ডাকঘর

প্রতিষ্ঠা ও পুনর্নির্মাণ এক নয়
গত ৩ সেপ্টেম্বর বিষাণকুমার গুপ্তের চিঠিটি পড়লাম। তার আগের সপ্তাহের চিঠিতে আমার উত্থাপিত প্রশ্নগুলির সদুত্তর পাওয়া গেল না তাঁর চিঠিতে। উনি লিখেছেন যে, দ্বিতীয় চিঠিতে ১৮৬৬ সালে প্রথম গ্রান্টহল প্রতিষ্ঠার কথা স্পষ্টভাবে আমি উল্লেখ করেছি। সেই একাই কথা বিষাণবাবু তাঁর প্রথম চিঠিতে উল্লেখ করে বর্তমান চিঠিতে লিখেছেন, “তা হলে বিতর্কের অবকাশ কোথায়?” প্রথমেই জানাই আমার প্রথম চিঠিতেও বিষয়টির স্পষ্টভাবে উল্লেখ ছিল। সম্ভবত উনি বিতর্ক সৃষ্টির ব্যস্ততায় ভালভাবে চিঠিটি পড়েননি। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে বিতর্কের যথেষ্ট অবকাশ রয়েছে। কারণ, গ্রান্টহল কর্তৃপক্ষ ২০০৩ সালেই শতবর্ষ পালন করেছে, ১৯৬৬ সালে নয়। মূল প্রসঙ্গ ছিল গ্রাটহল ভবনের শতবর্ষপূর্তি। কিন্তু বিষাণবাবু মূল প্রসঙ্গ থেকে অনেকটাই সরে গিয়েছেন। যখন আমি আমার পুঙ্খানুপুঙ্খ ইতিহাস বণর্না করেছিলাম, তখন ‘প্রতিষ্ঠা ও পুনর্নির্মাণকে এক করে ফেলেছেন’ওই অযৌক্তিক, মনগড়া অভিযোগ করে বির্তক সৃষ্টির কারণ, বা সুযোগ কি দরকার ছিল বিষাণবাবুর? উনি লিখেছেন, “১৯৬৬ খ্রিস্টােব্দে গ্রান্টহলের শতবর্ষপূর্তি উপলক্ষে কোনও অনুষ্ঠান হয়েছিল কিনা, না হলে কেন হয়নি সায়ন্তবাবুর উত্থাপিত ওই প্রশ্নের জবাব দেওয়ার দায় আমার নয়।” যখন বিষাণবাবু তাঁর দ্বিতীয় চিঠিতে দাবি করেছেন, “স্বাভাবিক নিয়মেই গ্রান্টহল ১৯৬৬ খ্রিস্টাব্দে শতবর্ষে (১৮৬৬১৯৬৬) পদার্পন করেছে।” তখন বহরমপুরবাসী হয়ে সেই সময় ‘অনুষ্ঠান হয়েছিল কিনা’ প্রশ্নের উত্তর দিতে বিষাণবাবুর অসুবিধা কোথায় বুঝলাম না। তবে জানাই, উৎসব হয়নি। কারণ, ওই বছর শতবর্ষপূর্তিই হয়নি। ২০০২ সালে যোগেন্দ্রনারায়ণ মিলনী শতবর্ষে পদার্পণ করে এবং ২০০৩ সালে মিলনীর শতবর্ষপূর্তি হয়েছিল। ১৮৯৭ সালে গ্রান্টহল ভূমিকম্পে ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। কাজেই ১৯১১ সাল পর্যন্ত গ্রান্টহলের অস্তিত্ব ছিল না। ফলে গ্রান্টহল কর্তৃপক্ষ ১৮৬৬ সালকে প্রতিষ্ঠাবর্ষ রূপে গণ্য করেননি। ১৯০৩ সালে লালদিঘি অঞ্চলে অবস্থিত এডওয়ার্ড রিক্রিয়েশান ক্লাবভবনে গ্রান্টহল ছিল না। ১৯১১ সালে বর্তমান ভবনের হলঘরটির আবার নাম রাখা হয় গ্রান্টহল। কিন্তু ক্লাবটির নাম এডওয়ার্ড রিক্রিয়েশান ক্লাবই থাকল, ১৯৪৮ সালে এর নাম রাখা হয় যোগেন্দ্রনারায়ণ মিলনী। তাই এ বছর গ্রান্টহল-সহ ক্লাবভবনটির শতবর্ষপূর্তি হয়েছে। তাই ১৮৬৬ সালে নামাঙ্কিত গ্রান্টহলের (যেটি ম্যারিয়ন সাহেবে কুঠিবাড়িতে অবস্থিত ছিল) যখন কোনও অস্তিত্বই নাই তখন ২০১৬ সালে সার্ধশতবর্ষপূর্তির বিষাণবাবুর প্রস্তাবটি উদ্ভট ও অবাস্তব। বিষাণবাবু লিখেছেন যে ২০০০০ টাকার মধ্যেই ৩৫০০ টাকা ধরা আছে কিনা ‘এই জটিল অঙ্কের হিসাব মিলতে পারে।” অর্থাৎ তিনি ‘হিসাব’ মেলাতে পারেননি। প্রেসিডেন্সি কলেজের প্রাক্তন ছাত্র হিসাবে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণামূলক কাজে যুক্ত থাকার সুবাদে ইতিহাস ও ভাষা বিষয়ে আমিও কিছুটা ওয়াকিবহাল। সেই সুবাদে আমার প্রশ্ন, বিষাণবাবু যখন ‘হিসাব’ মেলাতে না পারলেও কেন তিনি তাঁর প্রথম চিঠিতে দাবি করলেন, “গ্রান্টহল পুনর্নির্মাণে খরচ হয় ২৩৫০০ টাকা।” বিষাণবাবুর জ্ঞাতার্থে জানাই, গ্রান্টহল বিষয়ে ২০০৩ সালে বিজয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রবন্ধের পর সম্ভবত আর কোনও প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়নি। এ কারণে ‘সর্বাধুনিক গবেষণা’ কথাটি ব্যবহার করেছি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.