সাড়ে পাঁচশো তুলেও পাঁচের স্বপ্ন প্রায় হাতছাড়া বাংলার
ক জোড়া সেঞ্চুরি, ভুরি-ভুরি রান। আজ মনোজ সেঞ্চুরি করছেন, তো কাল ঋদ্ধির ব্যাট থেকে দেড়শো বেরোচ্ছে। হাফ সেঞ্চুরিও আসছে মুড়ি-মুড়কির মতো। স্কোরবোর্ড দেখলে চমকে উঠতে হয়। অবাক বিস্ময়ে মনে হতে পারে রাতারাতি হল কী বাংলা ক্রিকেটের? এত দিন লিগ টেবিলের এক কোণে পড়ে থাকা টিমটা ফের স্বপ্নের দৌড় শুরু করল নাকি?
কিন্তু আপাত দৃষ্টিতে যা কোহিনূর, বাস্তবের মাইক্রোস্কোপে ফেললে সেটাই হয়ে যাচ্ছে টুকরো কাঁচ। রঞ্জিতে এ বার গ্রুপের অবস্থা আর পাঁচটা বছরের চেয়ে একটু অন্য। বাংলার শেষ আটে ওঠার সম্ভাবনাটা অন্যান্য বারের চেয়ে একটু বেশি। ঘরের মাঠে চারটে ম্যাচ, দু’টো মাত্র বাইরে। একমাত্র মুরলী বিজয়-লক্ষ্মীপতি বালাজির তামিলনাড়ু ছাড়া আর দরের টিম কোথায়? সহবাগ-গম্ভীর-কোহলি ছাড়া দিল্লি, আর হরিয়ানার মতো কমজোরি কিছু টিম। পার্থিব পটেলের গুজরাতও ওই তালিকায় থাকবে।
আর সেই গুজরাতের বিরুদ্ধেই কি না পাঁচ পয়েন্ট ‘ফসকে গেল’, ‘ফসকে গেল’ করতে হচ্ছে? আশা করতে হচ্ছে কি না তিন পয়েন্টের! তা-ও ম্যাচের দ্বিতীয় দিন থেকেই! তা হলে আর গুচ্ছের রান তুলে লাভটা কী হল?
ইডেনের যা উইকেট তাতে চার দিন কেন, ঠিকঠাক ব্যাটিং হলে আট দিনেও ম্যাচ শেষ হবে না। কিন্তু এই গুজরাত টিমে একমাত্র পার্থিব ছাড়া পাতে দেওয়ার মতো ব্যাটসম্যান কেউ নেই। এবং দু’টো তথ্যই যখন বাংলা শিবিরের ভাল রকম জানা, তখন অহেতুক ঢিকঢিক করে ইনিংস টানার মানে কী? ঋদ্ধিমান সাহা আজ প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে পাঁচ নম্বর সেঞ্চুরিটা করলেন। অপরাজিত ১৬৭। কিন্তু বল নিয়ে ফেললেন প্রায় তিনশো! অথচ বিপক্ষ বোলিংয়ে কোনও জুজু নেই, লক্ষ্মীরতন শুক্ল নেমেই তুমুল মার মেরে চাপ কমিয়ে দিচ্ছেন, সেই অবস্থায় কেন স্কোরবোর্ডে ঝড় উঠবে না?
আলোচনায় ডুবে চারমূর্তি। ঋদ্ধিমান, লক্ষ্মী, সৌরভ এবং মনোজ। ছবি: উৎপল সরকার
ম্যাচ দেখতে আসা বাংলার প্রাক্তন ক্রিকেটারদের কাউকে কাউকে আক্ষেপ করতে শোনা গেল, কেন আরও আগে থেকে মারলেন না ঋদ্ধি? সম্মিলিত কোরাস, চা-বিরতিতে যদি রান তুলে দান ছাড়া যেত, তা হলে প্রায় সোয়া দু’দিন হাতে থাকত গুজরাতকে দু’বার আউট করতে। কিন্তু এখন হিসাবটা কাটাকুটি হয়ে দু’দিন। এবং শীতের পড়ন্ত বিকেলে একমাত্র অশোক দিন্দা ছাড়া কারও সামনেই পার্থিবরা অস্বস্তিতে পড়লেন না।
খেলা শেষে বাংলার নির্বাচকদেরও দেখা গেল, পাঁচের স্বপ্ন প্রায় ছেড়েই দিয়েছেন। এখন তিন এলেই যথেষ্ট। বড় রানের ইনিংস খেলা ঋদ্ধিকেও খোঁচা হজম করতে হল। কেন এত ঠুকঠুক? ঋদ্ধির উত্তর, “টিম থেকেই ধরে খেলার নির্দেশ ছিল।” বাংলার সহ-অধিনায়ক মেনে নিলেন লক্ষ্মী আউট হতে রান রেটটাও কেমন ঝিমিয়ে পড়েছিল।
এতটুকু মিথ্যে নয়। যতক্ষণ ক্রিজে ছিলেন, উল্কার গতিতে রান তুলেছেন লক্ষ্মী (৭৮)। মনোজ আজ প্রথম ঘণ্টাতেই খোঁচা দিয়ে আউট। কিন্তু লক্ষ্মীর উপর সে সবের প্রভাব আর পড়ল কোথায়? কী স্পিনার, কী পেসার কাউকে রেয়াতের বালাই নেই। ১২টা বাউন্ডারি সঙ্গে একটা ওভার বাউন্ডারি। আউট হওয়ার পর দুঃখ করছিলেন, “বড় রান ফেলে এলাম। বলটা যে টার্ন করে ব্যাটের কানা নেবে, বুঝতেই পারিনি।”
বুঝলে, গল্পটাই হয়তো পাল্টে যেত। তাঁর বড় রান মানে, কম সময়ে বড় রান। আর মনোজদের বরাবরের টার্গেট তো সেই সাড়ে পাঁচশোই ছিল।

বাংলা: ৫৬০-৬ (মনোজ ১৩২, ঋদ্ধি ১৬৭ ন:আ:, লক্ষ্মী ৭৮, সৌরাশিস ৭১ ন:আ:)
গুজরাত ১০-০ (পার্থিব ব্যাটিং ৮)




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.