ডাকঘর

প্রসঙ্গ গ্রান্টহল ১
বহরমপুর গ্রান্টহল (বর্তমানে যোগেন্দ্র নারায়ণ মিলনী) প্রতিষ্ঠার সময়কাল, শতবর্ষ পূর্তি এবং হলটির পুনর্নির্মাণের খরচকে ঘিরে যে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে সেই প্রসঙ্গে সায়ন্তন মজুমদার গত ২৭ অগস্ট প্রকাশিত তাঁর দ্বিতীয় চিঠিতে ‘১৮৬৬ সালে প্রথম গ্রান্টহল প্রতিষ্ঠার কথা’ স্পষ্ট ভাবে লিখেছেন। আমি সেই কথাই আমার ২০ অগস্টের চিঠিতে লিখেছি। সুতরাং স্বাভাবিক নিয়মেই গ্রান্টহল ১৯৬৬ খ্রিস্টাব্দে শতবর্ষে (১৮৬৬১৯৬৬) পদার্পণ করেছে। তাহলে বিষয়টি নিয়ে বিতর্কের অবকাশ কোথায়? এখন ১৯৬৬ খ্রিস্টাব্দে গ্রান্টহলের শতবর্ষ পূর্তি উপলক্ষে কোনও অনুষ্ঠান হয়েছিল কিনা, না হলে কেন হয়নি, সায়ন্তনবাবু উত্থাপিত ওই প্রশ্নের জবাব দেওয়ার দায় আমার নয়। অবশ্যই গ্রান্টহল কর্তৃপক্ষের। বিশ্ববিদ্যালয় ও জাতীয় স্তরে গবেষণা করার সুবাদে ইতিহাস চর্চার বিভিন্ন ধারা ও পদ্ধতি সর্ম্পকে আমি কিছুটা ওয়াকিবহাল। ওই সুবাদে বলতে পারি, যোগেন্দ্রনারায়ণ মিলনীর প্লাটিনাম জুবলি উপলক্ষে প্রকাশিত স্মারক গ্রন্থে ‘মিলনী’র সাধারণ সম্পাদক তথা বিশিষ্ট আইনজীবী সত্যগোপাল মজুমদার ইংরাজি ভাষায় গ্রান্টহলের যে দীর্ঘ ইতিহাস রচনা করেছেন তা নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ ও প্রামাণ্য দলিল। তা কি অস্বীকার করা যায়? ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত গ্রান্টহলের পুনর্নির্মানের ব্যয়কে কেন্দ্র করে (২০০০০ টাকা না ২৩৫০০ টাকা) যে বিতর্ক উত্থাপিত হয়েছে, সে প্রসঙ্গে ওই প্লাটিনাম জুবলি স্মারক গ্রন্থের ভাষায় বলা যেতে পারে, গ্রান্টহল ভবনটির পুনর্নির্মানে খরচ হয়েছিল ২০০০০ টাকা, যা লালগোলার মহারাজা প্রদান করেন এবং লালদিঘি এলাকায় অবস্থিত এডওয়ার্ড করনেশন ক্লাবের আর্থিক সহযোগিতা ৩৫০০ টাকা। কিন্তু গ্রান্টহলকে ক্লাবের ওই প্রাঙ্গণটি প্রদান এবং গ্রান্টহল ভবন নির্মাণে ওই ২০০০০ টাকার মধ্যেই এডওয়ার্ড করনেশন ক্লাবের আর্থিক সহযোগিতা হিসাবে ৩৫০০ টাকা ‘ধরা আছে কিনা’-- বিষয়টি জটিল। ওই জটিল অঙ্কের হদিস মিলতে পারে একমাত্র অডিট রিপোর্টেই। রিপোর্টটি জানতে ইচ্ছা করে। সবশেষে, ‘সর্বাধুনিক গবেষণা’ বলতে সায়ন্তবাবু ঠিক কি বলতে চেয়েছেন বুঝলাম না। তবে এ কথা নিশ্চিত ভাবেই বলতে পারি, সমাজ বিজ্ঞানের গবেষণায় ‘শেষ কথা’ বলে কিছু হতে পারে না। সেই কারণে শহর বহরমপুর তথা মুর্শিদাবাদ জেলার রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ইতিহাসের বহু গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার সাক্ষী গ্রান্টহলের একটি বস্তুনিষ্ঠ ও তথাভিত্তিক পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস রচিত হোক। নতুবা ‘স্মৃতি ও শ্রুতির’ ধাক্কায় অনেক ইতিহাস হারিয়ে যাবে, যা যথার্থ আঞ্চলিক ইতিহাস রচনার কাজে নানা বিভ্রান্তি সৃষ্টি করবে।


