|
|
|
|
গোপন ডেরায় হানা যৌথ বাহিনীর |
কমিটি নেতা অসিত মাহাতো ধৃত |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ঝাড়গ্রাম |
গ্রেফতার হলেন জনগণের কমিটির প্রধান-মুখপাত্র অসিত মাহাতো। রবিবার লালগড় ও শালবনি থানার সীমানায় পশ্চিম ভাঙাডালি সংলগ্ন এলাকা থেকে অসিতকে ধরা হয়েছে বলে দাবি যৌথ বাহিনীর। পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার প্রবীণ ত্রিপাঠী বলেন, “এ দিন দুপুরে লালগড় ও শালবনি থানার পুলিশ এবং সিআরপি-র যৌথ দল গোপন আস্তানা থেকে অসিতকে ধরে।”
বহু মামলায় অভিযুক্ত, দীর্ঘদিন ‘ফেরার’ অসিতের গ্রেফতার ‘বড় সাফল্য’ হিসেবেই দেখছে পুলিশ। লালগড়, ঝাড়গ্রাম, শালবনি ও গোয়ালতোড় থানা এলাকায় রাষ্ট্রদ্রোহ, খুনের চেষ্টা, অপহরণ, হামলা-নাশকতার ১৩টি মামলায় অসিতের নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত। পুলিশের দাবি, ঝাড়গ্রাম, লালগড়, শালবনি ও গোয়ালতোড় থানায় আরও ১০টি মামলায় অভিযুক্ত কমিটির এই নেতা। আজ, সোমবার তাঁকে ঝাড়গ্রাম এসিজেএম আদালতে হাজির করানো হবে।
অসিত মাহাতো |
বছর তেত্রিশের অসিতের বাড়ি লালগড়ের ধরমপুর অঞ্চলের কৃষ্ণনগর গ্রামে। স্থানীয় সূত্রের খবর, এক সময় সিপিএম সমর্থক ছিলেন অসিত। পরে ঝাড়খণ্ড পার্টিতে যোগ দেন। ২০০৯-এর গোড়ায় ধরমপুরে সিপিএমের যুব-নেতা সুজিত পণ্ডা খুন হন। এর পরেই এলাকা ছাড়েন অসিত। যোগ দেন জনগণের কমিটিতে। ২০০৯-এর ১৫ জুন মাওবাদী নেতা বিকাশের উপস্থিতিতে ধরমপুরে সিপিএম নেতা অনুজ পাণ্ডের বাড়ি ভাঙচুর করা হয়। পুলিশের দাবি, ওই দিন বিকাশের পাশে অসিতকেও দেখা গিয়েছিল।
পুলিশ সূত্রের খবর, ২০০৯-এর জুলাই নাগাদ কমিটির ধরমপুর অঞ্চলের দায়িত্ব পান অসিত। ধরমপুরের ভুলাগাড়ায় অসিতের শ্বশুরবাড়ি। জঙ্গলঘেরা ওই গ্রাম ছিল মাওবাদীদের ‘ঘাঁটি’। সেই সুবাদে কিষেণজি ও বিকাশের মতো মাওবাদী শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে অসিতের ঘনিষ্ঠতা বাড়ে।
২০০৯-এর অক্টোবরে জনগণের কমিটির তৎকালীন মুখপাত্র ছত্রধর গ্রেফতার হওয়ার পরে প্রথমে কমিটির মুখপাত্র ও পরে প্রধান-মুখপাত্র হন অসিত। ইতিমধ্যে একাধিক হামলা-নাশকতার ঘটনায় নাম জড়ায় তাঁর। জ্ঞানেশ্বরী-কাণ্ডেও প্রাথমিক ভাবে তিনি অভিযুক্ত ছিলেন। অভিযুক্তদের খোঁজ দিলে আর্থিক পুরস্কার ঘোষণা করেছিল সিবিআই। অসিতের জন্য ১ লক্ষ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করা হয়। পরে অবশ্য জ্ঞানেশ্বরী-কাণ্ডে চার্জশিট দাখিলের সময় বাদ যায় অসিতের নাম। সিবিআই সূত্রে খবর, পরে আদালতের অনুমতি নিয়ে ধৃত কমিটি-নেতাকে জেরা করা হতে পারে। জ্ঞানেশ্বরী-কাণ্ডে তাঁর জড়িত থাকার প্রমাণ মিললে অসিতকে অভিযুক্ত করে অতিরিক্ত চার্জশিট দাখিলের সুযোগও রয়েছে।
জ্ঞানেশ্বরী-কাণ্ডের পরে, গত বছর ৯ অগস্ট লালগড়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘সন্ত্রাস বিরোধী সভা’তে অসিত হাজির ছিলেন বলে দাবি করেছিলেন কিছু স্থানীয় বাসিন্দা। তবে অসিতের বাড়ি ও শ্বশুরবাড়িতে তল্লাশি চালিয়েও এত দিন তাঁর হদিস পায়নি পুলিশ ও যৌথ বাহিনী।
এ দিকে, মাওবাদী কার্যকলাপে জড়িত অভিযোগে শনিবার রাতে ঝাড়গ্রামের বাঁকশোল গ্রাম থেকে বনমালী পাতর নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বাঁকশোল গ্রামেই তাঁর বাড়ি। পুলিশের দাবি, ধৃতের বিরুদ্ধে খুন-অপহরণের একাধিক মামলাও রয়েছে। তাঁর কাছ থেকে একটি দোনলা বন্দুক মিলেছে। রবিবার ঝাড়গ্রাম এসিজেএম আদালতে হাজির করানো হলে ধৃতকে ৪ দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক। |
|
|
|
|
|