর কারণ


বনি: হঠাৎ আগ্রহ কী বলছেন? আমি তো ক্রিকেট নেশাড়ু! কলেজ লাইফে ষাটের দশকে নিয়মিত ব্রেবোর্ন স্টেডিয়ামে খেলা দেখতে যেতাম। ওয়াড়েকর-হনুমন্ত সিংহরা তখন খেলতেন। মুম্বই-রাজস্থানের একটা ম্যাচ দেখেছিলাম। রাজস্থানের বোলিং ওপেন করেছিলেন রাজ সিংহ আর কৈলাস ঘাটানি। ১৯৭১-এর যে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে গাওস্কর নাম করলেন তার আগে থেকে আমি ওকে চিনতাম। সফর শুরু হওয়ার আগে আমার এক বন্ধুর বাড়িতে গাওস্কর ডিনার খেতে এসেছিলেন। তখনই আলাপ। একই বয়সি আমরা। সফর শেষে টিমটা যখন ফিরছে আমি এয়ারপোর্ট চলে গিয়েছিলাম গাওস্করকে আনতে। বলিউডে কাজের ব্যস্ততা বেড়ে যাওয়ার পর বেশির ভাগ সময় টিভি দেখতে হত। তবু সময় করে শারজা গেছি। ইংল্যান্ডে সৌরভের ক্যাপ্টেন্সিতে টিমটা যখন খেলছিল, আমরা ঘুরে ঘুরে ম্যাচ দেখতাম। আমার স্ত্রী তো আমার ক্রিকেট দেখার জ্বালায় শুরুর দিকে বিরক্ত হয়ে যেত। আজকেই তো মুম্বই টেস্ট ম্যাচ এমন জমে গেল যে, শেষ বল অবধি দেখতে গিয়ে ইভেন্টে দেরি করে পৌঁছলাম।

শ্রীদেবী: ঠিকই। আমি তো প্রথমে বুঝতে পারতাম না, লোকটা কী প্রতি রাতে ক্রিকেট দেখে। আর ক্রিকেট নিয়ে ঘুমোতে যায়। অসহ্য লাগত শুরুর দিকে। পরের দিকে মানিয়ে নিই। এখন এত বছর পর আমি ওকে জিজ্ঞাসা করি, ফিল্ড প্লেসিংটা এ রকম হল কেন বলত? ব্যাটিং স্টাইলটা একটু বদলালে হত না? ছোটখাটো জিনিস আমিও শিখে গিয়েছি।

তারকাদের খেলা টুর্নামেন্টে সিরিয়াসনেস না থাকার আশঙ্কা

বনি: আমি তেমন আশঙ্কা দেখছি না। গতবার এই টুর্নামেন্ট শুরু হয়েছে। চারটে টিম খেলেছিল। সলমন মুম্বই টিমের মেন্টর। সুনীল শেট্টি, রীতেশ দেশমুখরা সবাই খেলেছে। মারকাটারি টেনশন ছিল। এ বার বাংলা আর কেরল ঢুকল। বাংলার ছেলেদের খুব চার্জড্ দেখছি। আমায় অনেকেই জিজ্ঞাসা করছেন বাংলা দলটা কেন কিনলাম? এ জন্য নিলাম যে, এই শহরটা এবং এখানকার লোকের প্রতি আমার অসম্ভব ভালবাসা আছে। আমার চলচ্চিত্র-জীবন শুরু শক্তি সামন্তের সহকারী হিসাবে। পুরো ইউনিটটাই বাঙালিতে ভর্তি ছিল। এক মাস আমরা এখানে শু্যট করেছিলাম মনে আছে। এত বছর বাদে যেন ভাল লাগার শুরুর জায়গাটাতেই ফেরত এলাম। নস্ট্যালজিক লাগছে।

শ্রীদেবী: বেঙ্গল টিম কেনা নিয়ে আমিও খুব এক্সাইটেড। যেখানে যেখানে আমাদের টিম খেলবে, আমিও প্রত্যেকটা ভেনুতে যাব।
বেঙ্গল টাইগার্সের জার্সি উদ্বোধনে দলের মেন্টর সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। বাঁ দিকে অধিনায়ক জিৎ।
ডান দিকে দুই মালিক বনি কপূর ও শ্রীদেবী। শনিবার। ছবি: সুমন বল্লভ
সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, তাঁর ক্রিকেট এবং এসআরকে-র সঙ্গে সমস্যা

