রূপনারায়ণের গ্রাস, ত্রাণ শিবিরে কোজাগরীর রাত
য়োজন সারা হয়েছিল। মানসিক ভাবে প্রস্তুতও ছিলেন সবাই। কিন্তু শেষমেশ আর লক্ষ্মীপুজো হল না। কোজাগরীর সকালেই নদীগর্ভে বিলীন হল একাধিক বাড়ি। বাসিন্দারা প্রাণে বাঁচলেও বাঁচানো গেল না আসবাব-সহ সংসারের নানা প্রয়োজনীয় জিনিস। মঙ্গলবার লক্ষ্মীপুজোর দিন এমনই অভিজ্ঞতা হল দাসপুর-২ ব্লকের রানিচক পঞ্চায়েতের কুমারচক গ্রামের বেশ কিছু বাসিন্দার। আচমকাই রূপনারায়ণের পাড় ভেঙে গ্রামের পাঁচটি বাড়ি পুরোপুরি নদীতে মিশে গিয়েছে। ফাটল দেখা দিয়েছে আরও ১৫-২০টি বাড়িতে। গ্রামে যান বিডিও মোদ্দাসার মোল্লা। খোলা হয়েছে ত্রাণ-শিবির।
অষ্টমীর সকালে শিলাবতীর ভাঙনে পুজোর আনন্দই নষ্ট হয়ে গিয়েছিল ঘাটাল শহর সংলগ্ন শিলা-রাজনগর গ্রামের বাসিন্দাদের। ওই গ্রামের ছ’টি বাড়ি নদীতে তলিয়ে যায়। আরও কিছু বাড়িতে নিয়মিতই ফাটল দেখা দিচ্ছে। লক্ষ্মীপুজোর সকালে দাসপুরের কুমারচক গ্রামের আদক পাড়াতেও একই বিপন্নতা। স্থানীয় পঞ্চায়েতের উপপ্রধান নিরঞ্জন পাল বলেন, “রবিবার রাত থেকে অল্প-অল্প করে ফাটল দেখা গিয়েছিল। তবে এত বড় ক্ষতি হয়ে যাবে কেউ ভাবতে পারিনি। যা অবস্থা পুরো আদক পাড়ার ২৫টি বাড়িই বোধহয় চলে যাবে রূপনারায়ণের গর্ভে। বেশিরভাগ বাড়ির সদস্যদেরই বাড়ি থেকে বের করে বিভিন্ন জায়গায় অস্থায়ী ভাবে থাকার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।”
ভয়াল ভাঙন। কুমারচক গ্রামের আদকপাড়ায় তোলা নিজস্ব চিত্র।
এ দিন ওই গ্রামে গিয়ে দেখা গেল বাসিন্দাদের সবার দিশেহারা অবস্থা। অনেকে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আশ্রয়ের জন্য ফাঁকা জায়গা খুঁজতে ব্যস্ত। অনেককে দেখা গেল ঘর থেকে আসবাবপত্র বের করতে। যাঁরা বাড়ি থেকে কিছুই বের করতে পারেননি, তাঁদের অনেকে মাথায় হাত দিয়ে রূপনারায়ণের দিকেই তাকিয়ে রয়েছেন। স্থানীয় মিনতি মণ্ডল, অপর্র্ণা আদক, গুরুচরণ আদকেরা বলেন, “বাড়িতে লক্ষ্মীপুজোর তোড়জোড় চলছিল। আচমকাই সব ওলট-পালট হয়ে গেল। চোখের সামনে দেখলাম পুরো বাড়িটা ভেঙে মিশে গেল নদীতে।” দীপা সাঁতরা, নেপাল আদক, ক্ষুদিরাম আদকেরা বলেন, “বেশ কয়েক বছর আগে বিঘার পর বিঘা চাষজমি নদীতে চলে গিয়েছিল। এ বার গেল বাড়ি। কী করে সংসার চলবে, কোথায় থাকব--কিছুই বুঝতে পারছি না।” উদ্বিগ্ন মহকুমা প্রশাসনও। মহকুমাশাসক অংশুমান অধিকারী বলেন, “কুমারচক গ্রামের অবস্থা বেশ খারাপ। শিলা-রাজনগর গ্রামেও প্রতিদিন ধস নামছে। ক্ষতিগ্রস্তদের অস্থায়ী ভাবে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিষয়টি জেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।”
ক’দিন আগেই মহকুমার বিভিন্ন এলাকা থেকে বন্যার জল সরেছে। এখন দ্রুত গতিতে শিলাবতী, ঝুমি, রূপনারায়ণের জল কমছে। নদীর জল কমতেই এই সব নদীর দুর্বলবাঁধ গুলিতে ফাটল দেখা দিচ্ছে। বন্যা নিয়ন্ত্রণের মতোই নদীবাঁধ সারাইয়ের ব্যাপারেও প্রশাসনের হুঁশ নেই বলেই অভিযোগ।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.