প্রসঙ্গ গ্রান্টহল২
মুর্শিদাবাদের বিদ্বজন সমাবেশ ও সাংস্কৃতিক ইতিহাসের পটভূমিতে বহরমপুর গ্রান্টহল ভবনের অবদান অত্যন্ত উজ্জ্বল। রেভারেন্ড লালবিহার দে, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, দিগম্বর বিশ্বাস প্রমুখও উনিশ শতকের মনস্বী ব্যক্তিত্বদের স্মৃতিধন্য ওই ভবন। বহরমপুর ম্যাজিস্ট্রেট থাকাকালীন বঙ্কিমচন্দ্র ওই ভবনে ইন্ডিয়ান সিভিলাইজেশন প্রসঙ্গে বক্তৃতা দেন। সম্প্রতি সরকারি তরফে প্রতিটি জেলায় হেরিটেজ সংরক্ষণের উদ্যম নেওয়া হচ্ছে। মুর্শিদাবাদের বিদ্বজন ও সরকারি প্রশাসকদের কাছে অনুরোধ, গ্রান্টহল ভবনটি হেরিটেজ হিসাবে ঘোষণা করা হোক। বঙ্কিমচন্দ্রের প্রকাশ্য বক্তৃতা, মুর্শিদাবাদের প্রশাসনে ও সাংস্কৃতিক পুনরুজ্জীবনে তাঁর ভূমিকা নিয়ে ভবনটিতে একটি আলোচনাসভা, ওই সংক্রান্ত নথি ও চিত্রাবলী প্রদর্শনের উদ্যম নেওয়া যেতে পারে। বঙ্কিমচন্দ্র ছাড়াও যে সব মনীষীদের অবদানে মুর্শিদাবাদের সাংস্কৃতিক ইতিহাস উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে তার গবেষণাগার হিসাবে ভবনটির পুনর্নবীকরণ করা যেতে পারে।
শুধু একটা প্রিন্টআউট
অরঙ্গাবাদ ডি এন কলেজ থেকে এ বছরের পার্ট থ্রি পরীক্ষার ফলাফলে আমাদের প্রিয় ছাত্রী ঝুমকি মণ্ডল (রোল ৩১৩ - ০৯৫৪ নং ০০২৪) বাংলা অনার্স বিষয়ে ৫৫৯ নম্বর (শতকরা ৬৯.৮৭) পেয়ে কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বোচ্চ স্থান অধিকার করেছে। কিন্তু ওই কৃতিত্বের জন্য তার কোনও আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি নেই। এটাই বড় দুঃখের। ইন্টারনেট ঘেঁটে সব কলেজের বাংলা অনার্সের মোট নম্বরের প্রিন্ট আউট সংগ্রহ করে না রাখলে সে কোনও দিনই প্রমাণ করতে পারবে না তার ওই সাফল্যের কথা। বিশ্ববিদ্যালয় যদি সাম্মানিক স্নাতকস্তরে বিভিন্ন বিষয়ে সর্বোচ্চ স্থানাধাকারীকে অভিজ্ঞানপত্র দিয়ে সম্মানিত করে, নিদেন পক্ষে তাদের মার্কশিটে ওই বিশেষ কৃতিত্বের উল্লেখ থাকে তা হলে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে ঘোষিত স্বীকৃতি পায়। যা ভবিষ্যতে তাদের কাছে পাথেয় হবে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.