বনি: সৌরভকে সেই ভারতীয় ক্যাপ্টেন থাকার সময় থেকে আমি চিনি। ন্যাটওয়েস্ট ফাইনালে মাঠেও ছিলাম। আমার মনে হয়েছিল, লর্ডসের ব্যালকনিতে জার্সি খুলে সৌরভ ঠিক করেছিল। ইটের বদলে পাটকেল। ফ্লিনটফ করেছিল, ও বদলা নিয়েছিল। এসআরকে-র সঙ্গে কী হয়েছে আমি জানি না। দু’জনেই আইকন। কিছু জিনিস থেকেই যায়, যাকে বলে পর্দার আড়ালে। সেগুলো যখন জানি না আমার মুখ খোলা উচিত হবে না। তবে বেঙ্গল টাইগার্সে আমরা খুব শ্রদ্ধা আর ভালবাসার সঙ্গে ওকে রাখব। সৌরভই টিমটার মেন্টর। নিজে খেলবে না। কিন্তু ড্রেসিংরুম চাঙ্গা রাখবে। এক হিসাবে বলতে পারেন, টি-টোয়েন্টি ম্যাচে আবার আমরা ওকে কলকাতার মানুষের কাছে ফিরিয়ে আনলাম।

শ্রীদেবী: আমাদের টিম অভিনেতাদের নিয়ে গড়া। ওদের প্রচুর পরিমাণে উৎসাহের দরকার হবে। সৌরভ আদর্শ লোক, যে সেই উৎসাহটা দিতে পারে। চাঙ্গা করে দিতে পারে আমাদের টিমকে। আমার স্বামীর কাছে শুনেছি, সৌরভকে বলা হয় প্রিন্স অব ক্যালকাটা (হাসি)। সৌরভের সঙ্গে আলাপ হওয়ার পর থেকে দেখেছি, ওকে ভীষণ জেনুইন মনে হয়েছে। আমি ক্রিকেটের হাঁড়ির খবর কিছুই প্রায় রাখি না। কিন্তু একটা সময় যখন সৌরভ খুব চড়াই-উতরাইয়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিল, তখন আমি ওর জন্য খুূব চিন্তিত হয়ে পড়েছিলাম। পরে জানলাম ও দারুণ কামব্যাক করেছে।

আইপিএল থেকে নকল সিসিএল

বনি: (হাসি) নকল নয়, বলতে পারেন আইপিএল আর সিসিএল হল সৎ ভাই। আমাদের এখানে যেমন সিরিয়াস ক্রিকেট আছে, তেমনই ভরপুর বিনোদনও আছে। আমাদের সিডিটা দেখলে তারকাদেরই নেওয়া অন্তত চারটে ডাইভিং ক্যাচের ছবি পাবেন। আবার সেখানে চিয়ারগার্লও আছে।

শ্রীদেবী: এই যে এখনকার অভিনেত্রীরা ক্রিকেট দল কিনছে, প্রকাশ্যে ডাগ আউটে বসছে, এটা তো ব্যাপক পরিবর্তন বটেই। নায়িকারা এখন অভিনয় আর নিজেদের রোলের বাইরেও কত কিছু নিয়ে উৎসাহী।

দম্পতির প্রিয় ক্রিকেটার

বনি: কোনও কথা হবে না, সুনীল গাওস্কর। গাওস্করের নাম উঠলে আমি ভীষণ নস্ট্যালজিক হয়ে পড়ি। পুরনো সেই সব ইনিংস মনে পড়ে যায়। গাওস্কর আমার বরাবরের হিরো। সম্ভবত আমার স্ত্রীও একই কথা বলবে।

শ্রীদেবী: না, স্ত্রী বলবে তার অন্য কাউকে বেশি পছন্দ। সচিন তেন্ডুলকর। সচিনই প্রথম ক্রিকেটার যার নাম আমি জানতে পারি। আমরা তখন ‘খুদা গাওয়া’-র শুটিং করছিলাম অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে। এক দিন দেখি গোটা ইউনিট শু্যটিং বন্ধ করে একজন ক্রিকেটারের খেলা দেখছে। যার নাম সচিন তেন্ডুলকর। তখন অবশ্য সচিনের বয়স খুবই কম। সেখান থেকে আজ ও কোথায় চলে গেছে।

সচিনের শততম সেঞ্চুরি

বনি: কাল সকালে টিভি খুলে যখন স্ট্রেট ড্রাইভটা দেখলাম বিশ্বাস জন্মে যায়, সেঞ্চুরিটা আজ হচ্ছে। সচিনকে খুব কনফিডেন্ট দেখাচ্ছিল। আর ওই স্ট্রেট ড্রাইভটা দেখার জন্য মাইলের পর মাইল সানন্দে হাঁটা যায়। সচিনকে আমি খুব সম্মান করি। আমাদের ইন্ডাস্ট্রি থেকে তুলনা খুঁজলে আমি বলব, অভিনেতা হিসাবে অমিতাভ বচ্চন। পরিচালক হিসাবে রাজ কপূর। আর সব মিলিয়ে যদি বলেন, সলমনের মধ্যে যেন আমি কিছুটা ‘সচিন’ পাই। যাকে সমাজের সব অংশ সমান পছন্দ করে।

শ্রীদেবী: সচিনের সেঞ্চুরি? ও ঠিক হয়ে যাবে (হাসি)।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.