রক্তশূন্য হাসপাতাল
মার খেয়ে বারান্দায় রোগী দেখলেন ডাক্তারেরা
নিগ্রহের প্রতিবাদে কালো ব্যাজ পড়ে বহির্বিভাগের বারান্দায় রোগী দেখলেন সিউড়ি সদর হাসপাতালের চিকিৎসকেরা। কিন্তু এই ঘটনায় বীরভূমের সরকারি ব্লাড ব্যাঙ্কগুলির দুরবস্থাই কার্যত সামনে চলে এসেছে।
রক্তের অভাবে প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ধুন্ধুমার কাণ্ড হয় হাসপাতালে। দুই চিকিৎসককে চড়-থাপ্পড় মারা হয় বলে অভিযোগ। শুক্রবার তারই প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। তবে হাসপাতাল সুপার মানবেন্দ্র ঘোষের দাবি, “পরিষেবা ব্যাহত হয়নি। বহির্বিভাগে প্রায় বারোশো রোগীর চিকিৎসা হয়েছে।” সিউড়ি থানায় ভাঙচুর ও মারধরের অভিযোগ দায়ের হয়েছে বলেও তিনি জানান।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় একটি মৃত সন্তানের জন্ম দিয়ে ঘণ্টাখানেক পরে মারা গিয়েছিলেন আসরোফা বিবি (২০) নামের এক প্রসূতি। দুবরাজপুরের সগড় গ্রামে তাঁর শ্বশুরবাড়ি। তাঁর পরিজনদের অভিযোগ, হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্ত না মেলাতেই তাঁর মৃত্যু হয়। বস্তুত, জেলার প্রায় সর্বত্রই রক্তের আকাল। অন্য অব্যবস্থাও রয়েছে।
সিউড়ি সদর হাসপাতালে পরিকাঠামোগত ত্রুটির স্বীকার করে সুপার বলেন, “গত ২৪ অগস্ট ডিরেক্টরেট অফ ড্রাগ কন্ট্রোলের নির্দেশ পাওয়া ইস্তক রক্তদান শিবির থেকে রক্ত নেওয়া বন্ধ করা হয়েছে। তবে বাইরের ব্লাড ব্যাঙ্ক থেকে রক্ত এনে রোগীদের দেওয়া হচ্ছিল।” তিনি জানান, সাময়িক ভাবে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের ব্লাড ব্যাঙ্ক থেকে কিছু রক্ত নিয়ে আসা হয়েছে। এ দিনও ১০০ প্যাকেট রক্ত আনা হয়। সুপারের খেদ, “আমরা ইতিমধ্যে পরিকাঠামোর ত্রুটি কিছুটা শুধরে নিয়েছি। গত ২ সেপ্টেম্বরেই ড্রাগ কন্ট্রোলের প্রতিনিধিদের পরিদর্শনে আসার কথা ছিল। তাঁরা না আসায় রক্তদান শিবির করা যাচ্ছেনা। রক্তের স্বাভাবিক জোগানও ধরে রাখা যাচ্ছেনা।”
জেলার বাকি দু’টি ব্লাড ব্যাঙ্কের একটি বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে। ‘পরিকাঠামোগত ত্রুটি’ দর্শিয়ে সেটির পরিষেবাও আপাতত স্থগিত রেখেছে ডিরেক্টরেট অফ ড্রাগ কন্ট্রোল। হাসপাতাল সুপার সুদীপ মণ্ডল বলেন, “৪ জুলাই ওদের প্রতিনিধিরা আমাদের ব্লাড ব্যাঙ্ক পরিদর্শন করে যান। ২৪ অগস্ট লাইসেন্স সাসপেন্ড করে দ্রুত সমস্যা মেটাতেও নির্দেশ দেয়। সাধ্য মতো ত্রুটি সংশোধন করে পরিষেবা চালুর জন্য গত ১ সেপ্টেম্বর তাদের চিঠি দেওয়া হয়। কিন্তু জবাব মেলেনি। নানা দিক থেকে চাপ আসায় জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের নির্দেশে আপাতত জরুরি ভিত্তিতে অল্প-স্বল্প রক্ত দেওয়া হচ্ছে।”
এই পরিস্থিতিতে গোটা জেলায় রক্তের জোগান দিতে ‘একা কুম্ভ’ রামপুরহাট মহকুমা হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্ক। সেখানকার সুপার হিমাদ্রী হালদার বলেন, “সিউড়ি ও বোলপুর ব্লাড ব্যাঙ্কের রক্তদান শিবির থেকে রক্ত সংগ্রহ করার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা থাকায় আমাদের উপরে চাপ খুব বেড়ে গিয়েছে। বাধ্য হয়ে এখন আমরা জেলার বাইরেও রক্ত সংগ্রহ করতে যাচ্ছি।” মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক আশিস মল্লিক বলেন, “ব্লাড ব্যাঙ্ক সংক্রান্ত সমস্যার কথা নিয়মিত স্বাস্থ্য সচিবকে জানানো হচ্ছে। তারাই যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার নেবে।”
পঞ্চায়েত মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ বলেন, “দ্রুত সমস্যার সমাধের জন্য স্বাস্থ্য সচিবকে বলেছি।”

ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.